পবিত্র রমজান মাসের প্রথমদিন থেকেই জমজমাট রাজধানীর রেস্টুরেন্টগুলোর সেহরি পার্টি। সেহরির জন্য রাজধানীবাসীকে ডেকে তুলতে মহল্লায় মহল্লায় বের হয়েছিলো কাফেলা। সব মিলিয়ে বিপুল উৎসাহের পাশাপাশি নিকটজনদের সঙ্গে সেহরি করে সিয়াম সাধনার মাস শুরু করলেন রাজধানীবাসী।
এশার নামাজের পর তারাবি নামাজের মধ্যদিয়ে সিয়াম সাধনার মাস রমজানের রোজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপরই আসে রোজার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ অংশ সেহরি । সেহরির জন্য ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ডেকে তুলতে রাজধানীর বিভিন্ন মহল্লায় কাফেলা বের করা হয়।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মিললো কিশোর বয়সী ঠিক এমনই একদল কাফেলা। ১০-১২ জনের দলটি সেহরির সময় শুরু হতেই মহল্লাবাসীকে গানে গানে কখনও বা কবিতায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ডেকে তোলার কাজ করছিলো। কথা হলো তাদের সঙ্গে। তারা জানালো: প্রতিবছরের মতো এবারও তারা কাফেলার দায়িত্ব নিয়েছে। গত কয়েক বছর থেকেই এ কাজটি করে আসছে তারা। তাদের প্রত্যেকের প্রচেষ্টা থাকে, ঘুম থেকে উঠে প্রত্যেকেই যেনো সেহরি করতে পারে।
মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডে ছোট থেকে বড় হওয়া তৌহিদ জানালো, এখন নাকি কাফেলার সঙ্গি না হতে পারলে তার ভালো লাগে না! অন্যদের জাগিয়ে না দিতে পারলে সেহরিই যেন অসম্পূর্ণ থাকে।
গত কয়েক বছর ধরে রাজধানীর হোটেলগুলোতে সেহরি পার্টি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এবারও প্রথম দিন থেকেই বিশেষ আয়োজন করেছে রেস্টুরেন্টগুলো।
ব্যস্ত এই শহরের জ্যাম ঠেলে ইফতারে অন্যদের সঙ্গে অংশ নেওয়া থেকে সেহেরিকেই সুবিধাজনক সমাধান হিসেবে বেছে নিয়েছে রাজধানীবাসী। রেস্টুরেন্ট মালিকরা বলছেন: অন্যান্য সময়ের তুলনায় সেহেরিকে মাথায় রেখে বরাবরই বিশেষ আয়োজন করে থাকেন তারা। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি।
পরিবার পরিজন বা বন্ধুদের নিয়ে হেটেলে প্রথমদিনের সেহরি সেরেছেন অনেকেই। ধানমণ্ডি, মোহাম্মদপুর, পুরান ঢাকা ঘুরে দেখা গেলো সেই চিত্রই। কেউবা এসেছেন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে। মধ্যরাতে রান্না-খাওয়াটা অনেকের কাছে কষ্টকর হওয়ায় রেস্টুরেন্টকেই সমাধান হিসেবে বেছে নিয়েছেন ব্যাচেলররা।
শুধু ব্যাচেলরই নয় স্ত্রী-সন্তান কেউ নিয়ে এসছেন কেউ কেউ। রমজানের প্রথমদিনটির সেহরি প্রিয়জনের সঙ্গে বাইরে খেতেই পছন্দ করেন তারা। বাড়ির লোকের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন খাবার।
এতো গেলো, ব্যাচেলর আর স্বামী-স্ত্রীর কথা। এর বাইরে রয়েছে অনেকে মিলে গেটটুগেদারের আয়োজন। জ্যামের শহরে অনেকের সঙ্গে একসঙ্গে দেখা করার সুযোগ না থাকলেও সেহেরিকে উপলক্ষ করে এক হয়েছেন সবাই।
সেহরি পর ফজরের আজানের আগে রোজা রাখার নিয়ত করে সিয়াম সাধনা শুরু করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।