মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার মহাকাশযান জুনো সবচেয়ে কাছ থেকে এবার বৃহস্পতি গ্রহের বিশাল লাল ঝড় ‘গ্রেট রেড স্পট’-এর ছবি তুলেছে। গুণগত মানের দিক থেকে কোন ধরণের পরিবর্তন না এনেই সেগুলো সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করেছে নাসা।
মূল ছবি জনগণের উদ্দেশ্যে প্রকাশের পর বিজ্ঞানী এবং ছবি বিশেষজ্ঞরা নিজের মতো করে সেগুলো প্রসেস করে প্রকাশ করেন। প্রসেস করা ছবিগুলোতে বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডল এবং তার গ্রেট রেড স্পটের কুণ্ডলী পাকিয়ে ঘুরতে থাকা প্যাটার্ন ফুটে উঠেছে নানা খুঁটিনাটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে। ছবিগুলো শুধুমাত্র এই ঝড়ের বিশালতাই প্রকাশ করেনি, তুলে ধরেছে এর চোখ ধাঁধানো রঙও।
Spot spotted! #JunoCam raw images from my #Jupiter #GreatRedSpot flyby are available now. Download, process + share https://t.co/zx6fcc7Fzu pic.twitter.com/NJafDJVVW6
— NASA’s Juno Mission (@NASAJuno) July 12, 2017
ওয়াশিংটনে অবস্থিত নাসা সদর দপ্তরের জুনো প্রকল্পের বিজ্ঞানী জ্যারেড এসপ্লে গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘এখানে মূল যে অনুভূতিটা আমাকে নাড়া দিয়েছে তা হলো ছবিগুলোতে ফুটে ওঠা সৌন্দর্য। এগুলো প্রকৃতির তৈরি শিল্পকর্ম।’
সোমবার জুনো ১৬ হাজার কিলোমিটার চওড়া গ্রেট রেড স্পটের ওপর দিয়ে ভূমি থেকে মাত্র সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার এবং বিশাল এই ঝড়ের মেঘ থেকে মাত্র ৯ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় সরাসরি উড়ে যায়। এই প্রথম কোন মহাকাশযান গ্রেট রেড স্পটের এত কাছ দিয়ে সরাসরি উড়ে গেল।
২০১১ সালে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা ১১ কোটি মার্কিন ডলারের জুনো মহাকাশযান ২৮০ কোটি কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ২০১৬ সালের জুলাইয়ে দানবগ্রহ বৃহস্পতির কক্ষপথে অবস্থান নেয়। এই প্রকল্পের লক্ষ্য গ্রহটির গঠন, চৌম্বকক্ষেত্র, তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা ও প্রকৃতি, বিখ্যাত ও আলোচিত গ্রেট রেড স্পটের প্রকৃতিসহ মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা।
বিজ্ঞানী এসপ্লে বলেন, এখনও বিশাল এই ঝড় সম্পর্কে অনেক রহস্য রয়েছে। যেমন, কী কারণে এর রঙ লাল, বছরের পর বছর ধরে ঠিক কোন শক্তিবলে ঝড়টি টিকে আছে, এমন আরও অনেক কিছু।
‘জুনোক্যাম’ দিয়ে তোলা ছবিগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণের পাশাপাশি ওই সময় সংগৃহীত অন্যান্য তথ্য গ্রহরাজের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন বিষয়ে জানতে সাহায্য করবে বলে এসপ্লে সূত্রে জানিয়েছে গার্ডিয়ান। মহাকাশযানটির অন্যান্য বেশিরভাগ যন্ত্রপাতি রেড স্পটের মেঘের নিচে কী ঘটছে তা বের করার চেষ্টায় আছে।
প্রতি ৫৩ দিনে একবার বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করছে জুনো। আগামী ১ সেপ্টেম্বর আবারও বৃহস্পতির কাছাকাছি কক্ষপথ দিয়ে যাবে এটি।