স্বপ্নের মতো একটা অভিষেক হয়েছে। লর্ডসে দেশের হয়ে প্রথমবার সাদা পোশাকে নেমেছেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭ উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলারও তিনি। অথচ ম্যাচের পরপরই নিষিদ্ধ হতে হল ইংল্যান্ড পেসার অলিভার এডওয়ার্ড রবিনসনকে।
প্রায় একদশক আগে, ২০১২-১৩ সালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে বর্ণবাদী ও সেক্সিস্ট মন্তব্যের জেরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে আপাতত নিষিদ্ধ করে রাখা হল রবিনসনকে। পুরনো ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন, রক্ষা হল না।
সিরিজের প্রথম টেস্টে লর্ডসে অভিষিক্ত ডেভন কনওয়ের ২০০ রানে প্রথম ইনিংসে ৩৭৮ তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। জবাবে ররি বার্নসের ১৩২ রানে ২৭৫ তুলে প্রথম ইনিংস শেষ করে ইংল্যান্ড।
৯ উইকেটে ১৬৯ তুলে কিউইরা দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করলে লক্ষ্যের পেছনে ছুটে ৩ উইকেটে ইংলিশরা ১৭০ তোলার পর ম্যাচে ড্র আসে। ২৭ বছর বয়সী ডানহাতি পেসার রবিনসন প্রথম ইনিংসে ২৮ ওভার বল করে ৭৫ রানে ৪ উইকেট নেন, ব্যাটে তোলেন ৪২ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪ ওভারে ২৬ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট।
এমন ঝলমলে অভিষেকের পর হতে হল নিষিদ্ধ। বিতর্কিত টুইটের তদন্তের ফল না মেলা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে রবিনসনের। পরে বাড়তে পারে শাস্তি।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সপ্তাহের শেষে মাঠে গড়ানোর অপেক্ষায় থাকা দ্বিতীয় টেস্টে তাকে তো স্কোয়াডে রাখা হয়ইনি, ইসিবি থেকে চলেও যেতে বলা হয়েছে দল ছেড়ে, বলা হয়েছে কাউন্টি দল সাসেক্সের ডেরায় যেতে।
রবিনসন যখন গত সপ্তাহে লর্ডসে নামলেন, একদিকে বল হাতে ঝড় তুলেছেন, অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে থাকে তার পুরনো টুইটগুলো। যাতে উগ্র সন্ত্রাসবাদে মুসলিমদের জড়ানো, নারীর প্রতি অপ্রীতিকর অসংখ্য মন্তব্য ছিল।
সেই কিশোর বয়সে টুইটগুলো করেছিলেন রবিনসন। তখনও ইংলিশ কাউন্টির কোনো ক্লাবের প্রথম দলে সুযোগ মেলেনি। যখন জাতীয় দলে এলেন, জো রুটের দল ক্রিকেটে বর্ণবাদ, লিঙ্গ-বৈষম্যসহ সবধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার। এমনকি লর্ডস টেস্টের আগেরদিন দলটির পক্ষে বৈষম্য বিরোধী স্লোগান লেখা অনুশীলন জার্সিও সামনে আনা হয়।
যা আরও বেশি করে উসকে দেয় ইংলিশ পেসারের অতীত সামনে টেনে আনতে। ম্যাচ চলাকালীনই রবিনসন প্রকাশ্যে ক্ষমা চান সংবাদ মাধ্যমের সামনে। প্রথমদিনের খেলা শেষে ক্ষমা প্রার্থনায় বলেন, সেসময় অপরিণত বয়সের ছিলেন। শেষ পর্যন্ত যা রক্ষাকবচ হতে পারল না।