আগরতলা মামলায় বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই তাঁর মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে থাকে ছাত্রসমাজ। ১১ দফা দাবি তুলে ধরে তারা। ছাত্রদের পক্ষে লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে এলে আন্দোলন রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে; মুক্তি পান বঙ্গবন্ধু, পতন হয় আইয়ুব সরকারের।
১৯৬৮ সালে আগরতলা মামলায় গ্রেপ্তার বঙ্গবন্ধুসহ অন্যদের মুক্তির দাবিতে শুরু থেকেই সোচ্চার ছিল ছাত্র সংগঠনগুলো। পাকিস্তান সরকার শেখ মুজিবুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার পরিকল্পনা করছে এমন সংবাদে ছাত্রদের আন্দোলনে যোগ দেয় সাধারণ মানুষ।
রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ ১১ দফা দাবি নিয়ে ৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ডাকসুসহ ৪টি ছাত্রসংগঠন মিলে গঠিত হয় সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে ১৭ জানুয়ারি ছাত্রছাত্রীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে যে আন্দোলন শুরু করে ধীরে ধীরে তা রূপ নেয় গণজাগরণে।
২০ জানুয়ারি ছাত্রদের মিছিলে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন ছাত্র ইউনিয়ন নেতা আসাদুজ্জামান। আসাদের রক্তমাখা শার্ট নিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়ে আইয়ুবের লৌহ শাসন তছনছ করে ২৪ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থান ঘটায় লাখো জনতা। সেদিনও ঢাকায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন মতিউর, মকবুল ও রুস্তম, আর ময়মনসিংহে আলমগীর মনসুর মিন্টু। ৬৯ এর উত্তাল দিনগুলোতে ছাত্রসমাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন তখনকার তরুণ ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ।
১৪ ফেব্রুয়ারি সার্জেন্ট জহুরুল হককে জেলের ভেতর হত্যা করা হলে প্রতিবাদে আবারো ফেটে পড়ে সাধারন মানুষ। ১৮ ফেব্রুয়ারি শহীদ হন রাজশাহী বিশ্বদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক শামসুজ্জোহা। ২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবসে পল্টনের জনসমুদ্র থেকে শেখ মুজিবসহ রাজবন্দীদের মুক্তির জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়।
পরদিন দুপুর ১২টায় বঙ্গবন্ধু ও আগরতলা মামলার আসামিসহ সকল রাজবন্দীকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার।
একের পর এক কার্ফু উপেক্ষা করে শেখ মুজিবকে মুক্ত করার জন্য ঊনসত্তরে জনতার যে সমুদ্র সেদিন রাজপথে নেমেছিল তারাই ৭০’র নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে গড়ে তোলে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট।
বিস্তারিত দেখুন ভিডিও রিপোর্টে: