সংকট সময় কেউ হন সুযোগসন্ধানী, কেউ মানবিক! করোনার এই দুঃসময়েও দুই পক্ষের উদাহরণ টানা যাবে। তবে সামগ্রিকভাবে মন্দের চেয়ে ভাল’র পাল্লায় বেশি। মানুষের দুঃসময়ে মানুষকেই এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। তেমনি মানবিক একটি উদাহরণ তৈরি করলো ‘ব্যাচেলর ঈদ’ নাটকের টিম!
‘ব্যাচেলর ঈদ’ টিমের ইচ্ছে ছিল নাটকটি যদি কোটি দর্শক দেখে তবে ধুমধাম আয়োজন করে ঢাকার বড় কোনো রেস্টুরেন্টে ‘সাকসেস পার্টি’ হবে! গত বছর ঈদুল আযহায় প্রচার হওয়া মোশন রকের ব্যানারে নির্মিত এ নাটকটি সম্প্রতি কোটি ভিউস অতিক্রম করেছে ঠিকই, কিন্তু টিমের সদস্যরা করোনাভাইরাসের স্থবির অবস্থার কারণে ‘সাকসেস পার্টি’ না করে বরং ওই অর্থ দিয়ে রাজধানীর নিম্ন আয়ের ৬ পরিবারের এক মাসের ভরণপোষণ দিয়েছেন।
নাটকটির ৫ অভিনেতা চাষি আলম, মিশু সাব্বির, তৌসিফ মাহবুব, শামীম হাসান সরকার, জিয়াউল হক পলাশ ও নির্মাতা কাজল আরেফিন অমি প্রত্যেকেই তাদের নিজ এলাকার একজন করে রিক্সাওয়ালার হাতে ‘সাকসেস পার্টি’র জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ভাগ করে তুলে দিয়েছেন।
নির্মাতা অমি চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, একজন রিক্সাওয়ালার একমাসের সংসার খরচা যা হয়, সেই পরিমাণ অর্থ দিয়েছি। এর বিণিময়ে প্রত্যেক রিক্সাওয়ালা কথা দিয়েছেন জীবিকার অর্থ যেহেতু নিশ্চিত হয়েছে তাই আগামী একমাস ঘর থেকে বের হবেন না তারা।
‘সাকসেস পার্টি’র অর্থ নিন্মবিত্ত কিছু মানুষের মধ্যে বিতরণ করে তাদের পাশে থাকার চেষ্টার এই পরিকল্পনা এসেছে ‘ব্যাচেলর ঈদ’ নাটকের প্রযোজক মাসুদ উল হাসানের কাছ থেকে।
পরিচালক কাজল আরেফিন অমি বলেন, মাসুদ ভাইয়ের আইডিয়ায় এটা আমাদের ‘ব্যাচেলর ঈদ’ টিমের অন্যরকম সেলিব্রেশন। যে অবস্থা যাচ্ছে আগে এমনটা কখনোই ফেস করিনি। নিজেরাও ঘর থেকে বের হতে পারছিনা। হুট করে প্ল্যান করেছি। ৬ জন রিক্সাওয়ালার ১ মাসের পরিবার চালানোর খরচ দিয়েছি আমরা। এর ফলে ওই ৬টি পরিবার অন্তত একমাস বাসায় নিরাপদে থাকবে।
পরিচালক কাজল আরেফিন অমি থাকেন ধানমন্ডির সংকর এলাকায়। তিনি তার এলাকার একজন রিক্সাওয়ালাকে অর্থ দিয়েছেন। জনপ্রিয় এ নির্মাতা বলেন, চাষি ভাই থাকেন বনানী, মিশু সাব্বির মিরপুর, তৌসিফ ধানমন্ডি-৭, শামীম মিরপুর ডিওএইচএস এবং পলাশ নাখালপাড়া এলাকার বাসিন্দা। প্রত্যেকেই অনলাইনে যোগাযোগ করে তারপর একইদিনে নিজ নিজ এলাকায় একজন করে রিক্সাওয়ালাকে সাহায্য দিয়েছি।
কাজল আরেফিন অমি বলেন, যারা মানুষের কাছে পরিচিত মুখ, তারা যখন সাহায্যে এগিয়ে আসে সমাজের সামর্থ্যবান মানুষ এতে উৎসাহিত হয়ে নিজের অবস্থান থেকে পাশের মানুষকে সাহায্য করে। এই চিন্তা থেকে মানুষকে সাহায্য করে একটি ভিডিও বানিয়েছি কিন্তু যাকে সাহায্য দিয়েছি তার পরিচয় দেইনি। এ সাহায্য করাটা যদি কেউ শো-অফ মনে করেন তারপরেও ওই ৬ পরিবারের সদস্যরা একমাস খাবারের চিন্তা মুক্ত থাকবেন। সামান্য শো-অফের ফলে যদি কিছু মানুষ ভালো থাকে তাহলে এতে দোষের কিছু দেখি না। যাদের পাশে দাঁড়িয়েছি তারা ভালো থাকলেই আমাদের স্বার্থকতা।