চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অলিম্পিকের লোগো নকল, নতুন লোগোর খোঁজে টোকিও

অন্য লোগোর ডিজাইন নকল করার অভিযোগে ২০২০ সালে জাপানে অনুষ্ঠিতব্য টোকিও ২০২০ অলিম্পিক গেমসের লোগো বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয় অলিম্পিক আয়োজক কমিটি।

তারপর থেকেই নতুন লোগো ডিজাইন করা নিয়ে জাপানে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়।

গতমাসে টোকিও ২০২০ অলিম্পিক গেমসের লোগো উন্মোচন হয়। ইংরেজি বর্ণ ‘টি’ এবং একটি লাল বৃত্তের ওপর ফোকাস করে লোগোটি তৈরি করেন ডিজাইনার কেনজিরো সানো।

আয়োজক কমিটি থেকে বলা হয়, কালো রঙের লোগোতে কালো রঙ দিয়ে বৈচিত্র্য এবং সব জাতির সমন্বয় বোঝানো হয়েছে, যেহেতু সব রঙের মিলনেই কালো রঙ হয়। আর লাল বৃত্ত দিয়ে বোঝানো হয়েছে প্রতিটি মানুষের স্পন্দনরত হৃদয়কে।

তবে বৃত্তটিকে সমালোচকরা প্রথমে জাপানের পতাকার লাল বৃত্তের সঙ্গে তুলনা করেন।

আর সবচেয়ে বড় সমালোচনা আসে লোগোর বাকি অংশ নিয়ে। লোগো উন্মোচনের কিছুদিনের মধ্যেই অলিভিয়ার ডেবি নামের এক বেলজিয়ান গ্রাফিক ডিজাইনার অলিম্পিক লোগোর সঙ্গে নিজের তৈরি একটি লোগোর অস্বাভাবিক সাদৃশ্য টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেন, যা তিনি বেলজিয়ামের ‘থিয়েটার ডি লিয়েজ’র জন্য ডিজাইন করেছিলেন। লোগোটি অলিম্পিকে ব্যবহারের বিরুদ্ধে ডেবি এবং ওই থিয়েটার একটি মামলা দায়ের করেন।

প্রবল সমালোচনার মুখে অনলাইন থেকে একটি পুরোনো লোগো প্রজেক্টের অংশ কপি করার কথা স্বীকার করেন কেনজিরো সানো।

টোকিও আয়োজক কমিটির মহাপরিচালক তোশিও মুতো বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত লোগো দু’টি ভিন্ন। কিন্তু এই লোগো জনগণের সমর্থন পাবে না। তাই সমালোচনা ও সমস্যা এড়াতে আমরা এটি বাদ দিয়ে নতুন লোগো গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

লেগো বাতিলের ঘোষণার পর থেকেই জাপানের গ্রাফিক ডিজাইনারসহ সাধারণ মানুষেরা বিভিন্ন ধরনের লোগো তৈরি করে ইন্টারনেটে ছাড়ছেন। কেউ আবার আইডিয়া দিয়ে সাহায্য করছেন। তাদের আশা এগুলোর মধ্য থেকেই কোনো একটি টোকিও ২০২০ অলিম্পিক গেমসের নতুন লোগো হিসেবে গৃহীত হবে।

ভিন্ন ভিন্ন থিম নিয়ে এসব বিচিত্র লেগো। এদের মধ্যে জনপ্রিয় একটি হলো ১৯৬৪ সালে অলিম্পিকের সদস্যপ্রার্থী শহর হিসেবে টোকিওর তৈরি প্রথম অলিম্পিক লোগো। জাপানের বিখ্যাত চেরিফুল তৈরি পুষ্পস্তবক এই লোগোর প্রধান অংশ। লোগোটিকে তালিকায় রেখেছে অলিম্পিক কমিটি।

জাপানের হাতপাখা বিশ্বব্যাপী পরিচিত। সৌভাগ্য এবং উৎসাহের প্রতীক এই হাতপাখা দিয়ে লোগো ডিজাইন করেছেন ডিজাইনার কান কান। তিনি মনে করেন এর মধ্য দিয়ে জাপানের প্রতি মানুষের সমর্থন প্রকাশ পাবে।

সূর্যোদয়ের দেশ হিসেবে পরিচিত জাপান। তাই এই ধারণাটিকে কাজে লাগিয়ে সূর্যালোকিত লোগো ডিজাইন করেছেন টুইটার ব্যবহারকারী জানমা১।

নিনজা মানেই জাপান, জাপান মানেই নিনজা। কার্টুন থেকে শুরু করে চলচ্চিত্র- নিনজা জনপ্রিয় একটি থিম। তাই এই থিমটি মাথায় রেখে নিনজার তারার মতো দেখতে হাতিয়ার শুরিকেন দিয়ে ‘দ্য নিনজা’ নামের একটি জাপানি ব্যান্ড তৈরি করেছে অলিম্পিকের নতুন লোগো।

জাপানের প্রাচীন ঐতিহ্যের অংশ অরিগামি, বা কাগজ দিয়ে তৈরি বিভিন্ন আকৃতি। অরিগামির মধ্যে আবার জনপ্রিয় হলো কাগজের পাখি। কাগজের পাখি জাপানে শান্তির প্রতীক। তাই এই ধারণার থেকে টুইটার ব্যবহারকারী শিরাতোরি৫২ তৈরি করেছেন অলিম্পিক লোগো। তার মতে, গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের লাল রঙ অলিম্পিক ‘পবিত্র’ অগ্নিশিখার প্রতিনিধিত্ব করে। আর প্যারালিম্পিকের লোগো প্রতিনিধিত্ব করে প্রতিবন্ধীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের।

অন্যদিকে ইজি তামুরা একই ধারণা থেকে সূর্য, কাগজের অরিগামি পাখি এবং চেরিফুল মিলিয়ে ডিজাইন করেছেন লোগো। যার মধ্য দিয়ে তিনি ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন জনগণের আশা এবং জাপানি সংস্কৃতি।

আরো নানা ধরনের অসাধারণ সব লোগো ডিজাইন পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে অলিম্পিক কমিটি। শিগগিরই নতুন লোগো নির্বাচন করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।