রাজধানীর গুলশান-১ নম্বর ডিএনসিসি মার্কেটের সঙ্গে কাঁচাবাজারের আগুনে একটি দোকানও রেহাই পায়নি। দুই শতাধিক আগুনের সবগুলোই পুড়ে গেছে।
কাঁচাবাজারের কনফেকশনারি দোকানের মালিক মো. নজরুল ইসলাম চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, পুরো কাঁচাবাজারের কোনো দোকানই অবশিষ্ট নেই। বাজারের ২৯২ টি দোকানের মধ্যে ৮১টি দোকান কিছুদিন আগে ডিএনসিসি মার্কেটের পার্কিংয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। বাকি ২১১টি দোকানের সবগুলোই শনিবারের আগুনে পুড়ে গেছে।
নজরুল ইসলাম জানান, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তিনি আগুন লাগার পর খবর পান। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে এসে দেখেন পুরো মার্কেটেই আগুন দাউদাউ করে জ্বলছে।
এ ঘটনায় কসমেটিকস মার্কেটে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের ধারণা, শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের শুরু। যদিও এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো বক্তব্য দেয়নি।
এখনো কাঁচা বাজারের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা তাদের দোকানের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বের করে নিচ্ছে।
কাঁচাবাজারের আগুন প্রায় ৩ ঘন্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এখন আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস, সেনা ও নৌবাহিনী। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে আগুন প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিসের অপারেশনস বিভাগের পরিচালক শাকিল নেওয়াজ।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (ডিডি) দেবাশীষ বর্ধন জানিয়েছেন, গুলশান-১ ডিএনসিসি শপিং সেন্টারের পেছনের দিকের একটি বেবিশপের গোডাউন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও মার্কেট ভবনের গেটগুলোতে তালা লাগানো থাকায় সাথে সাথে ঢুকতে পারেনি তারা। ফলে আগুন সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে কাঁচাবাজারে।
পরে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও সাধারণ মানুষের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ঢাকার উপ-পরিচালক শামীম হাসান চৌধুরীকে প্রধান করে ডিএনসিসি এক্সটেনশন মার্কেটে আগুনের কারণ নির্ণয় পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
ডিএনসিসি মার্কেটে আগুনের ঘটনায় বর্তমানে আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ২০টি ইউনিটের সঙ্গে কাজ করছে সেনাবাহিনীর দুই প্লাটুন সেনাসহ বিমান এবং নৌবাহিনী।
এর আগে ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি এই গুলশান-১ ডিএনসিসি মার্কেটেই ভয়াবহ আগুন লেগে ধসে পড়েছিল মার্কেট ভবন। তারপর সেখানে অস্থায়ীভাবে একটি একতলা টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয়। এবার সেই ভবনেও আগুন লাগল।
বারবার কেন এই ভবনে আগুন লাগছে তা খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।