অ্যামাজন জঙ্গলের ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ব্রাজিলের সাথে বৃহৎ বাণিজ্য চুক্তিতে অনুমোদন না দেয়ার হুমকি দিয়েছে ফ্রান্স ও আয়ারল্যান্ড। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বোলসেনারো জলবায়ু ইস্যুতে নিজের অবস্থান বিষয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট। আগুন নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও হেলিকপ্টার ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে ব্রাজিল সরকার। এ ঘটনায় ক্ষোভ, নিন্দা ও দুঃখ প্রকাশ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
পৃথিবীতে জীবনধারণে অত্যাবশ্যক অক্সিজেনের একটি বড় অংশ আসে দক্ষিণ আমেরিকার অ্যামাজনবনাঞ্চল থেকে। অ্যামাজনকে ‘পৃথিবীর ফুসফুস’ও বলা হয়ে থাকে। সাথে ক্ষতিকর কার্বন ডাই অক্সাইড শুষে নিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে অপরিসীম ভূমিকা রাখে অ্যামাজন। প্রায় ৩০ লাখ প্রজাতির প্রাণি ও উদ্ভিদ এবং ১০ লাখ আদিবাসীর আবাসস্থল অ্যামাজনের অস্তিত্ব এখন হুমকিতে। আগুনের লেলিহান শিখা প্রতিনিয়ত গ্রাস করে চলেছে বনভূমি।
অধিকাংশ প্রকৃতিবিদ আগুনের জন্য ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বোলসেনারোর বিভিন্ন নীতিকে দায়ী করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, কৃষি জমি তৈরি করতে কৃষকদের আগুন লাগাতে প্ররোচনা দিয়েছেন ব্রাজিলীয় প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনের সময় বনাঞ্চল ধ্বংসকারীদের জরিমানা কমানোর পক্ষে প্রচারও চালিয়েছিলেন। তবে, আগুন লাগানোর দায় স্বীকার না করে উল্টো পরিসংখ্যানকে অতিরঞ্জিত বলেছেন বোলসেনারো।
অ্যামাজনের আগুনকে আন্তর্জাতিক সঙ্কট বলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও জার্মান চ্যান্সেল অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। ফিনল্যান্ডের অর্থমন্ত্রী ব্রাজিল থেকে গরুর মাংস আমদানি বন্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে সুপারিশ করেছেন। পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন ব্রাজিলজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে। লন্ডন, বার্লিন, মুম্বাই ও প্যারিসে ব্রাজিল দূতাবাসের বাইরেও বিক্ষোভ হয়েছে। সবার চাওয়া একটাই, নিভে যাক আগুন, বেঁচে থাকুক অ্যামাজন।