পাবনা শহরে টিকে থাকা একমাত্র প্রেক্ষাগৃহ ‘রূপকথা’য় দুই দিনব্যাপী প্রদর্শিত হচ্ছে ২১ ঘন্টা ব্যাপ্তীর সিনেমা ‘আমরা একটা সিনেমা বানাবো’! এমনটাই জানালেন এই ছবির নির্মাতা আশরাফ শিশির।
চলচ্চিত্র শিল্পকে বাঁচাতে বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারীকে মাথায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে একটানা প্রদর্শিত হচ্ছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত নির্মাতা আশরাফ শিশিরের ‘আমরা একটা সিনেমা বানাবো’। ১৯ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী। যা শে হচ্ছে সোমবার (২০ জুলাই)।
যে সিনেমাটিকে বলা হচ্ছে বিশ্বের ইতিহাসে দীর্ঘতম ফিকশন চলচ্চিত্র। নির্মাতা বলেন, ওইদিন আনুষাঙ্গিক বিরতি দিয়ে একটানা ২১ ঘন্টা দৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্রটি প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হয়।
পাবনা ফিল্ম সোসাইটির আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন পাবনার জেলা প্রশাসক জনাব কবির মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এ.বি.এম. ফজলুর রহমান, রুপকথা সিনেমা লি. ও ইউনিভার্সাল গ্রুপের স্বত্বাধিকারী, শিল্পপতি ড. সোহানি হোসেন, মাছরাঙা টেলিভিশনের উত্তরবঙ্গ ব্যুরো চিফ উৎপল মির্জা। সভাপতিত্ব করেন পাবনা ফিল্ম সোসাইটি’র প্রধান সমন্বয়ক খালেদ হোসেন পরাগ। অনুষ্ঠানে সরাসরি যোগ দেন নির্মাতা আশরাফ শিশির।
সম্পূর্ণ সাদাকালোতে নির্মিত চলচ্চিত্রটির কাহিনী গড়ে উঠেছে এমন এক জনপদকে ঘিরে, যেখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে রাজনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয়ের মধ্যে কয়েকজন নিষ্পাপ মানুষের সিনেমা নিয়ে বিপ্লবী হয়ে ওঠা এবং স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের গল্প।
এ বিষয়ে পরিচালক বলেন, তৃতীয় বিশ্বের ছোট্ট একটি দেশের ছোট্ট একটি শহরে আমাদের যে জীবন, তা ভীষণ সাদাকালো। আমরা যে স্বপ্নটুকু দেখি তা কিছুটা রঙিন। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানুষ মূলত: নিষ্পাপ, শুধুমাত্র পরিস্থিতি- পারিপার্শ্বিকতার কারণে তারা অনেক অন্যায় করতে বাধ্য হয়। সিনেমা বানানোর বিপ্লবের পাশাপাশি এখানে এমন এক নিষ্পাপ মানুষের গল্প রয়েছে, যে জীবনে একটি পিঁপড়াকেও হত্যা করেনি, অথচ ছবির শেষে সে একজনকে খুন করে ফেলে এমন এক নারীর জন্য যাকে সে কোনদিনও দেখেনি।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, সুমনা সোমা, স্বাধীন খসরু, মাসুম আজিজ, আয়শা মুক্তি, প্রাণ রায়, তেরেসা চৈতি, এলিনা শাম্মী, অরণ্য রানা, দুখু সুমন, জান্নাত সোমা, ইমরান, স্মরণসহ চার হাজার শিল্পী।
আবহ সংগীত পরিচালনা করেছেন রাফায়েত নেওয়াজ ও সম্পাদনা করেছেন সাব্বির মাহমুদ। চিত্রগ্রহণে ছিলেন মোহম্মদ আশরাফুল, সমর ঢালী ও সাব্বির। প্রধান শিল্প নির্দেশক সলিল মজুমদার। বিভিন্ন গানে কন্ঠ দিয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু, নীলাদ্রি ব্যানার্জী, এলিটা, শোয়েব, রাজু (সহজিয়া), শিরোনামহীন, সুবীর নন্দী, সামিরা আব্বাসী, তুলিপ সেনগুপ্ত, অর্নব খান। গানগুলোর সংগীত পরিচালনায় ছিলেন শিরোনামহীন ব্যান্ডের জিয়াউর রহমান জিয়া।