ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টুয়েন্টি ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৩ রান তুলেছে বাংলাদেশ। সেন্ট কিটসে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই তামিম ও সৌম্যর উইকেট হারিয়ে বসা বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যানদের ছোট ছোট অবদানে।
কিন্তু লোয়ার মিডলঅর্ডারে কেউ ঝড়ো ইনিংস খেলতে না পারায় দেড়শ পাড়ি দিতে পারেনি বাংলাদেশ। ১১ ওভারে ১০০ রান তুলেও ১৪৩-এ থামতে হয়েছে সফরকারীদের। মাহমুদউল্লাহ ৩৫, লিটন ২৪, সাকিব ১৯, মুশফিক ১৫, আরিফুল ১৫ ও মিরাজ করেন ১১ রান।
জুটি গড়ে না ওঠায় লড়াকু পুঁজি পায়নি বাংলাদেশ। পুরো ইনিংসে উল্লেখ করার মতো জুটি ৪৩ রানের। পঞ্চম উইকেটে সাকিব-মুশফিক যোগ করে রানরেট আটের উপরে রাখেন।
পিচ রিপোর্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক ক্রিকেটার জেফরি ডুজন জোর দিয়েই বলছিলেন ওয়ার্নার পার্কের আজকের উইকেট ব্যাটসম্যানদের। টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট মানেই তো ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিং। সেটি অবশ্য বাংলাদেশ করতে পারেনি জুটি না হওয়ায়।
পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে বাংলাদেশ। রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। দুই ওপেনারই আউট হন প্রথম বল মোকাবেলা করতে গিয়ে। পরে লিটন দাসের সঙ্গে জুটি বেধে প্রতিরোধ গড়েন সাকিব আল হাসান।
২১ বলে ২৪ রান করে লিটন সাজঘরে ফেরার পরের বলেই আউট হন সাকিব। অধিনায়ক করেন ১০ বলে ১৯ রান। পাওয়ার প্লে-র শেষ ওভারে পর পর দুই বলে উইকেট তুলে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগান কিমো পল।
খেলা শুরুর খানিক আগেই বৃষ্টির হানা দেয় সেন্ট কিটসে। বৃষ্টি থেমে ম্যাচ শুরু হয়েছে নির্ধারিত সময়ের ৩ মিনিট পর। ওয়ার্নার পার্কের দর্শকরা মধ্য মাঠে চোখ রাখতে না রাখতেই আউট তামিম! ওয়ানডে সিরিজে যে ওপেনার ভুগিয়েছে স্বাগতিকদের সেই ব্যাটসম্যানের উইকেট বিলিয়ে আসা যেন ক্যারিবীয় দর্শকরাও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
অফস্পিনার অ্যাসলে নার্সের প্রথম বল হাত থেকে ছাড়ার আগেই ডাউন দ্য উইকেটে এগিয়ে আসেন তামিম। এ বাঁহাতির গতিবিধি বুঝেই বল টেনে দেন নার্স। রামদিনের হাতে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন। তিনে নামা লিটন দাস প্রথম বলে কাট শটে মারেন চার।
সিঞ্চেলস নিয়ে প্রান্ত বদলাতেই সৌম্য সরকার ফেরেন সাজঘরে। জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকে দেখেন নিজের বোল্ড হওয়া। অদ্ভূতভাবে দুই উইকেট হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
হওয়ায় লজ্জার রেকর্ডে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ। টি-টুয়েন্টিতে এ নিয়ে সর্বোচ্চ তিনবার ‘ডাক’ মারলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনারই।
টি-টুয়েন্টি সংস্করণে দুই ওপেনারই রান না করে আউট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ১৩বার। যার মধ্যে সর্বোচ্চ তিনটি বাংলাদেশের দখলে। নেদারল্যান্ডসের ক্ষেত্রে এটি দুইবার। একবার করে বাকি আট দলের।
বাংলাদেশের প্রথমটি ২০১০ টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে রান না করেই সাজঘরে ফিরেছিলেন ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ আশরাফুল।
পরেরটি ৬ বছর পর দেশের মাটিতে ২০১৬ সালের এশিয়া কাপে। মিরপুরে মোহাম্মদ মিঠুন ও সৌম্য সরকার আউট হন শুন্য রানে। বুধবার সেন্ট কিটসে তৃতীয়টিতেও নাম লেখান সৌম্য।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে চড়ে ১১ ওভারেই ১০০ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। তখন উইকেট ৫টি। আরিফুল হক (১৫) আউট হওয়ার পরই শুরু হয় আসা-যাওয়ার মিছিল। কেসরিক উইলিয়ামস চার উইকেট তুলে বাংলাদেশকে আটকে রাখেন দেড়শ’র মধ্যে।