অপহৃত কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার আতাউর রহমান শাহীনকে খুঁজে বের করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। তারা বলছে প্রযুক্তিগত সহযোগিতাসহ নানা বিষয় সামনে রেখে তদন্ত এগিয়ে চলেছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকার আকিজ হাউজ অফিসের সামনের ফুটপাত থেকে তিন ব্যক্তি জোর করে আতাউর রহমান শাহীনকে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। এরপর থেকে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
নিখোঁজ শাহীনের স্বজনেরা বৃহস্পতিবার রাতে শিল্পাঞ্চল থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। পরে তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শুক্রবার দুপুরে শিল্পাঞ্চল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
অপহৃত শাহীনের শ্যালক রবিউল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, রাত আটটার দিক থেকেই তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। পরে আমরা অফিসে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ জানায় তিনি বের হয়ে গেছেন। রাত বেশি হলে আমরা নিকটস্থ হাসপাতাল, আত্মীয় স্বজনের বাসায় খোঁজ নেই। শেষ পর্যন্ত কোথাও না পেয়ে থানায় অভিযোগ করি।
শাহীনের পরিবার জানায়, তেজগাঁওয়ের বেঙ্গল গ্লাস কোম্পানিতে অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন তিনি। চাকরি সূত্রে কিংবা পারিবারিকভাবে শাহীনের কোন শত্রু ছিল না।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানা শাহীনের অফিসের সামনে সিসিটিভি’র ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে চ্যানেল আই অনলাইনকে জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৭টা ২২ মিনিটে শাহীন তার সহকর্মী ফারুককে নিয়ে অফিস থেকে বের হন। ফুটপাতে দাঁড়িয়ে তারা দুজনই মোটর রাইড শেয়ারিং কোম্পানির অ্যাপসে রিকোয়েস্ট দেন।
শাহীনের সহকর্মী ফারুকের রাইডার আগে চলে আসলে তিনি চলে যান এবং শাহীন ফুটপাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেসময় ফুটপাতের সামনে একটা মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। শাহীন ফুটপাতে দাঁড়িয়ে মোবাইল দেখছিলেন। এসময় তিনজন লোক এসে তার পেছনে দাঁড়ায়, আর মাইক্রোবাসটি আস্তে আস্তে তার সামনে চলে আসে। তখনও মোবাইল দেখছিলেন শাহীন। কিছু খেয়াল করেননি। মাইক্রোবাসটির ভেতর থেকে একজন দরোজা খোলে এবং শাহীনের পেছনে দাঁড়ানো তিনজন তাকে ধাক্কা দিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার দুপুরে জানতে চাইলে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী হোসেন খান চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, কিছুক্ষণ আগে শাহীনের অপহরণের বিষয়ে থানায় একটা জিডি করা হয়েছে। জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। আমরা প্রযুক্তিগত সহযোগিতাসহ নানান বিষয় সামনে রেখে তদন্ত কাজ করছি।
সিটিটিভির ফুটেজে অপহরণকারীদের কাউকে সনাক্ত করা গেছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে সবকিছু বলা সম্ভব নয়, গতকাল রাতেই আমরা খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে অফিসার পাঠিয়েছি। আমরা আলামত সংগ্রহ ছাড়াও নানা বিষয় নিয়ে তদন্ত করছি।
ঢাকার মিরপুর-২ নম্বরে বসবাস করতেন শাহীন, তিনি এক সন্তানের জনক।