গুংগগিয়াজুরি হাওর এলাকায় দরিদ্র একটি পরিবারে বেড়ে উঠছে রুবেল ও রুবেনা । ভাইবোন একটি এনজিওর বিদ্যালয়ে পড়শোনা করছিল। হঠাৎ থেমে যাওয়ার শঙ্কায় রুবেল ও রুবেনার পড়াশোনার স্বপ্ন। উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ গোলাম নবী তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ শঙ্কার কারণ জানিয়েছেন।
রুবেল-রুবেনার ছবি দিয়ে তিনি ফেসবুকে লিখেছেন: এটি একটি পরিবারের ছবি। বাবা ও চার সন্তান। রুবেনা, রুবেল, সুমেনা ও নবী হোসেন। বাবা আমিনউদ্দিন শুকনোর দিনে চাষাবাদ করেন, আর বর্ষায় হাওরে মাছ ধরেন। ছবিতে যে টিনের ঘরটি দেখা যাচ্ছে সেটা একটি এনজিও স্কুল। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে পরিচালিত শেয়ার শিক্ষা কর্মসূচির অধীনে শিখন প্রকল্পের একটি স্কুল।
তিনি জানান: ফেব্রুয়ারি মাসের পর এই স্কুলটি টিকে থাকতেও পারে, কিংবা নাও পারে। কারণ শিখন প্রকল্প ফেব্রুয়ারি মাসের পর বন্ধ হয়ে যাবে। তখন এই স্কুলের শিক্ষার্থী বড় মেয়ে রুবেনা ও ছেলে রুবেল অন্য কোথাও পড়তে যাবে কি যাবে না সেটা এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি তার বাবা আমিনউদ্দিন।
তবে তার যে আর্থিক অবস্থা তাতে তিনি মনে করেন যে, তার পক্ষে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করানো সম্ভব হবে না। কারণ এনজিও স্কুল হওয়ার কারণে বিনামূল্যে শিক্ষা উপকরণ যেমন খাতা, পেন্সিল ইত্যাদি পাওয়ায় এতোদিন পড়ানো সম্ভব ছিল।
‘তাছাড়া এনজিও স্কুলে কোন বেতনও লাগতো না। বাড়ির কাছেই স্কুল ছিল। এখন যদি স্কুলে পড়াতে হয় তাহলে ২ কিলোমিটার দূরে সরকারি স্কুলে পাঠাতে হবে। বেতন যদিও লাগবে না কিন্তু অনেক ধরনের খরচ আছে।’
গোলাম নবী জানাচ্ছেন: এসবের বাইরেও যে বিষয়টি আমার দৃষ্টি কেড়েছে তা হলো স্কুলে আসার কারণে বড় দুটি ছেলেমেয়ের পোশাক ও চলাফেরায় দৃশ্যমান পরিবর্তন ঘটেছে।
‘ছবিটা আমি তুলেছি স্নানঘাট ইউনিয়ন পরির্দশনকালে। গুংগগিয়াজুরি হাওর এলাকা এটা। স্নানঘাট বাহুবল উপজেলার একটি ইউনিয়ন।’
রুবেল-রুবেনার বোন সুমেনার ভবিষ্যৎ কী তা নিয়েও শঙ্কার কথা জানিয়েছেন গোলাম নবী। অন্য এক পোস্টে সুমেনার ছবি দিয়ে তিনি লিখেছেন: ছবির মেয়েটির নাম সুমেনা। ওর বড় দুই ভাইবোন বাড়ির কাছে শেয়ার শিক্ষা কর্মসূচির শিখন প্রকল্পের অধীনে এনজিও স্কুল থাকার কারণে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিল। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আগামী ফেব্রুয়ারির পর আর সেই স্কুলটিও থাকবে না। ফলে সুমেনার পক্ষে স্কুলে যাওয়া সম্ভব হবে না যদি না নতুন করে দাতা সংস্থার অর্থায়ন না ঘটে কিংবা অন্য কোন স্কুল এখানে স্থাপন না করা হয়।