জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনতো গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, অযৌক্তিকভাবে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। তেলের দাম বাড়লে মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। বাড়বে পণ্যের উৎপাদন ও পরিবহন ব্যয়। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতির কারণে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ। তার ওপর তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের জীবন আরো কঠিন হয়ে পড়বে। এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, সরকার ব্যবসায়িক দৃষ্টি দিয়ে দেশ পরিচালনা করলে মানুষের কষ্ট আরো বেড়ে যাবে। সেবার মনোভাব নিয়ে দেশ পরিচালনা করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. নূরুন্নবী মৃধা জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এর হাতে ফুল দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এ উপলক্ষে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানী কার্যালয়ে এক সভায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে এই অজুহাতে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু, করোনাকালে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক কম ছিলো, তখন তো তেলের দাম কমানো হয়নি। তখন যে পরিমাণ টাকা লাভ হয়েছে সেই টাকা কোথায় গেলো জানতে চান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ভর্তুকি দিয়ে হলেও তেলের দাম সহনীয় রাখতে হবে।
তিনি আরো বলেন, আইনের শাসন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৯টি দেশের মধ্যে ১২৪তম। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সূচকে আমরা পিছিয়ে পড়ছি। এটা খুবই দুঃখজনক।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ২১ বছর আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকে অনেক দূর্বল হয়ে পড়েছিলো। আবার ১৩ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকে বিএনপির অবস্থাও অনেক দূর্বল। কিন্তু ৩১ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকে জাতীয় পার্টি এখনো রাজনীতিতে সক্রিয় আছে। কারণ, জাতীয় পার্টির শেকড় অনেক শক্ত। দেশের মানুষ আবারো জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, অনেকেই আঁতেল সাজতে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে স্বৈরাচার বলেন। কিন্তু, কেন স্বৈরাচার বলেন তার জবাব দিতে পারেন না তারা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে জাতীয় পার্টি হচ্ছে সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক শক্তি। তাই বিএনপি ও আওয়ামী লীগ বারবার জাতীয় পার্টিকে ধংস করতে অপচেষ্টা করেও সফল হয়নি। বিএনপির আপোষহীন নেত্রী মুচলেকা দিয়ে চিকিৎসার জন্য জেলখানার বাইরে আছেন। চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে বারবার সরকারের কাছে আবেদন করছেন, সে ব্যাপারে আমাদের কোন বক্তব্য নেই। কিন্তু পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জেলখানায় থাকা অবস্থায় ভয়াবহ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন চিকিৎসকরা জেলখানার বাইরে পল্লীবন্ধুর চিকিৎসার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও তখন পল্লীবন্ধুর চিকিৎসার জন্য দলীয়ভাবে স্টেটমেন্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু, তখন খালেদা জিয়ার সরকার চিকিৎসার জন্য পল্লীবন্ধু এরশাদকে জেলখানার বাইরে চিকিৎসা নেয়ার অনুমতি দেয়নি। ৯১ সালের পর জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে হামলা-মামলা দিয়ে বিএনপি যে অন্যায় করেছিলো, বর্তমানে তার প্রায়শ্চিত্ব করছে বিএনপি। বিএনপির আমলে জাতীয় পার্টির ওপর যে অত্যাচার করা হয়েছিলো, বিএনপি তার কিছুটা স্বাদ পাচ্ছে এখন।