পহেলা বৈশাখ উদযাপন এখন শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়, নানা রঙের ছটায় পুরো বাংলাকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়ারও প্রতিক পহেলা বৈশাখ। শত বছরের পরিক্রমায় বাংলা নববর্ষ উদযাপনের আজকের প্রেক্ষাপটকে এভাবেই দেখেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন।
চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন, এই নববর্ষ উদযাপন কবে শুরু হয়েছিলো তা মুখ্য নয়। বরং দীর্ঘ দিন উদযাপিত হয়ে এটি যে এখন বাঙালি সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেটাই মূল বিষয়।
মুনতাসীর মামুনের মতে, পহেলা বৈশাখ এখন আর শধু কোনো আনন্দ অনুষ্ঠান নয়, প্রয়োজনে এটি বাঙালির প্রতিবাদেরও মোক্ষম ভাষা।
তিনি বলেন, আজ নববর্ষের আনুষ্ঠানিকতা বাংলার অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। বাঙালির একমাত্র ধর্ম নিরপেক্ষ এবং অসাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠান হচ্ছে পহেলা বৈশাখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এ অধ্যাপক বলেন, বাংলাদেশে যেহেতু মুসলমানরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ, তাই আশুরাকেই (হিজরি সাল) নববর্ষ হিসেবে পালন করার কথা। কিন্তু বাংলাদেশে তা হয় না। বিশ্বে বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যেখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, বাঙালি-চাকমা একই দিনে একই চেতনা নিয়ে নতুন বর্ষকে বরণ করে নেয়।
কর আদায়ে সমস্যা দূর করতে পহেলা বৈশাখে নববর্ষ উদযাপন শুরু করেন মুঘল সম্রাট আকবর। তখন থেকে পালিত হয়ে আসলেও ষাটের দশকে এটি ভিন্ন মোড় নেয়। সেসময়ের পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠির নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ১৯৬৭ সালে প্রতিবাদের অনন্য ভাষা হিসেবে রমনা বটমূলে পহেলা বৈশাখ উদযাপন শুরু করে ছায়ানট। তখন থেকে বাঙালির চেতনার আরেক বাতিঘর তাই রমনা বটমূল।
স্বাধীনতার পর নববর্ষ উদযাপনের সাংস্কৃতিক আন্দোলনে যোগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট। প্রতি বছরই তারা বের করে মঙ্গল শোভাযাত্রা।