‘এক জীবনে এত প্রেম পাব কোথায়’ শিরোনামের জনপ্রিয় গানটির কথা নিশ্চয়ই মনে আছে সবার। শুধু গান নয়, গানের ভিডিওটিও সবার মনে গেঁথে আছে এখনও। তবে গানের ভিডিওর পাশাপাশি সবার নজর কেড়েছিল ওই গানের ভিডিওর মডেল কন্যা। মিষ্টি চেহারার সেই মেয়েটির নাম শায়না আমিন। ২০০৬ সালে ‘ক্রস কানেকশন’ নাটকের মাধ্যমে ছোটপর্দায় ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। এরপর বেশকিছু বিজ্ঞাপন ও নাটকে কাজ করেন। পাশাপাশি ‘মেহেরজান’ চলচ্চিত্র দিয়ে বড়পর্দায় তার অভিষেক ঘটে।
তবে দীর্ঘদিন ধরেই মিডিয়া থেকে দূরে আছেন এই মডেল ও অভিনয়শিল্পী। মিডিয়া ছেড়ে বিয়ে করে পাড়ি জমিয়েছেন যুক্তরাজ্যে। স্বামী-সন্তানসহ সেখানেই কাটছে তার সময়। তবে তার এই দীর্ঘ বিরতিতে ভক্তরা যেন একটু হতাশই হয়ে আছেন। প্রিয় মুখ মিডিয়াতে ফিরবেন কি না বা কোথায় আছেন, কেমন আছেন, কী করছেন সব কিছুই যেন জানার আগ্রহে তার ভক্তরা।
ভক্তদের এমন প্রশ্ন এবং আরও নানা বিষয় নিয়েই রোববার ফেসবুকের মাধ্যমে চ্যানেল আই অনলাইন-এর সাথে কথা বললেন শায়না আমিন।
কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ্ ভালো আছি।
মিডিয়া ছেড়ে তো বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন, মিডিয়া এবং ভক্তদের মিস করছেন?
মিডিয়া জীবন মিস করার সময় কোথায়? সন্তান, সংসার নিয়েই সময় কেটে যায়। আর ভক্তদের সঙ্গে সবসময় ফেসবুকে আমি যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করি। ভক্তরা যেমন আমাকে আগের মত পছন্দ করতেন, এখনও করেন। তবে অভিনয়টা এখনও মিস করি। তাছাড়া আর কিছু মিস করার নাই।
মিডিয়ায় কি আবার ফিরে আসবেন?
মিডিয়ায় পুরোপুরিভাবে আর ফিরে আসা হবে না। পরিবার নিয়ে আমি এখন যুক্তরাজ্যে স্থায়ী। তাই মিডিয়ায় ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম।
এত বছর কাজ করেছেন মিডিয়ায়। অভিজ্ঞতা কেমন?
১০ বছর মিডিয়ায় কাজ করেছি আমি। মাঝে বিরতিও ছিল। তবে এখন পর্যন্ত ক্যারিয়ারে আমার প্রাপ্তি আমার ভক্তরা। তারা আমার ভালো কিছু কাজ এখনও পছন্দ করে। তাছাড়া আর কোন প্রাপ্তি নাই। আর মিডিয়ার কিছু ব্যাপার যেমন নিয়মকানুন, অভিনয়শিল্পীদের সময়ের মূল্য এবং তাদের পারিশ্রমিক নিয়ে যে অন্যায় গুলো হয় তার একটা সমাধান হওয়া উচিৎ।
দেশের নাটক, সিনেমা দেখা হয়? কার কাজ ভালো লাগে?
দেশে থাকতেও আমার খুব একটা নাটক বা সিনেমা দেখার সুযোগ হতো না। কিন্তু যখন কোন কাজের রিভিউ ভালো হতো তা দেখতাম। এখন নির্মাতা মিজানুর রহমান আরিয়ানের কাজ ভালো লাগে। তার একটি নাটকেই আমি কাজ করেছি। খুবই ভালো লাগে তার কাজ। তাছাড়া নতুন আরও নির্মাতাদের কাজও দেখা হয়।
আর নতুন যারা কাজ করছে তাদের কাজ তেমন একটা দেখা হয় না। কিন্তু ফেসবুকের মাধ্যমে তারা কী কী কাজ করছে সেসব জানা হয়। তাদের প্রত্যেকের জার্নি ভিন্ন। আর আমার মনে হয় মিডিয়ায় তাদের কেমন হয়ে চলা উচিৎ তারা সবাই জানে।
এখনও দেশ থেকে কাজের প্রস্তাব পান কি?
কখনও কখনও পাই। অনেক নির্মাতা চায়, যদি কাজ করতে চাই তাহলে যেন দেশে আসার আগেই জানিয়ে দেই এবং দেশে আসলে এক দুইটা কাজ করি।
আপনার সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়?
খুব একটা না। কখনও কখনও নিজেই অবাক হই যে, যাদের সঙ্গে কাজ করেছি তাদের অনেকেই আমার বিয়ের পর আর যুক্তরাজ্যে আসার পর কখনোই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। কিন্তু যখন আমি কাজ করতাম তখন মেসেজ, ফোন প্রতিদিনই আসতো। তবে এতে আমার মন খারাপ হয় না। এটাই হয়তোবা নিয়ম।
আবার কেউ কেউ আছে যাদের সাথে ফেসবুক পোস্টে লাইক, কমেন্টে যোগাযোগ আছে। হা হা হা। তারাও আমার পোস্টে লাইক এবং কমেন্ট দেয়, আমিও দেই।
ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা কী আপনার?
আমি সব সময় বর্তমান নিয়েই চিন্তা করি। ভবিষ্যতে কী হবে বলতে পারব না।
যুক্তরাজ্যে আপনি কি কোন কাজের সঙ্গে জড়িত?
এখানে আমি আছি আড়াই বছর ধরে। সংসার আর সন্তান নিয়েই সময় কেটে যায়। এখনো কোনো চাকরি করছি না। কারণ আমার মেয়ে আরশিয়ার বয়স দু’বছর হবে। সে এখনও অনেক ছোট। তাকে রেখে বাইরে কাজ করার ইচ্ছে নেই।
দেশে আসার ইচ্ছে আছে? কবে নাগাদ আসতে পারেন?
দেশে আসার ইচ্ছে তো সব সময়ই থাকে। ডিসেম্বর বা জানুয়ারির দিকে আসতে পারি। এর আগেও হতে পারে।
ভক্তদের জন্য কিছু বলুন
ভক্তরা আমার কাজকে পছন্দ করে আমায় পরিচিতি দিয়েছে। এখনও তারা আমাকে সেই পরিমাণ পছন্দ করে, এটা আমার জন্য আশীর্বাদ। এখনও তারা আমার কাছে জানতে চায় আমি কেন কাজ করছি না বা কবে কাজে ফিরব? এটা ভালো লাগার বিষয়।
ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য।
আপনাকে এবং চ্যানেল আই পরিবারকেও অনেক ধন্যবাদ।