‘চ্যানেল আই লাক্স সুপারস্টার-২০১৪’-এর প্রথম রানার্সআপ ছিলেন নাজিফা তুষি। চাইলেই পারতেন ছোটপর্দায় নিয়মিত হতে, কিন্তু তুষির নজর ছিল বড়পর্দা! ২০১৬ সালে রেদওয়ান রনির ‘আইসক্রিম’ দিয়ে তুষির চলচিত্রে অভিষেক। এরপর বড়পর্দায় লম্বা বিরতি থাকলেও দু-চারটি টিভিতে দেখা যায় তুষিকে। গেল বছর মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’ ছবিতে কাজ করেছেন তিনি। ছবিটি মুক্তির অপেক্ষায়। সম্প্রতি কাজ করেছেন প্রখ্যাত নির্মাতা নূরুল আলম আতিকের ‘নিষিদ্ধ বাসর’ নামে একটি ওয়েব ফিকশনে। বিনজ্ অ্যাপে তুষির এ কাজটি উন্মুক্ত হয়েছে। এই তারকা মুঠোফোনে কথা বললেন সাম্প্রতিক ব্যস্ততা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে…
নূরুল আলম আতিকের ‘নিষিদ্ধ বাসর’ এ কাজ করেছেন। অভিজ্ঞতা কেমন?
বিনজে দেশের পাঁচজন মেধাবী নির্মাতা পাঁচটি ফিকশন নির্মাণ করেছেন। এরমধ্যে আমার অভিনীত ফিকশনটির নাম ‘নিষিদ্ধ বাসর’। পরিচালনা করেছেন নূরুল আলম আতিক। তিনি আমার পছন্দের পরিচালকদের একজন। দর্শক দেখে প্রশংসা করছেন। এই কাজটি দিয়েই প্রথমবার আতিক ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করলাম। একজন পারফর্মারের ইচ্ছে থাকে ভালো ভালো নির্মাতার সঙ্গে কাজ করার। তাছাড়া আমি যে জনরার কাজ করতে পছন্দ করি আতিক ভাই সেই জনরার নির্মাতা। যে কাজটা করলাম গল্প, চরিত্র দুটোই ভালো।
এই ওয়েব ফিকশনে আপনার চরিত্রটি কেমন ছিলো?
যে চরিত্রটি আমি করলাম আশপাশে অনেক দেখা যায়। বিশেষ করে মধ্যেপ্রাচ্যে আমাদের দেশ থেকে অনেক নারীকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অনেক নারীকে আবার বিয়ে করে মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ে যায় স্বামী। কিন্তু সেই স্বামী যে দালাল এটা বুঝতে পারে না। এ ধরনের ভিক্টিমের চরিত্রে কাজ করেছি। আগে ভিক্টিমরা এসব ঘটনা মেনে নিত, কিন্তু আতিক ভাই গল্পে দেখায়, ভিক্টিম এ ধরনের পরিস্থিতি মেনে নেয় না। এ যুগে মেয়েরা অনেক প্রতিবাদী। যে কোনো পরিস্থিতিতে এগিয়ে যেতে জানে। এ চরিত্র দিয়ে চেষ্টা করেছি সমাজের মেয়েদের অনুপ্রেরণা পাওয়া।
সিনেমার বাইরে এ ধরনের চরিত্র নতুন…
হ্যাঁ, এটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। হতে পারে সিনেমার মত অত বড় ক্যানভাস না। খুব বেশি প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ হয়নি। স্বল্প বাজেট ও কম সময়ের মধ্যে কাজটা করা। তবে খুব চমৎকার একটা গল্প বলা ও পরিবেশনা দেখানো হয়েছে।
নির্মাতা হিসেবে নূরুল আলম আতিককে কেমন লেগেছে?
ফিল্ম হলে বেশি করে বলতে পারতাম। অল্প সময়ে বুঝলাম কাজের প্রতি প্যাশনেট একজন মানুষ তিনি। কাজটা প্রচণ্ড ভালোবাসেন। পারফর্মারদের কাজের সময় স্বস্তিতে রাখার চেষ্টা করেন। উনি অনেক বেশি পরিশ্রমী। আশাপাশে যারা কাজের সঙ্গে জড়িত তাদেরও কমফোর্টে রাখার চেষ্টা করেন। এটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
নতুন কাজে ফিরবেন কবে?
আমি তো কাজ করছিই। ফেরাফিরির কিছু নাই। তবে এটা সত্য সব কাজ সময় নিয়ে করতে পছন্দ করি। ফোকাসটা আমার যেহেতু সিনেমা তাই একটু কম করা হচ্ছে। তবে ওয়েব সিরিজও করবো। সিনেমাটা আমার কাছে পরীক্ষা দেয়ার মতো, তার আগে পারফর্মার এবং ইউনিটের প্রস্তুতি নেয়া লাগে। আমি এ ধরনের কাজ করতে চাই যারা আমাকে সময় দিবে এবং কাজের প্রতি যত্নশীল হবে। আমি বিশ্বাস করি, কোয়ান্টিটি থেকে কোয়ালিটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চাইলেই বছরে তো তিন চারটি ছবি করতে পারি। এর চেয়ে একটা দুইটা ভালো ছবি করাই বেটার। সঙ্গে টিভিসি, ওয়েব সিরিজ করা যায়।
আপনার কাজের জনরা কি একটু অন্যরকম?
আমার কাজের জনরা মোটেও অন্যরকম না। যেখানে অভিনয়ের সুযোগ বেশি সেই কাজগুলো করতে চাই। আমি আসলেই অভিনেত্রী হতে চাই। আমি যেসব পরিচালকদের পছন্দ করি তাদের কাজগুলোতে অভিনয় করার জায়গা বেশি থাকে। তারা অভিনয় নির্ভর গল্প বলতে চান। আমি কখনই শুধু অফট্র্যাক জনরা কাজ করতে চাইনা। আমি কমার্শিয়াল ছবি, নায়িকার চরিত্রেও অভিনয় করতে চাই। একজন পারফর্মারের যে পাত্রে রাখা হবে সেই পাত্রের আকার ধারণ করতে হবে।
আপনার দ্বিতীয় ছবি ‘হাওয়া’ মুক্তি পাবে কবে? ওই ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিলো?
এ বছর করোনা না এলে ‘হাওয়া’ মুক্তি পেত। এখন ধীরে ধীরে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ করা হচ্ছে। শুটিং, ডাবিং সবই শেষ। আগামি বছর ভালো সময়ে ‘হাওয়া’ মুক্তি দেয়া হবে। ওভারঅল কাজ খুব ভালো হয়েছে। গল্পটাই ছিল সমুদ্রে নৌকার মধ্যে শুটিং। একমাস প্রায় নৌকায় ছিলাম। তার অনেক আগে থেকে যাওয়া-আসার মধ্যেই ছিলাম। সমুদ্রে শুটিং করা অনেক কঠিন। পানির সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের ছবির জন্য ওখানে পুরো শুটিং কেউ করেনি। একবার বিপদ সংকেত দেয়া হয়েছিল। নৌকা উল্টে যাওয়ার মতো অবস্থা ছিল। একমাসের বেশি সময় সেন্ট মার্টিন ছিলাম। কিন্তু টানা শুটিং করেছি একমাস।