চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

‘অভিনেতা-অভিনেত্রীদের টার্গেট টাকা, পরিচালকের টার্গেট খ্যাতি’

চিত্রনাট্যকার, কাহিনীকার ও সংলাপ রচয়িতা হিসেবে ঢাকাই ছবিতে পরিচিত নাম আব্দুল্লাহ জহির বাবু। এখন পর্যন্ত সাড়ে তিন শতাধিক সিনেমার গল্প, চিত্রনাট্য লিখেছেন তিনি। এরমধ্যে তার লেখা মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার সংখ্যা ২৯৩টি।

দীর্ঘ দিন সিনেমার সাথে যাপনের ফলে নির্মাতা, প্রযোজক কিংবা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মনোভাব তার ঠোঁটস্থ!

সুতীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণের ফলে এখন মুহূর্তেই ধরে ফেলতে পারেন প্রযোজক কী ধরনের গল্প চাইছেন, নির্মাতা কী চাইছেন; এমনকি অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কী ধরনের দৃশ্যে কাজ করতে চান- সেভাবেই সিনেমার গল্প, সংলাপ লেখেন তিনি।

নিজের অবস্থান নিয়ে খুশী থাকলেও সিনেমার গল্প, চিত্রনাট্য লেখায় নিজের স্বাধীনতার চেয়ে সার্বিক দিককে বেশী গুরুত্ব দিতে হয় বলে মনে করেন অসংখ্য হিট ছবির এই কাহিনীকার।

শাহরিয়ার নাজিম জয়ের উপস্থাপনায় চ্যানেল আইয়ের নিয়মিত আয়োজন ‘তিনশো সেকেন্ড’ এর একটি শো’তে সম্প্রতি বাবু বলেন, চলচ্চিত্রের লেখককে অনেককিছু চিন্তা করে লিখতে হয়। সিনেমার বিজনেস, গ্রহণযোগ্যতা, পাব্লিক ওপেনিয়ন, সোশাল মিডিয়ায় ইমপেক্ট, প্রযোজকের অর্থ লগ্নি ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা, পরিচালকের ভালোলাগা এবং আর্টিস্ট এর সেটিসফেকশন- সব মাথায় রেখে সিনেমার একটা গল্প লিখতে হয়।

নিজের মাটি কিংবা মৌলিক গল্পের চেয়ে ফর্মুলা গল্পই কেন বেশী লেখেন? এমন প্রশ্নে বাবুর সরল স্বাকীরোক্তি, ‘অনুদানের গল্প ছাড়া এই সুযোগ আমি খুব একটা পাই না। আমার এখানে প্রযোজক, পরিচালক যারা গল্প চাইতে আসেন- তারা কোনো না কোনো সিনেমা দেখে ইনফ্লুয়েন্স হয়ে আসেন। যেন সেরকম একটা সিনেমার গল্প লিখে দেই। একজন কমার্শিয়াল ফিল্ম রাইটারকে অবশ্যই এসব বিষয় প্রাধান্য দিতে হবেই।’

‘পাসওয়ার্ড’ ছবির এই চিত্রনাট্যকার বলেন, ‘আমাদের দেশে যারা সিনেমায় আসেন, সেটা অর্থলগ্নি করতেই হোক বা পরিচালনা করতেই হোক কিংবা হোক অভিনয় করতে- তাদের অর্ধেক লোক ভাবছেন প্রথম ছবিতেই তিনি হয়ে যাবেন সত্যজিৎ রায়, আর অর্ধেক লোক ভাবছেন তারা হয়ে যাবেন মালেক আফসারী। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের টার্গেট হয়ে যাচ্ছে টাকা, আর পরিচালকের টার্গেট খ্যাতি। সিনেমার কথাটা কেউ আর ভাবছে না।’

বাংলাদেশে উল্টো ফর্মুলায় সিনেমা বানানো হয় বলেও মন্তব্য করেন বাবু। তিনি বলেন, ‘এখানে দর্শকের চাহিদা-রুচিকে প্রথম প্রাধান্য দিয়ে সিনেমা বানানো হয়। অথচ ফিল্ম দিয়ে দর্শকের রুচি ঠিক করে দেয়া উচিত। আর এসব কারণেই আমাদের ফিল্ম উপরে উঠার চান্স খুব কম।’