ব্রাজিলের রিও অলিম্পিক গেমসে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে লাল সবুজের বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন অর্থোপেডিক সার্জন অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ মোফাখ্খারুল বারী।
পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞের নাম অলিম্পিক। আন্তর্জাতিক এই ক্রীড়া আসর ৫ আগষ্ট শুরু হয়ে শেষ হবে ২১ আগষ্ট।
সেখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব করতে যাওয়া মোফাখ্খারুল বারী চ্যানেল আই অনলাইনকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন নিজের অনুভূতির কথা।
ডক্টর বারী বলেন, ‘১৯৮০ সালে মস্কোতে যখন অলিম্পিকের আসর বসেছিল সেসময় তিনি সেখানকার শিক্ষার্থী ছিলেন। তখন থেকেই অলিম্পিক গেমসের ইভেন্টগুলো দেখার মজা পেয়ে বসে। ডাক্তারী পেশার কারণে পরে ভেন্যুতে বসে অলিম্পিক গেমস আর দেখার সুযোগ হয়নি।’
“২০১৪ সালে যখন আমি রিওতে যাই তখন অলিম্পিকের বুথ দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেনি। তখন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আবেদন করি। পরে বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে রিও অলিম্পিক কমিটি আমাকে সিলেক্ট করে।”
রিও অলিম্পিকের জাঁকজমক এ আসরে বাংলাদেশী পাঁচজন অ্যাথলেট অংশগ্রহণ করবে। তারা হলেন গলফে সিদ্দিকুর রহমান, সাঁতারের ৫০ মিটার ফ্রি স্টাইলে মাহফিজুর রহমান সাগর ও ব্রেস্টস্ট্রোকে সোনিয়া আক্তার টুম্পা, শ্যুটিংয়ে আবদুল্লাহ হেল বাকি ও আর্চারিতে শ্যামলী রায়।
স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারাটা অনেক গর্বের বিষয় জানিয়ে ডক্টর বারী বলেন, ‘ব্রাজিলের প্রতি আমার আগে থেকেই দুবর্লতা রয়েছে। আমি পরিবার নিয়েই ব্রাজিলের সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। যেহেতু আমি একজন অর্থোপেডিক সার্জন তাই অলিম্পিকে আমার প্রথম কাজ হবে ইনজুরি আক্রান্ত খেলোয়াড়দের সেবা দেয়া। তাছাড়া যেহেতু আমি রাশান, ফেঞ্চ ও ইংরেজী জানি, যে কোনো প্রয়োজনে আমি দোভাষীর কাজও করতে পারব।’
রাশান ইলিজাবভ সায়েন্টেফিক সেন্টারের ভিজিটিং ও সম্মানিত এ অধ্যাপক আরও বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ থেকে রিও অলিম্পিকে যারা অংশ নিচ্ছে, তাদের জন্য দেশবাসীর জন্য এটা অনেক বড় গর্বের বিষয়, পুরস্কার পাওয়াটা বড় কথা না অংশগ্রহণ করাটাই বড়। আমি সবসময়ই চায় বিশ্বের সকল জায়গায় বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা উড়ুক।’
ভবিষ্যতে অলিম্পিকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দেশের তরুণরাও যেন অংশগ্রহণ করতে পারে সেজন্য ডক্টর বারী এবারে অলিম্পিকে সেই দ্বার উন্মোচন করে দিলেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি চাই পরের অলিম্পিকে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যেন তরুণরাও অংশ নেয় এ জন্যই তাদের উদ্বুদ্ধ করতে আমার রিও’তে যাওয়া, এ জন্য শুধু ইচ্ছাশক্তির প্রয়োজন।’
এবারের অলিম্পিকে কসাভো ও দক্ষিণ সুদানসহ ২১৬টি জাতীয় অলিম্পিক কমিটি (এনওসি) থেকে ১০,৫০০ জনেরও বেশি ক্রীড়াবিদ অংশগ্রহণ করবে।
২০০৯ সালে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) মাধ্যমে সংযুক্ত ক্রীড়া রাগবি সেভেনস ও গলফসহ ২৮টি অলিম্পিক ক্রীড়ায় ৩০৬টি ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহৎ এই প্রতিযোগিতার জন্য ব্রাজিলের বিখ্যাত শহর রিও তো থাকছেই। এর পাশপাশি ব্রাজিলের আরেকটি বড় শহর সাও পাওলো, রাজধানী ব্রাসিলিয়া, মানাউশ এবং সালভাদোরও প্রস্তুত।