চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অন্য পাপিয়াদের কি হবে?

স্বামী ও দুই সহযোগীসহ র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) হাতে আটক হওয়ার পর যুব মহিলা লীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত নরসিংদী জেলা  সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়ার নানা অপকর্মের কথা একে একে ফাঁস হয়ে পড়ছে।

আটকের পর পরই সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে র‌্যাব নিশ্চিত করে অবৈধ নারী, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসার পাশাপাশি চাঁদাবাজি, তদবিরের এবং প্রতারণার সঙ্গে জড়িত পাপিয়া। আর এসব কাজের সব সময় পাশে থেকেছেন তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমন।

র‌্যাবের দাবি, মাসের পর মাস রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলের প্রেসিডেন্ট স্যুটে অবস্থান করে পাপিয়া অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও তদবির বাণিজ্য করে এসেছেন। সেই হোটেলে শুধু বারের খরচ দিয়েছেন দিনে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী দিয়ে নরসিংদী থেকে অসহায় মেয়েদের কৌশলে ধরে এনে বাধ্য করেছেন অনৈতিক ব্যবসায়।

এরই মধ্যে পাপিয়ার নামে থাকা রাজধানীর ২টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, নরসিংদী শহরে ২টি ফ্ল্যাট, ২ কোটি টাকা মূল্যের দুটি প্লট, চারটি বিলাসবহুল গাড়িসহ বিভিন্ন দেশের ব্যাংকে থাকা বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পেয়েছে র‌্যাব।

পাপিয়ার এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের খবর যখন সারাদেশের মানুষের আলোচনায়, তখনই তড়িঘড়ি করে নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগ সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে তাকে আজীবনের জন্য যুব মহিলা লীগ থেকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি। তার মানে এত এত অপকর্মের পরেও এতদিন চোখ বন্ধ করে সব না দেখার ভান করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব?

এর আগেও আমরা দেখেছি, ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ঢাকা দক্ষিণ মহানগর যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, জিকে শামীম, খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াসহ আওয়ামী লীগ বা এর সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতার নানা অপকর্মের কথা উঠে এসেছে। কিন্তু সেটা শুধু গ্রেপ্তার হওয়ার পর, আগে নয়।

তার মনে হলো, যখন কোনো নেতা বা নেত্রীর অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রকাশ্যে আসে; তখনই সংগঠন তাকে ঝেড়ে ফেলে দেয়। তার আগ পর্যন্ত সেসব জেনেও চুপ করে থাকে। কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না। নিশ্চিত করেই বলা যায় সারাদেশে এমন নেতা-নেত্রীর সংখ্যা কম নয়।

আমাদের প্রশ্ন- তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কি? আমরা মনে করি, যারা সংগঠনের নাম ব্যবহার করে এই ধরনের অপকর্ম করে যাচ্ছে; তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সংগঠনকেই তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। অন্যের হাতে ধরা পড়ার পর বিচারের উদ্যোগ না নিয়ে, সংগঠনগুলোর উচিৎ নিজেরাই সেইসব অপরাধীকে খুঁজে বের করে আইনের হাতে তুলে দেওয়া। তবেই সে তার দায় এড়াতে পারবে। না হলে এমন অপরাধের দায় নিতে হবে সংগঠনগুলোকেও।