নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলায় অভিযুক্ত ও নিম্ন-আদালতে দণ্ডপ্রাপ্তদের রাজনৈতিক ও পেশাগত পরিচয়ের কারণে এই মামলার রায় নিয়ে নানা শঙ্কা ছিল জনমনে। সব শঙ্কা আর গুজব পেছনে ফেলে বিজ্ঞ আদালত আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, কোম্পানি কমান্ডার মেজর (অব.) আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার (চাকরিচ্যুত) এম মাসুদ রানাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় দিয়েছেন। হাইকোর্টের দেয়া রায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দেশের ইতিহাসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এতজন বিপথগামী ও বরখাস্ত সদস্যের সাজা হবার ঘটনা এই প্রথম। তাদের কারণে এলিটফোর্স র্যাবের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল যা দেশেবিদেশে বিভিন্ন মানবাধিকার ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়েছে বিভিন্ন সময়। হাইকোর্টের রায়ের পর এর প্রতিক্রিয়ায় নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেছেন, ‘রায়ে আমি খুশি। উচ্চ আদালতে আজ অন্যায়ের বিচার পাইছি। এখন রায় দ্রুত কার্যকর চাই।’ সম্প্রতি পুরান ঢাকার দর্জি বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আট আসামির মধ্যে ছয়জনের সাজা কমিয়ে শুধুমাত্র দু্ইজনের ফাঁসির রায় বহাল রেখে হাইকোর্টের রায় নিয়ে কিছুটা আক্ষেপ ও হতাশা তৈরি হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাতখুনের মামলায় হাইকোর্টের রায়ে সে ধরণের কোনো অবস্থা তৈরি না হওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক বলে মনে হয়েছে। এই মামলার রায় দেশে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়াবে। অপরাধ করে কেউ যে পার পেয়ে যেতে পারে না– সেই সত্যকে আরো বেশি প্রতিষ্ঠিত করবে বলে আমাদের ধারণা। আইন ও আদালত তার নিজস্ব ধারায় চলে নির্যাতিত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করে, এটাই নিয়ম। এটা অব্যাহত থাকুক এই আমাদের প্রত্যাশা।