নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও ভিডিও আইরালের ঘটনার মূলহোতা দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার হোসেনকে অস্ত্র মামলায় রিমান্ডে নিয়েছে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকাল চারটায় দেলোয়রকে তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন করে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে হাজির করা হয়।
আদালত শুনানি শেষে দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দেলোয়ারকে আদালতে হাজির করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ারকে অস্ত্র আইনে একটি মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠান। আদালত শুনানি শেষে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তিনি বলেন এটি একটি চাঞ্চল্যকর মামলা। এই মামলাটি যাতে দ্রুত বিচার সম্পন্ন হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত রোববার দিনগত রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল এলাকা থেকে একটি পিস্তল ও দুই রাইন্ড তাজা গুলিসহ দেলোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১। এ ঘটনায় র্যাব বাদি হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি অস্ত্র মামলা দায়ের করে। পরে র্যাব-১১ লক্ষীপুর ক্যাম্প কমান্ডারের নেতৃত্বে একটি দল দেলোয়ারের মাছের খামারে অভিযান চালিয়ে সাতটি তাজা ককটেল ও বন্দুকের দুইটি কার্তুজ উদ্ধার করে। বিস্ফোরক ও গুলি উদ্ধার ঘটনায় দেলোয়ারের রিরুদ্ধে বেগমগঞ্জ থানায় পৃথক একটি মামলা দায়ের করেছে র্যাব।
পরে দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, ‘আসামিদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেফতারকৃত দেলোয়ার বাহিনীর কয়েকজন সদস্য ভুক্তভোগী গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করে তাকে বিবস্ত্র করে বিভিন্নভাবে মধ্যযুগীয় কায়দায় শারিরীকভাবে নির্যাতন করে ঘটনার ভিডিও ধারণ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে পরবর্তীতে টাকা দাবি ও অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। কিন্তু রাজি না হওয়ায় পরবর্তীতে গত ৪ অক্টোবর ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
র্যাব-১১ সিও খন্দকার সাইফুল আলম বলেন, ‘দেলোয়ার বাহিনী” উক্ত এলাকায় চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা এবং নানান সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত এবং ‘দেলোয়ার’ এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের ভয়ে এলাকার লোকজন ভীত সন্ত্রস্ত। দেলোয়ারের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে দুটি হত্যা মামলা আছে। দেলোয়ারের কাছ থেকে উদ্ধারকৃত অস্ত্রটি অবৈধ। এটি দিয়েই মূলত এলাকায় মানুষকে ভয় দেখাতো। ভিডিওতে যারা ছিল তারা সবাই দেলোয়ার বাহিনীর সদস্য। এরা একত্রে চলাফেরা করে বিভিন্ন অপকর্ম করে থাকে। ধারণা করা হচ্ছে কু-মতলব বা শ্লীলতাহানির জন্য তারা সেখানে গিয়েছিল। তবে পরবর্তী তদন্তে বিস্তারিত বের হয়ে আসবে। ’