নর্থ কোরিয়া দাবি করেছে, মঙ্গলবার উৎক্ষিপ্ত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রটি সম্ভাব্য পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম।
প্রথমবারের মতো দূরপাল্লার আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলের (আইসিবিএম) সফল পরীক্ষা চালানোর ঘোষণা দেয়ার সময় এ দাবি করা হয়।
এর আগে নর্থ কোরিয়ার পশ্চিমাঞ্চল থেকে একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা চালিয়েছে বলে জাপান এবং সাউথ কোরিয়া কর্তৃপক্ষ দাবি করলে যুক্তরাষ্ট্র বিষয়টি নিশ্চিত করে। তবে জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রটিকে মাঝারি পাল্লার এবং এটি নর্থ আমেরিকার জন্য হুমকি নয়।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৯.৪০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ভোর ৬.৪০) দেশটির নর্থ পিয়ংগান প্রদেশের বাংহিয়ন এলাকা থেকে ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোঁড়া হয়। নর্থ কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টিভি চ্যানেলে এক ঘোষণায় ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানানো হয়, মিসাইলটি হুয়াসং-১৪ জাতীয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের উপস্থিতিতে সেটি উৎক্ষেপণ করা হয়।
উৎক্ষেপণের প্রায় ৪০ মিনিট পর ৯৩৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে জাপান সাগরে অবস্থিত জাপানের সংরক্ষিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতর গিয়ে পড়ে বলে ইয়নহ্যাপ সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছে সাউথ কোরীয় সেনাবাহিনী। নর্থ কোরিয়াও পরে তা-ই জানায়।
এ ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় জাপানের প্রধান ক্যাবিনেট সচিব ইয়োশিহিদে সুগা সাংবাদিকদের বলেন, ‘নর্থ কোরিয়ার বারবার চালানো এ ধরণের উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ড একেবারেই মেনে নেয়া যাচ্ছে না। আমরা এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছি।’
অন্যদিকে সাউথ কোরিয়ার নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুন জাই ইন এ ঘটনায় দেশটির নিরাপত্তা কাউন্সিলের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। গত সপ্তাহেরই মুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করেছিলেন নর্থ কোরিয়া ইস্যুতে। বলেছিলেন, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ব্যাপারে পিয়ংইয়াংকে যুক্তরাষ্ট্রের একটা ‘কড়া জবাব’ দেয়া দরকার।
নর্থ কোরিয়া নিয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ট্রাম্পের পৃথক ফোনালাপের একদিন পরই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার এ ঘটনা ঘটল।
এটি চলতি বছরে নর্থ কোরিয়ার ১১তম নিশ্চিত মিসাইল উৎক্ষেপণ। তবে আগেরগুলোর তুলনায় এবারের মিসাইলটি অনেক বেশি দূরপাল্লার বলে জানিয়েছে বিবিসি। প্রতিবার নর্থ কোরিয়া তাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের পরিসর বাড়িয়ে এসেছে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানসহ বিশ্বনেতাদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে নর্থ কোরিয়া শেষ ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাটি চালিয়েছিল গত মে মাসে। ওই মাসে দু’টি ভিন্ন উপলক্ষে দু’টো প্রজেক্টাইলও (রকেট বা বন্দুক জাতীয় লঞ্চার থেকে নিক্ষেপযোগ্য ছোট মিসাইল জাতীয় অস্ত্র) নিক্ষেপ করা হয়। দু’টোই ছিল জাপান সাগরকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া।