চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Channelionline.nagad-15.03.24

অন্য আলোয় রবীন্দ্রনাথ

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন গীতাঞ্জলীর অনুবাদ নিয়ে বিলেতে যাচ্ছেন তখন সঙ্গে ছিলেন তার ছেলে রথীন্দ্রনাথ। রথীন্দ্রনাথের ব্রিফকেসে সেটার অনুবাদ রাখা। পথিমধ্যেই সেই ব্রিফকেস গেলো হারিয়ে। ভাগ্যিস পরের দিন অনেক চেষ্টা চরিত্র করে খুঁজে পাওয়া গেলো। তা না হলে গীতাঞ্জলির পরিণাম কি হতো? এসব গল্প অন্যরা যেভাবে জানতেন, রথীন্দ্রনাথের জানার ভঙ্গিটা নিশ্চয়ই এক ছিলো না। পুরো গল্পটাই তিনি জানতেন ভিন্নরূপে।

এসবই ভিন্নরকম সব গল্প উঠে এসেছে ‘আমার বাবা রবীন্দ্রনাথ’ বইটিতে। রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাবা রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে On the edges of time বইটি লিখেন। পরে তিনি নিজেই এর বাংলা অনুবাদ শুরু করেন। মোটামুটি এক-তৃতীয়াংশ সম্পন্ন করার পর তিনি মারা যান। তার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করেন শ্রী ক্ষিতীশ রায়। ‘পিতৃস্মৃতি’ নামে বইটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু মূল ইংরেজি বই এবং ‘পিতৃস্মৃতি’ দুটিই বাংলাদেশে দুর্লভ হওয়ায় মূল বইটি অনুবাদের সিদ্ধান্ত নেন কবির চান্দ।

বিগত তিন বছর ধরে বইটি নিয়ে কাজ করছেন কবির চান্দ। যেকোনো বই সবসময় ভালোলাগার বিষয়। আর সেই বইটি যখন হয় তিন বছরের প্রচেষ্টার ফসল তখন তার অন্যরকম ভালোবাসা কাজ করে। লেখক বলেন, এই বইটি ঠাকুর পরিবারের ভিন্ন একটি দিককে উপস্থাপন করবে। ঠাকুর পরিবারকে দেখা যাবে অন্য এক আলোয়। তাছাড়া রথীন্দ্রনাথ সম্পর্কেও নতুন দিক জানা যাবে। বিশেষ করে বইটির মুখবন্ধে আমি অন্য এক রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করেছি। 

কবির চান্দের এটি চতুর্থ বই। তবে অনুবাদ বই দ্বিতীয়। বইয়ের কথা বলতে গেলে পছন্দের বই হিসেবে প্রথমেই আসে ‘খুনি ও বুদ্ধিজীবী’ বইটির নাম। বলেন, ওটা একটা মৌলিক বই ছিলো। তাই অনেক পছন্দের জায়গা জুড়েও রয়েছে সেই বইটি। সেটি মনের অন্য একটি জায়গা জুড়ে রয়েছে। 

উপন্যাস নিয়ে বিশাল এক কাজ করার ইচ্ছে আছে এই লেখকের। তবে অনুবাদও চালিয়ে যেতে চান। স্বপ্ন দেখেন ম্যাকিয়াভেলী সমগ্র অনুবাদ করার। তারপরও বলেন, ইউলেসিসও অনুবাদ করতে চাই। কিন্তু ভাষা এবং উপস্থাপনার দিক থেকে সেটা এমন একটা বই যে অনেক সময় ও পরিশ্রম সাপেক্ষ ব্যাপার সেটা। 

পাঠকের কাছে এই লেখকের চাওয়া, পাঠক মূলত বই পড়ুক। তাতে সেটা বই কিনে হোক, ধার করে হোক বা অনলাইনে থেকে চুরি করে। বই পড়ার তো আর কোনো বিকল্প নেই। 

দেশের বাইরের অনেক সাহিত্যই আমরা পড়ছি। দেশের সাহিত্যকে দেশের বাইরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অনুবাদের কোনো বিকল্প নেই বলেই মনে করেন এই লেখক। তিনি বলেন, ইংরেজি যারা জানে তাদেরই মূলত এই কাজে এগিয়ে আসতে হবে। কারণ অনুবাদটা ঠিকঠাক না হলে সাহিত্যের রসই আর থাকবে না। কিন্তু যারা ইংরেজি জানে তাদের বাজার খুব চড়া। তাই আর্থিক মূলমান বিবেচনা করে এই কাজে আর অংশ নিতে চাননা। অন্যদিকে যারা করেন তাদের দ্বারা অনুবাদ ঠিকঠাক হয়না। সব মিলিয়ে সমস্যার সমাধান আর হচ্ছে কোথায়? 

কবির চান্দের লেখা ‘আমার বাবা রবীন্দ্রনাথ বইটি প্রকাশ করেছে অ্যাডর্ন পাবলিকেশন্স। পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার ৪৯৪-৪৯৭ নাম্বার স্টলে। বইটির দাম ৩০০ টাকা।