চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ

অ্যাপল’র সার্ভারে চীনের অনুপ্রবেশের দাবি অস্বীকার

অ্যাপলসহ বেশ কয়েকটি বড় বড় টেক জায়ান্ট কোম্পানির অবকাঠামোতে চীনের বেআইনি অনুপ্রবেশ ঘটেছে – গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন একটি প্রতিবেদন তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক।

সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের সাময়িকী বিজনেসউইক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে, ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্ভারে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু বিশেষ ধরনের মাইক্রোচিপ বসানো হয়েছে, যেগুলো তৈরি হয়েছে চীনে।

বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কুক। প্রতিবেদনটির প্রতিবাদ করে বাজফিডকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘সংবাদটি প্রত্যাহার করে নিয়ে তাদের ঠিক কাজটা করা উচিত।’

তবে বিজনেসউইক নিজ অবস্থানে অনড়।

এ ব্যাপারে বিবৃতিতে পত্রিকাটি বলেছে: ‘ব্লুমবার্গ বিজনেসউইকের এই অনুসন্ধান এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করা রিপোর্টিংয়ের ফল, যার অংশ হিসেবে আমরা শতাধিক সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম।

সতেরোটি ভিন্ন ভিন্ন সূত্র সার্ভারের হার্ডওয়্যার এবং অন্যান্য অংশে এই কারসাজির বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের নিশ্চিত করেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেতরের লোকও ছিলেন।’

‘এছাড়াও আমরা তিনটি প্রতিষ্ঠানের পূর্ণাঙ্গ বিবৃতি এবং চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি প্রকাশ করেছি। আমরা আমাদের স্টোরিতেই অনড় আছি। আমাদের রিপোর্টিং এবং সূত্রের ব্যাপারে আমাদের পূর্ণ আত্মবিশ্বাস আছে,’ বক্তব্য নিউজউইকের।

চলতি মাসের শুরুতে বিজনেসউইকে প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার সাথে সাথেই প্রযুক্তি বিশ্বে ঝড় তুলে দিয়েছিল। প্রায় তাৎক্ষণিকভাবেই এর প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে প্রতিবেদনে উল্লিখিত ‘আক্রান্ত’ কোম্পানিগুলো।

মাঝখানে দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যান পত্রিকার পাঠক ও প্রতিষ্ঠানগুলোর গ্রাহকরা। কেননা একদিকে ছিল পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য খ্যাত একটি সংবাদমাধ্যম, অন্যদিকে সেসব প্রতিষ্ঠান, যারা কঠিন ও অকাট্য সব যুক্তি দিয়ে পত্রিকার দাবি অস্বীকার করে যাচ্ছে।

অ্যাপল-বিজনেসউইকের প্রতিবেদন-চীনের মাইক্রোচিপ
অ্যামাজন

এমনকি এই প্রথমবারের মতো অ্যাপল কোনো প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রকাশ্য প্রতিবাদ করে সেটি সরিয়ে নেয়ার কথা বলল।

নিজ বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি হিসেবে কুক বলেন, ‘আমরা পুরো প্রতিষ্ঠান খুঁজে ওলটপালট করে ফেলেছি; ইমেইল সার্চ, ডেটা সেন্টার রেকর্ড, অার্থিক রেকর্ড, শিপমেন্ট রেকর্ড সবকিছু। আমরা আসলেই অনেকবার পুরো কোম্পানিকে কেটেছিঁড়ে অনেক গভীরে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছি এবং প্রতিবারই একই ফলাফল এসেছে। এমন কিছুই বাস্তবে ঘটেনি। ওই প্রতিবেদনের দাবিতে কোনো সত্যতা নেই।’

অ্যাপলের মতোই প্রতিবেদনে নাম আসা অ্যামাজনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও একই যুক্তি দেখিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দেশগুলোর সরকারি সংস্থাগুলোও একই কথা বলেছে।

মার্কিন অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা বিভাগ প্রযুক্তি বিষয়ক সাপ্লাই চেইনে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ব্যাপারে মিডিয়া প্রতিবেদনের ব্যাপারে অবগত রয়েছে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি সেন্টারের মতোই এই মুহূর্তে আমরা ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ করার মতো কোনো কারণ খুঁজে পাইনি।’