চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অভিবাসন প্রত্যাশী দুটি সিরিয় পরিবারের কষ্টগাঁথা

জার্মানি সীমান্ত খুলে দেয়ায় কয়েকশো শরণার্থী ট্রেনে করে মিউনিখে পৌঁছে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও এখনো শত শত অভিবাসন প্রত্যাশী ভীড় করে আছেন হাঙ্গেরির কেলেতি রেলস্টেশনে। অসহায় মানুষগুলোর হাতে তুলে ধরা কাগজে ফুটে উঠেছে ‘সাহায্য করুন’ কিংবা ‘শিশুরা ক্লান্ত’ এরকম নানা মানবিক আবেদন। শরণার্থীদের মধ্যে সিরিয়দের অবস্থা বেশি সংকটজনক।

যুদ্ধ-সংঘাতে বিধ্বস্ত দেশ ছেড়ে ভয়াবহ সমুদ্রযাত্রার পর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের শঙ্কায় হাজারো সিরিয় পরিবার। এরকমই দু’টি সিরিয় পরিবারের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে সিএনএন এর এক প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনটিতে দেখা যায়, হাঙ্গেরির একটি রেলস্টেশনের মেইন গেটের পাশে বসে ট্রেনের জন্য অধীর অপেক্ষায় আছেন হুরিয়া (৬০)। সঙ্গে তার দুই ছেলে, যাদের একজন প্রতিবন্ধী। হুইল চেয়ারে বসা প্রতিবন্ধী ছেলেটির গালে একটি ক্ষত। সীমান্ত পাড় হওয়ার চিহ্ন। ২১ দিনের অমানুষিক ভ্রমণে একেবারেই ভেঙে পড়েছে পরিবারটি। সম্পদ বলতে শুধু পরনের কাপড় ছাড়া আর কিছু নেই।

হুরিয়ার বড় ছেলের ছোট ছোট দু’টি সন্তান আছে। তৃতীয় সন্তানটি হয়তো জন্ম নিতে যাচ্ছে এই অনিশ্চিত যাত্রার মধ্যেই। কারণ হুরিয়ার বড় ছেলের স্ত্রী শিরিন সন্তানসম্ভবা । এতো প্রতিকূলতার পরও সন্তানের জন্য সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন শিরিন।

তিনি বলেন, ‘আর আলেপ্পোতে ফিরে যেতে পারবো না আমরা। সন্তানদের জন্য একটি ভবিষ্যৎ চাই শুধু, চাই শিক্ষার সুযোগ কিন্তু কর্তৃপক্ষের অনড় অবস্থানে চলমান অচলাবস্থায় সব কেমন যেনো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে’।

নিরুপায় হুরিয়া সিএনএন প্রতিবেদকের কাছে আকুল আবেদন জানিয়ে বলেন,‘ দয়া করে আমাদের রক্ষা করুন, বাঁচান’।

কেমিকেল ইঞ্জিনিয়ার মাহমুদের পরিবারের দুর্দশার চিত্রটিও কোনো অংশে কম নয়। সিরিয়ায় যুদ্ধ শুরুর আগে বেশ চমৎকারভাবে কাটছিলো মাহমুদের পারিবারিক জীবন। অথচ আজ সব শেষ। প্রাণ বাঁচাতে ৪ বছরের ছেলের ভবিষ্যতে ইউরোপে পাড়ি জমানো এক দিশেহারা পিতা মাহমুদ। মাহমুদের ছোট্ট ছেলের চোখের কাছেও একটি ক্ষত। মেসিডোনিয়া সীমান্ত পার হওয়ার সময় আঘাত লেগেছিলো ওখানে।

নিজের পরিবারের এরকম দুর্দশায় পড়তে দেখাটা দুঃসহ যন্ত্রণার বলে জানান মাহমুদ।