চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অভিনেত্রীদের সঙ্গে পথচলা অনেক কঠিন: বাঁধন

সম্প্রতি যারা লাক্স তারকা আজমেরি হক বাঁধনের ফেসবুকে ঢুঁ মেরেছেন, তাদের নিশ্চয় অজানা নয় যে তিনি বিশ্বময় ঘুরে বেড়াচ্ছেন মেয়েকে নিয়ে। ছবিসহ বিস্তারিত প্রমাণ রেখেছেন নিজের টাইমলাইনে। আমেরিকার বিভিন্ন স্থান ঘুড়ে বেড়িয়েছেন। নিজের ফেসবুকে মার্কিন সাম্রাজ্যের বিখ্যাতসব জায়গায় ‘চেক ইন’ দিয়ে ছবি পোস্ট করছেন। ওইসব ছবি দেখে মা-মেয়ে দুজনেরই প্রশংসা করেছেন নিকটজন থেকে শুরু করে ভক্ত-অনুরাগীরাও। আমেরিকা ট্যুর শেষ করে বাঁধন দেশে ফিরলেন চলতি মাসের শুরুতেই। এরপর কথা বললেন চ্যানেল আই অনলাইনের সঙ্গে। জানালেন ভবিষ্যত পরিকল্পনা আর জীবন সঙ্গী নির্বাচনের বিষয়টিও…

নিউ ইয়র্ক কেন গিয়েছিলেন, কোনো কাজে?
না। বেড়াতে এবং মেয়ের ইচ্ছে পূরণ করতে। মেয়ের স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি ছিল। এই ফাঁকে ওকে নিয়ে বেড়িয়ে এলাম। ওর অনেকদিনের ইচ্ছে ডিজনিল্যান্ড, নায়াগ্রা দেখবে। এই দুটো জিনিসের জন্যই মূলত যাওয়া। সেটা পূরণ করলাম। এছাড়া স্ট্যাচু অব লির্বাটি, ওয়াশিংটন ডিসি, ক্যালিফোর্নিয়াসহ অনেক জায়গায় ওকে নিয়ে ঘুরলাম। ৩০ মে গিয়েছিলাম, ২ জুলাই ফিরেছি। ১ মাস ৩ দিনের ট্যুর!

অনেকিদন ধরে আপনাকে নতুন কোনো কাজ বা নাটকে দেখা যাচ্ছে না। কেন?
আমি পেশাদার অভিনেত্রী, কাজ তো করতেই হবে। তবে একটু ভালো কাজ করতে চাই। সেজন্য অপেক্ষা করছি। নতুন কাজের ব্যাপারে আপাতত তেমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ঈদুল আযহার পর শুরু করবো। এরমধ্যে ব্যক্তিগত কিছু কারণও আছে, তাই কাজ হাতে নেইনি। কাজ পাচ্ছি না, প্রচণ্ড আক্ষেপ হচ্ছে এমনটা মোটেও নয়।

অভিনেত্রী পরিচয়ের বাইরে আপনি একজন দন্ত্য চিকিৎসক। এই পেশায় সময় দেন?
আমার মেডিকেলের বেস্ট ফ্রেন্ডের সঙ্গে পার্টনারশিপে একবার চেম্বার খুলেছিলাম। শ্রম মেধা দেয়ার পর কিন্তু বিভিন্ন কারণে সামনে আগায়নি। সেখান থেকে শিক্ষা পেয়েছি। নতুন করে ব্যক্তিগতভাবে আবার চেম্বার খোলার ইচ্ছে আছে।

গত ঈদের নাটকগুলো দেখেছেন?
কিছু কাজ দেখেছি। তবে নিউ ইয়র্কে গিয়ে একটা বিষয় খুব ভালো লেগেছে। সেখানে বাঙালি যারা থাকে তারা বাংলা নাটকের ভক্ত। কখন কার নাটক যাচ্ছে, কার কাজ ভালো হচ্ছে, কারটা খারাপ হচ্ছে তাদের থেকে আমি আপডেট পেয়েছি। নাটক, মিডিয়া নিয়ে বাংলাদেশের মানুষও ওতটা জানেনা, যতটা প্রবাসীরা খোঁজ রাখে। এদেশ এবং এদেশের সবকিছুই নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা সবসময় ভাবে। তাদের আগ্রহের পরিধিটা বেশি। এই জিনিসটা আমাকে যেমন মুগ্ধ করেছে, তেমনি অবাকও হয়েছি।

‘দহন’ থেকে সরে যাওয়ার পর নতুন সিনেমায় কাজ নিয়ে কোনো ভাবনা কাজ করেনি?
সিনেমায় কাজের ভাবনা কাজ করেছে। কয়েকজন ভালো পরিচালকের সঙ্গে ভালো ভালো কাজ নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমি ধৈর্য্য নিয়ে বসে আছি। যে ধরণের কাজ চাই হয়তো অনেকেই বুঝতেই পারেনি সেটা। বেশীরভাগই মনে করে, আমি অনেক বাণিজ্যিক ছবি চাই। কিন্তু তা না, আমার বয়স অনুযায়ী কাজ চরিত্র চেয়েছি। আমি আমার সাথে মিলিয়ে চরিত্র চাই। সেই ধরণের কাজ বা চরিত্র হচ্ছে কিনা এখানে এটাও একটা প্রশ্ন। আমি তো প্রযোজক হতে পারছি না। তাই নিজের মতো করে গল্প চিন্তা করতে পারছি না। আমি টিনেজ নই। সিনেমার গল্পগুলোই এই টাইপের। আমার চিন্তার সঙ্গে পরিচালকের চিন্তা মিলছে না। আমি কথায় নয় কাজে বিশ্বাসী, অপেক্ষায় বিশ্বাসী এবং ধৈর্য্যতে বিশ্বাসী। এটা আমি আমার জীবনে সবক্ষেত্রে দেখেছি, প্রমাণ পেয়েছি।

শেষ প্রশ্ন, নতুন করে জীবন-সংসার সাজাবেন কবে, বা এরকম কি ভাবছেন?
পরিবারের সবাই চায় আমি সেটেল হই। আমারও মনে হয় সেটেল হওয়া উচিত। কিন্তু নতুন কারও আমার সঙ্গে পথচলা খুব কঠিন হবে। নায়িকা, অভিনেত্রীদের দেখে বেশিরভাগ মানুষ আবেগে আপ্লুত হয়ে যায়। ভাবে, নায়িকা বিয়ে করতে পারাটাই জীবনের বড় অ্যাচিভমেন্ট! যেটা আমার প্রাক্তন স্বামীও হয়তো মনে করেছিল। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে, অভিনেত্রীদের সঙ্গে পথচলা অনেক কঠিন। একজন সাধারণ মানুষ, যিনি সাধারণভাবে দিনযাপন করেন তার সঙ্গে আমার পথচলা সম্ভব নয়। আমার সাথে পথ চলতে পারে এমন মানসিকতা ও মনের দিক থেকে শক্তি যার আছে তার সঙ্গে সেটেল হতে চাই। তবে এমন মানুষ পাইনি এখনও। আবার বলছি, আমার সঙ্গে পথচলার জন্য মানসিক শক্তিশালী হতে হবে। আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। তাই যেই আসবে জীবনে সে যেন না ভাবে যে বউ হিসেবে সুন্দরী নায়িকা পেয়েছি আর কি লাগে জীবনে! তাকে বুঝতে হবে, সুন্দরী নায়িকা, অভিনেত্রীদের জীবন ওতো সহজ নয়।