চ্যানেল আই অনলাইন
হৃদয়ে বাংলাদেশ প্রবাসেও বাংলাদেশ
Nagod

যে কষ্ট করছি, তা টাকা দিয়ে মূল্যায়ন হয় না: ফারহান

ঈদে আসছে ফারহান অভিনীত ৬ থেকে ৭টি নাটক

ভিউ প্রতিযোগিতায় বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করা যেখানে কঠিন, সেখানে একের পর এক নতুন নতুন চরিত্রে হাজির হয়ে তাক লাগিয়ে দিচ্ছেন মুশফিক ফারহান। দর্শকের মতে, আরজে হিসেবে কথার জাদুতে মুগ্ধ করা ছেলেটি এখন অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ করছেন! সম্প্রতি শেষ করলেন মাহমুদ মাহিনের পরিচালনায় ‘হাঙর’ নাটকের শুটিং। কক্সবাজারের বিস্তৃর্ণ অঞ্চলে রোদে পুড়ে ঢেউয়ের সঙ্গে ছয় দিনের লটে শুটিং শেষ করেন ফারহান। বর্তমানে আলোচনার তুঙ্গে থাকা এ অভিনেতার সাথে কথা হয় চ্যানেল আই অনলাইনের…

‘হাঙর’ নাটকে জেলে চরিত্রের জন্য বেশ পরিশ্রম করেছেন মনে হচ্ছে! সেই গল্পটা একটু শুনি…
প্রচুর রোদ আর গরম বালির মধ্যে শুটিং করেছি। কক্সবাজার এই সময়ে কেমন উত্তাপ সেটা বলে বোঝাতে পারবো না। জায়গাটা মোটেও শুটিং উপযোগী না। প্রথম দৃশ্যটা করতে গিয়েই পানির স্রোতের ঘূর্ণির মধ্যে পড়তে হয়েছে। একটু উনিশ-বিশ হলেই আমি পানিতে তলিয়ে যেতাম। পরিচালক মাহিন ডামি ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি জানি, দর্শক এখন খুব সচেতন। তারা ধরে ফেলতে পারতো। দৃশ্যটি প্রাণবন্ত করার জন্য রিস্ক নিয়ে আমিই করি। কানের মধ্যে বালি ঢুকেছে, শরীরে ফোসকা পড়ার মতো অবস্থা। সত্যি বলতে, যে পরিমাণ কষ্ট করেছি সেটা এই পারিশ্রমিকে মূল্যায়ন করা যায় না। আমার সঙ্গে পরিচালক, সহশিল্পী থেকে প্রডাকশনে যে ছেলেটা কাজ করে সেও যে পরিমাণে কষ্ট করেছে, সেই কষ্ট আসলে টাকা দিয়ে মূল্যায়ন হয় না।

Bkash July

এই চরিত্রের প্রস্তুতি কেমন ছিল?
সমুদ্রের জেলের চরিত্র আগে করিনি। যে ধারণা নিয়ে শুটিংয়ে গিয়েছিলাম, যাওয়ার পর ঘটেছে উল্টো। শুরুতে কস্টিউম ছিল লুঙ্গি শার্ট, ছেঁড়া টি-শার্ট। কিন্তু ওখানে গিয়ে দেখলাম বেশীরভাগ ছেলে লুঙ্গির নিচে হাফ প্যান্ট পরে, চুল ব্রাউন কালার।  শুটিংয়ের আগে জেলে পল্লী ঘুরে ঘুরে সবকিছু দেখি। ১৪ কিংবা ৪০; যে কোনো বয়সের বেশীরভাগ জেলেদের দেখেছি পান খায়। ওখান থেকে কালারফুল বা বিধঘুটে হাফ প্যান্ট কিনে নেই যেটা শুধু জেলে পল্লীতে পাওয়া যায়। আরেকটা জিনিস দেখলাম প্রত্যেক জেলে পরিবারে কেউ না কেউ মিসিং! আবার কেউ কেউ হাঙরের আঘাতে অচল হয়ে পড়ে আছে। সাগর পাড়ের ওইসব মানুষ সহজ সরল এবং তাদের ভিতরে একটা কষ্ট বিরাজ করছে। এগুলো একদিন আগে ঘুরে ঘুরে দেখে বুঝেছি।

এই নাটকে কোনালের গাওয়া একটি আইটেম গানও আছে শুনেছি!
আইটেম গানটা খুব ভালো হয়েছে। কোনাল আপু গেয়েছেনও চমৎকার। একেবারে অন্যরকম একটা ফ্লেভার পাওয়া যাবে। জেলে পল্লীর মানুষের মধ্যে আমোদফূর্তি সঙ্গে একটা উৎসব দেখানো হয়েছে। গানের মধ্যে কমার্শিয়াল ফিল আছে। এই গানটিও নাটকে ভিন্ন মাত্রা যোগ করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। গানটি দেখে নাচতে মন চাইবে! খুব আনন্দের মধ্যে আমরা শুটিং করেছিলাম।

Reneta June
মাহিনের ‘হাঙর’ নাটকে আছে একটি আইটেম সং

এত কষ্ট করলেন বিনিময়ে কী প্রত্যাশা করেন?
টু বি অনেস্ট স্পিকিং, বিনিময়ে কিছু চাই না। আমি একটি বারও ভাবিনি এই কাজটা ভালো হলে দর্শক আমাকে মাথায় তুলে নাচবে কিংবা বিগ বাজেটের কাজ পাবো, আমার পারিশ্রমিক বেড়ে যাবে এসব কিছুই চাই না। দুদিনে আমি যে পারিশ্রমিক নেই ‘হাঙর’ নাটকটি ছয় দিনে করতে একই টাকা নিয়েছি। আমি শুধু মানসিক শান্তির কথা ভেবেছি। অভিনয়ে আমার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকার পরে যে কোনো চরিত্র হয়ে যখন পোট্রে করার চেষ্টা করি, নিজেকে পুরোপুরি উজার করে দেই। যেটা সুইপারম্যান, লেগুনা ড্রাইভারের চরিত্রগুলো দিয়ে চেষ্টা করেছি। আমি মনে করি, আমার এখন অভিনয়ের শিক্ষণীয় পিরিয়ড। সেই কারণে যত কষ্ট হোক, চরিত্রগুলো করছি। মানুষের ভালোবাসার সঙ্গে মানসিক শান্তি পাই; এটাই আমার কাছে সবকিছু। গত দুই বছর আগেও আমার অবস্থা এমন ছিল না। মা এবং বোন নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ আমি খুব ভালো আছি।

অভিনেতা হিসেবে আপনার আলাদা ফ্যান বেইজ তৈরি হয়েছে। এটা অনুভব করেন?
বেশ কিছুদিন ধরে এই বিষয়টি অনুভব করছি। এবার যে কাজগুলো করছি সবগুলো ঢাকার বাইরে শুটিং হচ্ছে। ‘হাঙর’ করলাম কক্সবাজার, বাগের হাটে ‘ভুলো না আমায়’ এর শুটিং করলাম, ‘নসীব’ নামের একটা নাটকের শুটিং করলাম লৌহজং (মুন্সিগঞ্জ), গাজীপুরে ‘ওয়েডিং ক্রাশ’র শুটিং করলাম। ঢাকার বাইরে এসব শুটিং করে বুঝতে পেরেছি মানুষ আমাকে আমার কাজগুলো পছন্দ করছে। প্রত্যেকে আমাকে দেখলে এগিয়ে আসে, দোয়া করে, ছবি তুলতে চায়। ভিতরে ভিতরে আমি ইমোশনাল হয়ে পড়ি।

আগামী ঈদে আপনার কাজের দিকে অনেকেই তাকিয়ে থাকবে! ঈদের কাজগুলো নিয়ে বলুন…  ঈদে আমার ছয়-সাতটি কাজ আসবে। ১৮-২০টা নাটকের চেয়ে আমার কাজের কোয়ালিটি কেমন সেদিকে মনোযোগী। কোনো কাজে তাড়াহুড়ো করিনি। মাহিনের ‘হাঙর’ এর কাজে সাতদিন সময় দিয়েছি। জাকারিয়া সৌখিন ভাইয়ের ‘ভুলো না আমায়’ করেছি, ওখানে সময় দিয়েছি আট দিন। সংখ্যায় বেশি করিনি, কিন্তু এতটুকু গ্যারান্টি দিতে পারি প্রত্যেকটা কাজই আলাদা হবে।

ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই আপনাকে সিনেমার জন্য ভাবেন। আপনি সিনেমা নিয়ে কিছু ভাবছেন?
সিনেমা নিয়ে আমি ভাবি। সিনেমা করতে চাই। কিন্তু আমাকে যথাযত সময় দিতে হবে। চরিত্রটি সঠিকভাবে রিসার্চ করতে করতে তো মাস পেরিয়ে যায়। শারীরিকভাবে প্রস্তুত হতেও সময় লাগবে। সবমিলিয়ে একটা ফিল্ম করতে হলে আমার ছয়-সাত মাস সময় দিতে। লম্বা এই সময়ে দর্শক আমাকে দেখতে পারবে না। হুট করেই আমি এই গ্যাপটা দিতে চাই না। ওটিটি বা ফিল্ম অবশ্যই করবো। তবে সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে করতে চাই। হুজুগে লাফ দিয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে চাই না।

Labaid
BSH
Bellow Post-Green View