রাখাইন প্রদেশে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর গত দু’সপ্তাহে বাংলাদেশে প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের দেয়া তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গার সংখ্যা এখন ২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি।
জাতিসংঘের এক কর্মকর্তার বরাতে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারে ১ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে।
চলমান অভিযানে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সংখ্যা রাতারাতি দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী কেবল কক্সবাজারে দু’টি শরণার্থী শিবিরে এখন রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭০ হাজারেরও বেশি।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর বহুদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ-সহিংসতা সঙ্কট সমাধানে ২০১৬ সালের আগস্টে গঠিত হয় অ্যাডভাইজরি কমিশন অন রাখাইন স্টেট। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে ওই কমিশন এক বছরের তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান অং সান সু চির কাছে জমা দেয় চলতি বছরের ২৪ অগাস্ট।
৬৩ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন জমা দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই ২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে ত্রিশটি পুলিশ ও সেনাচৌকিতে রহস্যজনক হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নিহত হয় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্য। তারপরই হামলার জন্য রোহিঙ্গা ‘জঙ্গি’দের দায়ী করে জবাব হিসেবে সেনাবাহিনী পুরো অঞ্চলে হত্যাযজ্ঞ শুরু করে।
প্রাণভয়ে লাখো মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে পাড়ি জমায় বাংলাদেশে। নৌপথে পালিয়ে আসার পথে নৌকাডুবিতেও বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন না করার উদ্দেশ্যেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এই হত্যাকাণ্ড শুরু করে।