মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি, মুমিনুলের স্বরূপে ফেরা দেড়শ পেরোনো ইনিংস, মাহমুদউল্লাহর আট বছর পর টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ, মিরাজের ব্যাটে ভরসার ইঙ্গিত রাখা ফিফটির সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়া, তাইজুলের একটার পর একটা উইকেট তুলে নেয়া; এমন অনেক প্রাপ্তির টেস্টে দুর্দান্ত এক জয়ে সিরিজ ড্র করেছে বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ২১৮ রানের বিশ্বাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহর দল প্রথম টেস্টে হেরে পিছিয়ে ছিল। শেষঅবধি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ১-১এ ড্র করল টাইগাররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ-৫২২/৭ ও ২২৪/৬ (দুবারই ইনিংস ঘোষণা), জিম্বাবুয়ে-৩০৪ ও ২২৪
৪৪৩ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নামা জিম্বাবুয়ে পঞ্চম দিনের চা-বিরতির আগেই গুটিয়ে যায় ২২৪ করে।
বাংলাদেশ সবশেষ টেস্ট জিতেছিল ২০১৭ সালের এপ্রিলে, মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। পরের আট ম্যাচের সাতটিতেই হার। একটি টেস্ট হয় ড্র। ৮ ম্যাচ পর সেই মিরপুরেই টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা।
মেহেদী হাসান মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংস থেকে নিয়েছেন ৫ উইকেট। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করেছেন ব্রেন্ডন টেলর। ১০৬ রান করে অপরাজিত থাকেন এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান। প্রথম ইনিংসে খেলেছিলেন ১১০ রানের ঝলমলে ইনিংস।
২ উইকেটে ৭৬ রান নিয়ে পঞ্চম দিন শুরু করে জিম্বাবুয়ে। শুরুতে উইকেট পেতে সংগ্রাম করতে হয় স্বাগতিক বোলারদের। দিনের নবম ওভারে শন উইলিয়ামসকে (১৩) বোল্ড করে প্রথম আঘাত হানেন মোস্তাফিজুর রহমান। ঢাকা টেস্টে এটিই একমাত্র উইকেট কাটার মাস্টারের। জিম্বাবুয়ের রান তখন ৯৯।
পরের জুটিটি টিকে থাকে ৯ ওভার। তাইজুল ইসলাম যখন নিজের বলেই ফিরতি ক্যাচে সিকান্দার রাজাকে (১২) ফেরান, জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ তখন ১২০।
সেখান থেকে একপ্রান্ত আগলে খেলা ব্রেন্ডন টেলরের সঙ্গে উইকেটে জমে যান পিটার মুর। অপেক্ষা বাড়ে বাংলাদেশের। ২৪ ওভার ব্যাটিং করে মুরের বিদায়ে বিচ্ছিন্ন হয় প্রতিরোধ গড়া জুটি। মুর ৭৯ বলে ১৩ রান করে ফেরেন মিরাজকে উইকেট দিয়ে। শর্ট লেগে দারুণ ক্যাচ নেন ইমরুল কায়েস।
ওই জুটি ভাঙার পর ম্যাচের ইতি টানতে অপেক্ষা করতে হয়নি। চাকাভা (২) রানআউট হয়ে ফিরলে জয়ের পথ সুগম হয়। ত্রিপানো ও মাভুতাকে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে পাঠান মিরাজ। জার্ভিসকে লংঅনে ক্যাচ বানিয়ে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন এ অফস্পিনার।
তাতে টানা তিন ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া তাইজুলকে নিজের গড়া রেকর্ড ভাঙতে দিলেন না মিরাজ। তাইজুল জিম্বাবুয়ের শেষ ইনিংসে নিয়েছেন দুটি উইকেট। আর দুটি উইকেট পেলেই দুই ম্যাচের সিরিজে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারের দেশিয় কীর্তি গড়তেন তাইজুল। সিরিজে ১৮ উইকেট নিয়ে শেষ করলেন এ বাঁহাতি স্পিনার।
২০১৬ সালে নিজের অভিষেক সিরিজে (২ ম্যাচ) ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯ উইকেট নিয়ে এনামুল হক জুনিয়রকে (১৮) টপকে যান মিরাজ। তাইজুল সে রেকর্ড ভাঙার সম্ভাবনা জাগালেও মিরাজকে স্পর্শ করতে পারলেন না শেষপর্যন্ত।