
নৌকা ডুবে যাওয়ার পর উত্তাল সাগরে শুধু একটি বাঁশ আঁকড়ে ধরে মৃত্যুর সঙ্গে ৫ দিন লড়াই করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জেলে রবীন্দ্রনাথ প্রকাশ কানু দাস। সেসময় তিনি শুধু বৃষ্টির পানি খেয়ে বেঁচে ছিলেন।
সিনেমাকেও হার মানানো অবিশ্বাস্য সেই জীবনযোদ্ধা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
এর আগে গত বুধবার চট্টগ্রামের কেএসআরএম এর মালিকাধীন জাহাজ এমভি জাওয়াদ তাকে উদ্ধার করে।
কানু দাস বলেন: গত শনিবার রাতে মাছ ধরার সময় আমরা ভারতীয় জলসীমায় ছিলাম। হঠাৎ সিগন্যাল দেওয়ার কারণে উপকূলে ফিরে যেতে পারিনি। ঢেউয়ের তোড়ে নৌকা উল্টে গেলে কয়েকদিন সাগরে যুদ্ধ করার পর একে একে ১৪ জেলে সাগরের অতলে হারিয়ে যায়।

তিনি বলেন: নৌকায় আমিসহ মোট ১৫ জন জেলে ছিলাম। আমি নৌকার মাঝি। উল্টে যাওয়ার সময় আমি নৌকার ভেতরে আটকা পড়ি। পরে আমরা যে যার মতো নৌকায় রক্ষিত বাঁশ ধরে লাইফ জ্যাকেট পরে সাগরে ভাসতে থাকি। সবাই একসঙ্গে আড়াই-তিনদিন পর্যন্ত ভেসে ছিলাম। আড়াই-তিনদিন পর থেকে একে একে সবাই পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। আমাকে যেদিন উদ্ধার করা হয় সেদিন আমার এক ভাইপোও বেঁচে ছিল।
রবীন্দ্রনাথ প্রকাশ কানু দাস বলেন: আমার লাইফ জ্যাকেটটা শুধু তাকে বাঁচানোর জন্য দিয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে উদ্ধারের তিন ঘণ্টা আগে ঢেউয়ের তোড়ে সে তলিয়ে যায়।
সুস্থ হওয়ার পর পতেঙ্গার বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি জেটিতে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয় তাকে। পরে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনারের কার্যালয়ে তাকে হস্তান্তর করে কোস্টগার্ড।
সেসময় উপস্থিত ছিলেন নৌ বাণিজ্য দপ্তরের প্রধান কর্মকর্তা ড. সাজিদ হোসেন, কেএসআরএমের সিইও প্রকৌশলী মেহেরুল করিম, এমভি জাওয়াদের ক্যাপ্টেন এসএম নাসির উদ্দিন, মাস্টার পুলক কুমার ভাস্কর, মেরিন সুপার ওসমান গনিসহ অন্যরা।