চট্টগ্রাম থেকে: আগের ম্যাচে ঐতিহ্যবাহী মোহনবাগানকে থমকে দিয়েছিল লাওসের ইয়ং এলিফ্যান্টস। চমকে দিতে চেয়েছিল চট্টগ্রাম আবাহনীকেও। তবে পা হড়কায়নি স্বাগতিকদের। ক্ষুদে হাতিদের গতি থমকে দিয়ে ৪-২ গোলের জয়ে শেষ চারের পথে অনেকটাই এগিয়ে থাকল জামাল ভূঁইয়ার দল।
এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বুধবার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপে গ্রুপ ‘এ’র দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়া চট্টগ্রাম আবাহনী ও ইয়ং এলিফ্যান্টস। লাওসের প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জয় তুলে নিয়ে নিজেদের কাজটা ঠিকঠাক মতো সেরে রেখেছে মারুফুল হকের শিষ্যরা।
দুই ম্যাচে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট স্বাগতিকদের। এ দুই ম্যাচে তাদের গোল ৮টি, হজম করেছে ৩টি। প্রতিপক্ষদের চেয়ে এগিয়ে আছে ৫ গোলের ব্যবধানে। শেষ ম্যাচে শুক্রবার মোহনবাগানের বিপক্ষে ড্র করতে পারলেই গ্রুপ সেরা হবে তারা। হারলেও খুব একটা ক্ষতি হওয়ার সুযোগ কম! সেক্ষেত্রে অন্তত পাঁচ গোলে জিততে হবে কলকাতার জায়ান্ট ক্লাবটিকে।
দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবলে শুরু হয় দুদলের খেলা। মাঠ ভরার আগেই গোল চট্টগ্রাম আবাহনীর। তৃতীয় মিনিটে ডানপ্রান্ত দিয়ে ডি-বক্সে ক্রস করেছিলেন রহমত মিয়া। ক্রসে হেডও নিয়েছিলেন সোহেল রানা। বারে ঢোকার আগেই তা পা দিয়ে ঠেকিয়ে দেন এলিফ্যান্টস গোলরক্ষক সোলাসাক থিলাবং।
নবম মিনিটে চট্টগ্রামকে আর গোল করা থেকে আটকে রাখতে পারেননি এলিফ্যান্টস গোলরক্ষক। আরিফুল ইসলামের বাড়ানো ক্রসে বল পান রতকোভিচ লুকা। প্রতিপক্ষ এক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি-বক্সে চিন্দুমা ম্যাথিউয়ের দিকে পাস দেন মন্টেনেগ্রোর এ মিডফিল্ডার। নাইজেরিয়ান ম্যাথিউ আর দেরি করেননি। ডান পায়ের শটে বল জড়িয়ে দেন জালে। টুর্নামেন্টে এটি তার তৃতীয় গোল।
পাঁচ মিনিট বাদেই আফিজাই থানাখান্তির গোলে সমতায় ফেরে ইয়ং এলিফ্যান্টস। প্রায় ৩০ গজ দূর থেকে ২২ বছর বয়সী ডিফেন্ডারের বাঁকানো বুলেট গতির ফ্রি-কিকে কিছুই করার ছিল না চট্টগ্রাম গোলরক্ষক মোহাম্মদ নেহালের।
ম্যাচের ২৪ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে একইরকম এক ফ্রি-কিক নিয়েছিলেন চট্টগ্রাম অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। তবে তার ফ্রি-কিক নিচু হওয়ায় ঠেকিয়ে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক।
পরে ৩৩ মিনিটে ইকবাল জনের হাস্যকর ভুলে দ্বিতীয় গোল তুলে নেয় এলিফ্যান্টসরা। নিজেদের বক্স থেকে জনকে বল দিয়েছিলেন গোলরক্ষক নেহাল। বল ক্লিয়ার না করে উল্টো ডি-বক্সের সামনে দাঁড়ানো সমজে কিউহানাহামের পায়ে তুলে দেন উজবেকিস্তানের এ ডিফেন্ডার। মোহনবাগানের বিপক্ষে জোড়া গোল পাওয়া ফরোয়ার্ড সুযোগ হাতছাড়া করেননি। নেহালের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জড়িয়ে দেন জালে।
এগিয়ে থাকা এলিফ্যান্টস দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের অর্ধে গড়ে তোলে রক্ষণের বেড়াজাল। ৫৪ মিনিটে সেই বেড়া ভেঙে ফেলেন রতকোভিচ লুকা। বামপ্রান্তের ২৫ গজ দূর থেকে লম্বা ক্রস দিয়েছিলেন ইয়াসিন আরাফাত। দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে হেডে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান মন্টেনেগ্রোর মিডফিল্ডার।
ম্যাচের ৭২ মিনিটে স্বাগতিকদের উল্লাসে ভাসিয়ে ব্যবধান ৩-২ করেন অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। গোলার মতো থ্রো-ইনে এলিফ্যান্টসের ডি-বক্সে বল ফেলেছিলেন রহমত মিয়া। তার থ্রোতে হেড করেন চিন্দুমা ম্যাথিউ। ম্যাথিউর হেডে ডি-বক্স থেকে ভলি করেন মান্নাফ রাব্বী। বাইরে বল পান জামাল। তাতে নেয়া তার মাটি কামড়ানো শটে কিছু করার সুযোগই পাননি প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক।
ছয় মিনিট বাদে চট্টগ্রাম আবাহনীর চতুর্থ গোলেও থাকল জামালের নাম। স্পটকিক নিতে পারঙ্গম চট্টগ্রামের অধিনায়কের কর্নার কিকে কেবল মাথাই ছুঁয়েছেন আইভরি কোস্টের মিডফিল্ডার দিদিয়ের চার্লস। তাতেই টুর্নামেন্টের টানা তৃতীয় সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে স্বাগতিকরা।