ঝটপট করে বললে আরেকটি উড়ন্ত জয়ে দুই টেস্টের সিরিজে ঘরের মাঠে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেছে শ্রীলঙ্কা। আর খানিকটা গল্পের ঢংয়ে বললে?
দ্বিতীয় ইনিংসে ১৫৭ রানে যখন ষষ্ঠ উইকেট পড়ে গেল শ্রীলঙ্কার, মনে হচ্ছিল এবার বুঝি মাথাটা উঁচু থাকছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। কিন্তু তখনও যে ২২ গজে ছিলেন স্বাগতিকদের শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যানটি। সেই ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে আর আউট করতে পারেনি সফরকারীরা। অপরাজিত ১৫৫ রানের কাব্যিক এক ইনিংস খেলে জয়ের মঞ্চ গড়ে দেন ডানহাতি ব্যাটারই।
সেঞ্চুরিটা চতুর্থ দিনে তোলা। ম্যাচ আসলে তখনই শেষ! শেষদিনে কী ঘটতে চলেছে অনেকটা অনুমান করা যাচ্ছিল। উইন্ডিজের খেলাটা তো শুধু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই ছিল না, ছিল লঙ্কাদের মাটিতেও। গলে পঞ্চম দিনে চতুর্থ ইনিংসে কেউ ২৯৬ টপকে জয় তুলে ফেলবে, সেজন্য বিশেষ কিছুর চাইতেও বেশিকিছু করে দেখাত হতো।
রামেশ মেন্ডিস সেটা হতে দেবেন কেনো। মুরালিধরন নেই, হেরাথ নেই, এমনকি সিনিয়র মেন্ডিসও নেই- তাতে কী? লঙ্কানদের নতুন অস্ত্র তিনি, মেন্ডিস-২ তো আছেন, যার স্পিন রহস্য ভেদ করতে আরেকবার ব্যর্থ উইন্ডিজ। মাত্র চতুর্থ টেস্টে নামা ২৬ বর্ষী ডানহাতি অফস্পিনার দুই ইনিংস মিলিয়ে ১১ উইকেট নিয়েছেন।
১৬৪ রানের বিশাল জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুই টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে ছেড়েছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম টেস্টে এই গলেতে ১৮৭ রানের জয়ে এগিয়ে ছিল স্বাগতিকরা। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রে টানা দুই জয়ে বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে এখন করুনারত্নের দল।
প্রথম ইনিংসে ২০৪ করেছিল লঙ্কানরা। উইন্ডিজ করতে পারে ২৫৩। পরের ইনিংস ৯ উইকেটে ৩২৫ তুলে ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। ক্যারিবীয়দের সামনে লক্ষ্য আসে ২৯৬ টপকানোর।
পঞ্চম দিনে পাহাড়সম লক্ষ্যের পেছনে ছুটতে যেয়ে সবে ১৩২ রানে গুটিয়ে গেছে ক্যারিবীয়রা। প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ারসেরা বোলিং করে ৭০ রানে ৬ উইকেট নেয়া মেন্ডিস দ্বিতীয় ইনিংসে ঝুলিতে জমিয়েছেন ৬৬ রানে ৫ উইকেট।
টেস্টে দ্বিতীয়বার ইনিংসে ৫ বা ততোধিক উইকেট মেন্ডিসের। প্রথমবার দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ বা ততোধিক উইকেট। সিরিজে মোট ১৮ উইকেটের সঙ্গে ৪৩ রান, সিরিজসেরাও হয়েছেন।
অন্যদিকে ম্যাচসেরা আসলে যার হওয়ার কথা ছিল, যার ব্যাটে জয়ের মঞ্চ পায় শ্রীলঙ্কা, সেই ৩০ বর্ষী ডানহাতি ব্যাটার ধনঞ্জয়া ডি সিলভার ১১ চারের সঙ্গে ২ ছয়ে সাজানো অপরাজিত ১৫৫ রানের ইনিংসটিই পেয়েছে ম্যাচের মূল নায়কের স্বীকৃতি।