অলিম্পিকে আবার কবে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হবে এখনো অজানাই। সেখানে ফুটবলে অংশ নিতে বাছাইপর্বে খেলারই সুযোগ করে নেয়া সম্ভব হয় না। শ্যুটিং-আর্চারির মতো খেলাগুলোয় সম্ভাবনা থাকলেও প্রতিবারই হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে। এত অপ্রাপ্তির মাঝেও যে খেলাটি নিভৃতে লাল-সবুজদের জন্য অলিম্পিকে আশা জাগাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে, সেটি নতুন এক ফরম্যাটের বাস্কেটবল প্রতিযোগিতা। মাত্র তিনজনকে নিয়ে লড়তে পারা এ খেলায় বাংলাদেশের অগ্রগতি বেশ আশা জাগানিয়াই। দেখাচ্ছে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্নও।
আই-ক্রিয়েশনের পৃষ্ঠপোষকতায় শুক্রবার ধানমন্ডির ইনডোর বাস্কেটবল স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী ‘ফায়ারবল থ্রি ইনটু থ্রি বাস্কেটবল টুর্নামেন্ট’। টুর্নামেন্টের মিডিয়া পার্টনার হয়েছে চ্যানেল আই ও চ্যানেল আই অনলাইন। ছেলেদের ১৮টি ও মেয়েদের ১০টিসহ মোট ২৮টি দল নিয়ে আয়োজন শেষ হবে শনিবার।
মূল ফরম্যাটের থেকে থ্রি ইনটু থ্রি বাস্কেটবলের ধরণটা একটু ভিন্ন। দলে পাঁচজনের মধ্যে তিনজন সরাসরি খেলতে পারেন ম্যাচে। রেফারির অনুমতি নিয়ে যখন তখন খেলোয়াড় পরিবর্তন করা সম্ভব। মূল কোর্টকে অর্ধেকভাগে ভাগ করে একটি বাস্কেটে হয় খেলা। খেলার সময় ১০মিনিট।
ক্রিকেট-ফুটবলের উত্তেজনায় আড়ালে থাকলেও বাস্কেটবলে বাংলাদেশের অর্জন কিন্তু নেহাত মন্দ নয়। সাফে ভারতের পরে থেকে রানার্সআপ। আর থ্রি ইনটু থ্রি ফরম্যাটে ফলাফল আরও ভালো। এশিয়ার অন্যতম পরাশক্তি চীনকে দুবার, সঙ্গে ওমান-কিরগিজস্তানকে হারানোর অভিজ্ঞতাও আছে বাংলাদেশ থ্রি ইনটু থ্রি বাস্কেটবল দলের।
এই সাফল্য আশার পালে জোর হাওয়া দিচ্ছে। কারণ আন্তর্জাতিক অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন এরইমধ্যে থ্রি ইনটু থ্রি বাস্কেটবলকে তাদের আয়োজনে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়েছে। মাত্র তিনজনের খেলা হওয়ায় যেকোনো দলকে হারিয়ে বাংলাদেশ থ্রি ইনটু থ্রি দলের অলিম্পিকে সাফল্যের সম্ভাবনা দেখছেন বাংলাদেশ নারী দলের কোচ রণজিৎ দাস।
‘এই ফরম্যাটে বাংলাদেশের সম্ভাবনা বেশ ভালো। যেহেতু অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সঠিক পরিচর্যা আর একটু সহযোগিতায় এই খেলা থেকে সাফল্য আনা সম্ভব।’
শুধু বাস্কেটবলেই নয়, হকি-হাডুডুর মতো খেলাগুলির জন্যও সঠিক পৃষ্ঠপোষকতার প্রয়োজন দেখছেন আই-ক্রিয়েশনের পরিচালক রায়হান রশিদ মজুমদার। ক্রমান্বয়ে পিছিয়ে পড়া খেলাগুলোকে জনপ্রিয় করতে ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে পরিকল্পনার কথা জানালেন তিনি।
‘বাস্কেটবল, টেবিল টেনিসের মতো খেলাগুলো অনেকেই খেলে। অনেক মেধাবী খেলোয়াড় আছেন। আমরা চাচ্ছি এধরনের খেলাগুলোকে তুলে ধরতে। আমরা বিশ্বাস করি একটা দেশের জন্য খেলাধুলা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ক্রিকেট যেমন আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। বাস্কেটবল ফেডারেশন আমাদের জানিয়েছে থ্রি ইনটু থ্রি ফরম্যাটে অনেক সম্ভাবনা আছে। সেই বিষয়টি চিন্তা করেই আমাদের এগিয়ে আসা।’
প্রতিবেশী দেশ ভারত এশিয়াতে রানার্সআপ। পূর্ণ ক্যাম্প ও সঠিক প্রতিভা খুঁজে বের করতে পারলে ভারতের মতো বাংলাদেশেরও সম্ভাবনা দেখেন বাংলাদেশ জাতীয় বাস্কেটবল দলের খেলোয়াড় আরিফ হাসান।
‘আমাদের দেশেও কিন্তু অনেক লম্বা, ফিট খেলোয়াড় আছেন। তাদের খুঁজে বের করে ২-৩ মাস সঠিক প্রশিক্ষণ দিলে সাফল্য আসবেই। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে, খুঁজে বের করতে হবে খেলোয়াড়দের।’