রাজকোটে বাংলাদেশকে একাই ধসিয়ে দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। ৪২ বলে ৮৫ রানের ইনিংস খেলে টাইগার বোলারদের দাঁড়াতেই দেননি ভারত অধিনায়ক। তবে তার মারকুটে মনোভাবে কাবু নয় বাংলাদেশের বোলাররা, বলছেন রাসেল ডমিঙ্গো। রোহিতের জন্য রোববার নাগপুরে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে একাদশে পরিবর্তন আনার পক্ষে নন টাইগার কোচ।
দিল্লিতে প্রথম টি-টুয়েন্টিতে ইনিংস বড় করতে না পারার আক্ষেপটা রাজকোটে মিটিয়েছেন রোহিত। তার ব্যাটে ভর করে ২৬ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের বড় জয়ে তিন ম্যাচের টি-টুয়েন্টি সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে ভারত। বাংলাদেশকে প্রিয় প্রতিপক্ষ বানিয়ে ফেলা রোহিত নাগপুরেও হয়ে উঠতে পারেন স্বাগতিকদের ‘এক্স-ফ্যাক্টর’।
আগের ম্যাচের মতো শেষ ম্যাচেও ভারত অধিনায়ক জ্বলে উঠলে শেষ হয়ে যেতে পারে প্রথমবার ভারতের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকদের টি-টুয়েন্টি সিরিজ জয়ের আশা।
রোহিত কী করতে পারেন সে সম্পর্কে ভালোই জানা ডমিঙ্গোর। একইসঙ্গে নিজের খেলোয়াড়দের উপরও অগাধ বিশ্বাস বাংলাদেশের প্রোটিয়া কোচের। তাই নাগপুরে একাদশে কোনো পরিবর্তন আসছে না বলেই ইঙ্গিত তার। আর দলের কেউ খারাপ খেললেও তাকে সহসা দল থেকে বাদ দেয়ার পক্ষে নন তিনি।
‘কেউ আমাদের বিপক্ষে খুব ভালো খেলে বলে তার জন্য পরিবর্তন আনতে হবে এমনটাতে আমরা বিশ্বাস করি না।’
‘কেউ খারাপ করছে বলে তাকে ছয় মাস বাইরে থাকতে হবে এমন কোনো কথা নেই। এটা টি-টুয়েন্টিরই অংশ। আমরা বিশ্বাস করি যারা শেষ দুই ম্যাচে খেলেছে তারা যথেষ্ট যোগ্য।’
দলের দুই নবীন সদস্য আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও নাঈম শেখের পারফরম্যান্স নজর কেড়েছে কোচের। রাজকোটে দারুণকিছু স্ট্রোক খেলেছেন নাঈম। আর ব্যাটিং অলরাউন্ডার হয়েও আমিনুলের লেগস্পিন বাংলাদেশ দলের বোলিং আক্রমণে এনেছে বৈচিত্র্য। প্রথম দুই ম্যাচে ৪ উইকেট শিকার তারই প্রমাণ।
‘আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে লেগস্পিনারদের ভালোবাসি। আমি জানি আমিনুল এমন একজন লেগস্পিনার যে ব্যাটিংটাও ভালো করে। তবে আমি তার ইচ্ছা, শক্তি আর কাজের প্রতি ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ। দলের জন্য তার মতো বোলার বেশ জরুরী। এমনকি রোহিতের দারুণ ব্যাটিং সত্ত্বেও শেষ ম্যাচে ৩.৫ ওভারে ২৩ রান দিয়েছিল। শুধু শেষ বলে ছক্কা হজম করেছে। ভীষণরকম চাপের সময়ও তার মতো তরুণের বোলিংটা বেশ ভালো হয়েছে।’
‘নাঈমের টি-টুয়েন্টি রেকর্ড হয়তো খুব আহামরি নয়, তবে ওকে দেখেই আমরা বুঝতে পারছি যে পরের প্রজন্মে কেমন ক্রিকেটার আসতে চলেছে। আমরা জানি না তামিম, মুশফিক, রিয়াদরা আর কয়দিন দেশকে সেবা দিতে পারবে, সুতরাং তরুণদের জন্য এটা ভালো সুযোগ নিজেদের উজাড় করে দেয়ার। আমরা টেস্ট স্কোয়াডে সাইফ হাসানকে সুযোগ দিয়েছি। দেখবো টেস্ট সিরিজে সে কতটা ভালো করে করতে পারে।’
নতুনদের পারফরম্যান্স আশা জাগানিয়া হলেও ডমিঙ্গোকে ভাবাচ্ছে লিটন-সৌম্যের ফর্ম। উইকেট থিতু হওয়ার পর আউট হচ্ছেন বাজে শট খেলে। নাগপুরে ভালো কিছু করতে হলে ব্যাটসম্যানদের শট নির্বাচনে বুদ্ধির পরিচয় দিতে বললেন ডমিঙ্গো।
‘মুশফিক প্রথম ম্যাচে বড় স্কোর করেছে, আমরা জিতেছি। রোহিত বড় রান পেয়েছে, দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত জিতেছে। যখন আমাদের কেউ ৩০ রান করে তখন চেষ্টা করতে হবে সেটাকে ৭০-৮০ বানানোর। ’
‘বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের চেষ্টা করতে হবে আউট না হওয়ার। তারা ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাজে শটে আউট হচ্ছে। আমি এখানে কৌশলে সমস্যা দেখি না। আসল সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার মানসিকতায় উন্নতি করতে হবে।’