সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আজ রোববার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচিতে হামলা করেছে ছাত্রলীগ। এসময় শিক্ষকদের কাছে থাকা ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়, তাদের গায়ে হাত তুলে লাঞ্ছিত করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, ‘দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আজ সকাল ৮টায় তার ভবনের সামনে পূর্ব ঘোষিত একটি কর্মসূচি ছিলো। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে শিক্ষকরা ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেসময় উপাচার্যের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী এসে শিক্ষকদের কাছ থেকে ব্যানার কেড়ে নেয়। দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষকদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
ছাত্রলীগের ওই হামলায় লাঞ্ছিত হয়েছেন ড. জাফর ইকবালের সহধর্মিনী ড. ইয়াসমীন হক, অধ্যাপক মো. ইউনূছ, দীপেন দেবনাথ, সৈয়দ সামসুল আলম, মো. ফারুক উদ্দিন, মোস্তফা কামাল মাসুদ, মোহাম্মদ ওমর ফারুকসহ কয়েকজন শিক্ষক।
লাঞ্ছিত হওয়া শিক্ষকরা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো পরিবেশ নেই। ছাত্রলীগের এতো বড় সাহস যে শিক্ষকদের গায়ে হাত দেয়। ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। ভিসি নিজেও শিক্ষকদের গায়ে হাত দিয়েছে। ছাত্রলীগের এই হামলায় অনেক শিক্ষক আহত হয়েছেন। নারী শিক্ষকও বাদ যায়নি তাদের হাত থেকে। প্রফেসর ইয়াসমীন হককে ঘুষি মারা হয়েছে। এই আন্দোলনে কোনো শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হয়নি বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
তবে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করার ঘটানাকে অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ। তারা দাবি করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হওয়ায় সেখানে গিয়েছিলো। আমরা কোনো শিক্ষককে ধাক্কা দেইনি বা লাঞ্ছিত করিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. আমিনুল হক বলেন, ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে; সেটা আগে আমি জানবো, বুঝবো তারপর পদক্ষেপ নিতে পারবো। এই মুহুর্তে শিক্ষার্থীরা তাদের পড়াশুনা নিতে হতাশায় রয়েছে। আর শিক্ষকরা আমার কাজে বাধা দিতে এখানে এসেছিলো। আমার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় আটকিয়ে রেখেছিলো। হয়তো সেটি দেখেই শিক্ষার্থীরা কিছু করেছে। তবে যাই করে থাকুক না কেনো সেটা ঠিক হয়নি।
তিনি বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই রাষ্ট্রপতি আমাকে চারবছরের জন্য নিয়োগ দিয়েছে। আমার এই দায়িত্ব যেদিন শেষ হবে সেইদিনই চলে যাবো।
ঘটনার সময় দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা রোকন উদ্দিন বলেন, ঘটনার জন্য কর্তৃপক্ষ যা হয় সিদ্ধান্ত নেবেন। পুলিশের কাজ হলো আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করা। আমরা সেটাই দেখছি। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক।