অস্ট্রেলিয়া সফরে শতভাগ সাফল্য নিয়ে ফিরেছে বিসিবির হাই-পারফরম্যান্স (এইচপি) দল। ডারউইনে নর্দান টেরিটরি আমন্ত্রিত একাদশের সঙ্গে পাঁচ ওয়ানডে, একমাত্র তিনদিনের ম্যাচে জয় পেয়েছে বিজয়-লিটনরা। দেশে ফিরে উপভোগ করার পাশাপাশি অজি সফরকে অভিজ্ঞতা অর্জনের ক্ষেত্রই বললেন দলটির অধিনায়ক লিটন দাস।
ভিন্ন কন্ডিশনের চ্যালেঞ্জ জয় করে অভিজ্ঞতা অর্জন ছিল সফরের মূল লক্ষ্য। সে লক্ষ্য কতটা পূরণ হল, কতটুকু শিখলেন তরুণ ক্রিকেটাররা, অভিজ্ঞতাটা আগামীতে কতটুকু কাজে লাগবে- এসব নিয়ে বুধবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন লিটন।
বাংলাদেশের কোনও দলের হয়ে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
লিটন: খুব ভালো একটি অভিজ্ঞতা ছিল। খেলোয়াড় হিসেবেই সব সময় খেলি। এবার একটা বাড়তি দায়িত্ব ছিল, দল পরিচালনা করা। এই জিনিসটায় পছন্দেরও একটা ব্যাপার থাকে। অনেকের কাছে অধিনায়কত্ব করা মজার একটি বিষয়। আমি এবার এটাকে উপভোগ করার চেষ্টা করেছি।
দুর্দান্ত ফর্মে থাকার পরও ব্যাটিংটা প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। নিজের পারফরমেন্সে কতটা সন্তুষ্ট?
লিটন: আমরা আরেকটু ভালো খেলতে পারতাম। তিনশ’র বেশি কেবল একটি ম্যাচেই করেছি আমরা। সুযোগও বেশি পাইনি। পরে ব্যাটিং করেছি দুই-তিনটি ম্যাচে। যদি সুযোগ হত এবং আরও কয়েকটা সেঞ্চুরি হলে আরও ভালো হত। আমার ব্যাটিংয়ে আরেকটু ভালো করার জায়গা ছিল। কিন্তু পারিনি। ফর্ম সব সময় থাকে না। কন্ডিশন আমাদের অনুকূলে ছিল না। প্রথম দিন যাবার পরই আমাদের একটা অন্যরকম অনুভূতি এসেছে। এখানকার আর ওখানকার আবহাওয়া ভিন্ন। প্রথম ম্যাচটি আমরা অনেক কষ্ট করে জিতেছি।
কন্ডিশনের কারণে কেমন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে?
লিটন: সাধারণত বড় কোনও টু্র্নামেন্ট কিংবা সিরিজ খেলতে গেলে প্রস্তুতির অনেক সময় পাওয়া যায়। ভ্রমণ করলে বিরতি থাকে। প্রস্তুতির সময় থাকে। আমরা এবার ওরকম কিছু পাইনি। আমরা ১৬ ঘন্টার একটা ট্রানজিটে ছিলাম। পানিও সেভাবে খাওয়া হয়নি। ডি-হাইড্রেশন হয়েছিল কম-বেশি সবারই। ওখানে যাওয়ার পর প্রথমেই হার্ড সেশন অনুশীলন হয়েছে। পরেরদিনই খেলা খুব কঠিন। আমরা টানা ক্রিকেটও খেলেছি। তিন দিন খেলেছি, মাঝে একদিন বিরতি। আমরা আসলে গিয়েছিলাম কন্ডিশনিং ক্যাম্পে। ঠিক সেভাবেই হয়েছে সবকিছু।
ওই কন্ডিশনে খেলতে নিজেকে কতটুকু বদলাতে হয়েছে? টেকনিক কিংবা মানসিকতায় বদল আনতে হয়েছে কি?
লিটন: মানসিকতা এখানে সব থেকে বড় জিনিস। বিগত সময়ে যেসব জায়গায় খেলছিলাম, বিকেএসপির মাঠে খেলা হয়েছে প্রিমিয়ার লিগে, মাঠগুলো ছোট ছোট। ওখানে অনেকগুলো বড় মাঠ। তখন একটা ব্যাপার চলে আসে যে, আমি এই শটটা মারবো কি মারবো না। বাতাস তো থাকেই। আপনি এদিক গেলে মনে হবে বাতাস ওদিক থেকে আসছে। আবার আরেকদিক গেলে মনে হবে বাতাস অন্যদিকে। বাতাস ঘুরতে থাকে মাঠের ভিতর। এগুলো ব্যাটসম্যান কিংবা বোলারদের সমস্যা করে। এ জিনিসগুলো খাপ খাওয়ানোর বিষয় ছিল।
এই অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কতটুকু কাজে দেবে?
লিটন: এই জিনিসটা অনেক কাজে আসবে। বিশেষ করে আমার জন্য। পরবর্তীতে খেলতে গেলে বোঝা যাবে কোন জায়গা দিয়ে কীভাবে খেলা দরকার।
অস্টেলিয়ায় সবসময় ক্যাম্প করার সুযোগ হয় না। সুযোগটা পেয়ে আপনি কতটা সন্তুষ্ট?
লিটন: আমি ওখানে গিয়েছিলাম কিছু শেখার জন্য। আবহাওয়া কেমন, উইকেটটা কেমন, উইকেট রিড করা যায় নাকি- এগুলোতেই আমার মেইন ফোকাস ছিল। সবারই কম-বেশি এটাই লক্ষ্য ছিল। যখন খেলতে নামলাম, সবাই চিন্তা করেছে জেতার জন্য। আমরা জিতেছিও। ব্যক্তিগতভাবে যখন চিন্তা করবেন, দেখবেন- বিসিবি ওখানে একজন খেলোয়াড়কে পাঠিয়েছে কন্ডিশনিং ক্যাম্প বোঝার জন্য। এরকম অনেকেই চিন্তা করেছে কন্ডিশন ক্যাম্প বোঝার। অনেক কিছুই শিখছি। ওই উইকেট আর আমাদের উইকেট অনেক ভিন্ন, এটা কেবল খেললেই বোঝা যায়।
এইচপির ক্যাম্প আবার শুরু হয়েছে। জাতীয় দলের ক্যাম্পও চলছে। সামনে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ। দলে ফেরা নিয়ে কী ভাবছেন?
লিটন: আসলে জাতীয় দল নিয়ে আমার মাথায় এখন কোনও কিছুই নেই। আমি গিয়েছিলাম এইচপির হয়ে শেখার জন্য।