চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

প্রতিবন্ধী এক তরুণ সিএনএন ‘হিরো অব দি ইয়ার’

ছয় সপ্তাহব্যাপী সিএনএন ডিজিটাল এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের ভোটে এবছর ‘সিএনএন হিরো অব দি ইয়ার’ নির্বাচিত হয়েছেন কলম্বিয়ার কালির জেসন অ্যারিস্টিজাবাল।

যদিও সৌভাগ্যের চামচ মুখে নিয়ে জন্মাননি অ্যারিসটিজাবাল। ছোট থেকেই সেরেব্রাল পালসি নামের এক রোগে আক্রান্ত তিনি। আর সে কারণেই নড়াচড়া করতেও খানিকটা বেগ পেতে হয় তাকে। ফলে ছোট থেকেই পৃথিবী নামের জগৎটা অনেকটাই মৃত এই মানুষটির কাছে।

হিরো অব দি ইয়ার নির্বাচিত হওয়ার পর ৩৩ বছর বয়সী অ্যারিস্টিজাবাল বলেন, আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন ডাক্তার বলেছিলেন আমি কিছুই করতে পারবো না। কিন্তু পরিবারের সমর্থন আর মানসিক শক্তিই আমাকে স্বাধীন হতে সাহায্য করে।

তাই তার চাওয়া অন্য প্রতিবন্ধীরাও যেন তার মতো করেই বেড়ে উঠে। এ জন্য বাড়ির গ্যারেজে প্রতিবন্ধীদের জন্য ডিসঅ্যাবিলিটি অ্যাডভোকেসি ফাউন্ডেশন চালু করে নিজের প্রথম পদক্ষেপটা নেন তিনি।

শেরি ফ্রাঙ্কলিন

এরপর সেখান থেকেই অ্যারিস্টিজাবাল ল স্কুলে যান এবং সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে তার নাম। এখন তিনি কলম্বিয়ায় প্রতিবন্ধীদের শিক্ষা ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করার জন্য এই পুরস্কারে ভূষিত হন।

রোববার সিএনএন হিরোস: অ্যান অল স্টার ট্রিবিউট প্রদান করা হয় তাকে। পাশাপাশি নির্বাচিত করা হয় ২০১৬ সালের টপ টেন সিএনএন হিরোকে।

পুরস্কার হিসেবে অ্যারিস্টিজাবাল ১ লাখ মার্কিন ডলার পাবেন। এ অর্থ অক্ষম ও সক্ষম তরুণদের নিয়ে কাজ করার জন্য ব্যয় করতে পারবেন তিনি। পাশাপাশি অন্য হিরোরা পাবেন ১০ হাজার মার্কিন ডলার। সঙ্গে তাদের তৈরি করা অলাভজনক প্রতিষ্ঠানগুলো ৫০ হাজার মার্কিন ডলার ডোনেশন হিসেবে পাবে।

ক্রেগ ডডসন

এ বছর সিএনএন একটি বিশেষ পুরস্কারও দিয়েছে। ২০১২ সালে নির্বাচিত সিএনএন হিরো অব দি ইয়ার পুষ্পা বাসনেট নতুন চালু হওয়া সিএনএন সুপারহিরো নির্বাচিত হয়েছেন। নেপালের কারাগারে বাবা-মায়ের সঙ্গে বাস করতে বাধ্য হওয়া শিশুদের নিজের তৈরি করা আর্লি চাইন্ডহুড ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের মাধ্যমে আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং চিকিৎসা সেবা দিয়ে আলোচনায় অাসেন পুষ্পা। তিনি তার কাজ পরিচালনার জন্য পাবেন ৫০ হাজার মার্কিন ডলার।

পুরস্কার গ্রহণের ওই অনুষ্ঠানে অ্যারিস্টিজাবাল আরো বলেন, ঈশ্বর আমাকে প্রতিবন্ধীদের সহায়তা করার জন্য নির্বাচন করেছেন। কখনো বড় কোনো সমস্যা দেখলে আমার মনে হয়, সেই সমস্যার সমাধান করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। ছোট কাজ দিয়ে শুরু করুন। ছোট সমস্যার সমাধানে চেষ্টা করুন। দেখবেন অনেকের জীবন বদলে যাবে।

হ্যারি সুইমার

সিএনএন টপ টেনে খাকা অন্যরা:
ভার্জিনিয়ার রিচমন্ডের ক্রেগ ডডসন। তিনি একজন সেমি-প্রফেশনাল সাইক্লিস্ট। ২০১০ সালে তিনি রিচমন্ড সাইক্লিং প্রজেক্ট তৈরি করেন শুধুমাত্র ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের জন্য।

বয়স্ক কুকুরদের উদ্ধার ও আবাসনের ব্যবস্থা করেন শেরি ফ্রাঙ্কলিন। ২০০৭ সাল থেকে মাটভিলেতে প্রায় ৪ হাজার কুকুরকে সহায়তা করেছেন তিনি।

ক্যান্সার আক্রান্তদের জন্য আউটডোর খেলাধুলার ব্যবস্থা করেন ব্র্যাড লুডেন

জর্জিয়ার ক্লার্কসনে একটি রিফিউজিদের জন্য একটি স্কুল চালান লুমা মুফলেহ

শেলডন স্মিথ

যুক্তরাষ্ট্রে নিজের ক্যারিয়ার ছেড়ে দিয়ে উমরা ওমর জন্মস্থান কেনিয়াতে ফিরে আসেন শুধুমাত্র প্রবেশাধিকারবিহীন মানুষদের সেবা দিতে। নৌকায়, রাস্তা বা ফেরিতে যাতায়াত করে চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন ওমরের করা সাফারি ডাক্তারের দলটি।

খুব খারাপ একটি পরিবেশে বড় হয়েছেন শেলডন স্মিথ। পাননি বাবার ভালোবাসাও। ডাকাতির দায়ে জেলে থাকার সময় তাই উপলব্ধি করেন বাবার গুরুত্ব। ফিরে এসে চেষ্টা করেন নিজের সন্তানকে সময় দিতে। আর একটি স্কুল গড়ে তোলেন যেখানে তরুণ বাবাদের শেখানো হয় কিভাবে দায়িত্ববান বাবা ও রোল মডেল হবেন।

লস এঞ্জেলের জর্জ স্মিথ পালিত শিশুদের জন্য সবচেয়ে বড় বাসস্থান তৈরি করেন।

উমরা ওমর

নাশভিলের বেক্কা স্টিভেন মানবপাচারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। নারীদের যৌনকর্ম ও মাদকের হাত থেকে বাঁচাতে বাসস্থান, ওষুধ , কাউন্সেলিং ও চাকরি দিয়ে থাকেন তিনি।

নিজের ঘোড়ার খামারটিকে বিশেষ শিশুদের জন্য আশ্রয়স্থল বানিয়ে ফেলেছেন হ্যারি সুইমার। ১৯৮৮ সাল থেকে পরিচালিত এই খামারে অন্তত ৮০০ শিশু সেবা নিয়েছে।

এই পুরস্কারের অংশ হিসেবেই টপ টেন হিরোরা একটি ফ্রি টেনিং পাবেন অ্যান্নেনবার্গ ফাউন্ডেশন থেকে। সেখানে থেকে তারা সহায়তা পাবেন কিভাবে নিজের সংগঠনকে আরো শক্তিশালী ও দীর্ঘমেয়াদী সফল করা যায়।