এবারের ‘আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম বিভাগ’-এর শর্টলিস্টে ৯৫টি ছবির মধ্যে স্থান পেয়েছে ১৫টি দেশের সিনেমা। তার মাঝে আছে মাজিদ মাজিদি পরিচালিত ইরানের ছবি ‘সান চিলড্রেন’। কী আছে এই ছবিতে?
চেনা ছকের বাইরের গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘সান চিলড্রেন’। স্কুল কমেডি থেকে ছবির কাহিনী আগায় ভয়াবহ পরিণতির দিকে। প্লটে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও অসাধারণ অভিনয়ের কারণে ছবিটি হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো। এটি ভেনিস প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া ২০২০ সালের সেরা চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে একটি।
বিশ্বের ১৫২ মিলিয়ন শিশু যাদেরকে শিশু শ্রমের জন্য বাধ্য করা হয়েছে, তাদের উৎসর্গ করা হয়েছে এই ছবি।
১২ বছর বয়সী রুহল্লাহ জামানি অভিনয় করেছে আলি চরিত্রে, যে একটি গ্যারেজে কাজ করে এবং পরবর্তীতে অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। সে কাজ শুরু করে স্থানীয় এক সন্ত্রাসী নেতার হয়ে। সেই নেতা চায় আলী কিছু গুপ্তধন উদ্ধার করে নিয়ে আসুক যেগুলো স্থানীয় কবরস্থানের মাটির নিছে আছে অথবা পাশের ড্রেনের পাইপের ভেতরে আছে। আর এই কাজটি করতে আলীকে স্কুলে ভর্তি হতে হবে। কারণ স্কুলের বেজমেন্টের মাটি খনন করে গুপ্তধনের কাছে পৌঁছাতে হবে।
‘দ্য স্কুল অব দ্য সান’-এ বেশ ভিড়। একটি দাতব্য সংস্থার সহায়তায় স্কুলটি পরিচালনা করেন দুজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। ওই স্কুলটিতে পথশিশু ও শিশু শ্রমিকদের পড়াশোনা করা হয়।
তেহরানের রাস্তা থেকে সংগ্রহ করা মাজিদির এই অপেশাদার শিশু শিল্পীরা দর্শকের মনে সহানুভূতি তৈরি করতে পেরেছে, হৃদয় ছুঁতে পেরেছে। আলীর আচরণের উগ্রতায় প্রকাশ পেয়েছে সঙ্কটে থাকা একজন শিশুর আবেগ-অনুভূতি, যার সামনে দুটি পথ খোলা-ভাল অথবা মন্দ।
সাধারণ ছাত্রের ছদ্মবেশে তারা পরিকল্পনা করতে থাকে বেজমেন্ট খনন করে গুপ্তধন উদ্ধার করার। আলীর মা মানসিকভাবে অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী। আলী স্বপ্ন দেখতে থাকে তার ভাগের সম্পদ দিয়ে একটি বাড়ি তৈরি করার।
জীবন কঠিন, জটিল। আলী ও তার বন্ধুদের মিশনের পাশাপাশি ছবির কাহিনী নতুন দিকে মোড় নেয়। ভাড়া দিতে না পারায় স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। রাফি নামের এক ব্যক্তি ফান্ড তোলার জন্য ভিডিও শুট করেন। এবার গল্পের আরও গভীরে যান মাজিদি।
আলী ও তার দল হামাগুড়ি দিয়ে মাটির নিচে ঢুকে গুপ্তধন উদ্ধারের জন্য। তারা কি উদ্ধার করতে পেরেছে? নাকি করুন পরিণতি হয়েছে তাদের? জানতে হলে দেখতে হবে অসাধারণ এই সিনেমাটি। -দ্য গার্ডিয়ান