পুলিশের ৩১তম বিসিএস কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রেপ্তার হওয়া জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনের নি:শর্ত মুক্তি দাবি করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন(বিএমএ)।
বিএমএ’র সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং মহাসচিব ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকার একটি প্রাইভেট মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পুলিশের এএসপি আনিসুল করিমের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে ১৭ নভেম্বর গ্রেপ্তার করায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে।
এরপরে বিবৃতিতে লেখা হয়, গত ৯ নভেম্বর আনিসুল করিমকে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার পরিবারের সদস্য ও পুলিশ সহকর্মী সহকারে চিকিৎসার জন্য আসেন। জরুরি বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক তাকে চিকিৎসা দিয়ে অবজারভেশনে রাখেন এবং পরবর্তীতে আবাসিক সাইক্রিয়াটিক (সহকারী অধ্যাপক) এর দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা এ হাসপাতাল ভর্তি না করে নিজ দায়িত্বে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখানে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়।

যেকোনো মৃত্যুই অত্যন্ত দু:খজনক ও অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়,আনিসুল করিম মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে মারা যাননি এবং এ প্রতিষ্ঠানের কোনো চিকিৎসকের কোনোও সংশ্লিষ্টতাও নেই। এমনকি যে প্রাইভেট হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি করা হয়েছিলো সেখানে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের রেজিস্ট্রার ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুন ঐ রোগীকে দেখেননি।
এ ঘটনায় ডা. আব্দুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়া সম্পূর্ণ কল্পনাপ্রসূত, অযৌক্তিক, অন্যায় ও হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে।
বলা হয়, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে একজন সরকারি চিকিৎসক কর্মকর্তাকে এভাবে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেওয়ায় দেশের সব চিকিৎসককে সংক্ষুব্ধ করেছে। মহামান্য আদালতের নির্দেশনা ব্যতিরেকে সম্পূর্ণ কাল্পনিক অভিযোগের ভিত্তিতে একজন সহকারী চিকিৎসক কর্মকর্তাকে এভাবে গ্রেপ্তার অব্যাহত থাকলে স্বাভাবিক চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যাহত হতে পারে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৯ নভেম্বর সিনিয়র এএসপি শিপনকে রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন সেখানে কোনো মানসিক রোগের চিকিৎসক ছিলেন না। হাসপাতালের কর্মচারীরা চিকিৎসা দেয়ার অজুহাতে তাকে জোর করে দোতলার একটি অবজারভেশন কক্ষে তাকে নিয়ে যায়।
সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ওই কক্ষে নির্মম নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার বাবা ফয়েজ উদ্দিন বাদী হয়ে আদাবর থানায় মামলা করেন।