মুসলিম-ইহুদি দুই ধর্মের মানুষের জন্যই পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢোকার পথে বসানো সব মেটাল ডিটেক্টর সরিয়ে নিচ্ছে ইসরায়েল।
এসব অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘিরে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংঘর্ষ-উত্তেজনা এবং আন্তর্জাতিক আহ্বানের পর তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। মেটাল ডিটেক্টরের পরিবর্তে তুলনামূলক শিথিল নজরদারি ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
বিবিসি জানায়, এই সিদ্ধান্তের কয়েক ঘণ্টা আগে জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত নিকোলাই ম্লাদেনভ সতর্ক করে বলেছিলেন, জেরুজালেমের পবিত্র ধর্মীয় স্থানটি ঘিরে দ্বন্দ্ব দ্রুত নিরসন না হলে তা এই প্রাচীন শহর ছাড়িয়ে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আগামী শুক্রবারের মধ্যে জটিলতা দূর করার জন্য জোর তাগিদ দেন তিনি।
পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণ মুসলিমদের কাছে হারাম আল শরিফ এবং ইহুদিদের কাছে টেম্পল মাউন্ট নামে পরিচিত।
গত ১৪ জুলাই সেখানে প্রবেশ পথের কাছে দেই পুলিশ কর্মকর্তার মৃত্যুকে ঘিরে মেটাল ডিটেক্টরের মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় রামাল্লাহর ওয়েস্ট ব্যাংক ও হালামিশ এলাকায় ইসরায়েলি বসতিতে গত শনিবার ছুরি নিয়ে চালানো হামলায় তিন ইসরায়েলি নিহত ও একজন আহত হয়।
ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের আরোপিত অতিরিক্ত নিরাপত্তা বিষয়ক নিয়মকানুনের প্রতিবাদে ১৪ তারিখে শুরু হয় বিক্ষোভ। ফিলিস্তিনি মুসলিমরা মেটাল ডিটেক্টর পেরিয়ে মসজিদে ঢুকে নামায পড়তে অস্বীকৃতি জানায়। তাদের দাবি, মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে সব মেটাল ডিটেক্টর তুলে নিতে হবে।
চলমান দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিলো। তার কয়েক ঘন্টা আগে সোমবার এ বিষয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৈঠকের পরই জাতিসংঘের নিকোলাই ম্লাদেনভ বলেন, বিষয়টির সমাধান না হলে মুসলিম বিশ্বে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
‘কারোরই ভুল করে ভাবা উচিত হবে না যে, এটা শুধু একটা স্থানীয় সমস্যা। যদিও এটি মাত্র কয়েকশ’ বর্গমিটারের মধ্যে ঘটছে, তবে এর প্রভাব পড়ছে সারাবিশ্বের কোটি-কোটি মানুষের ওপর,’ বলেন ম্লাদেনভ।
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এর সর্বনাশা প্রভাব প্রাচীন শহরের দেয়াল ছাড়িয়ে, ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন, এমনকি মধ্যপ্রাচ্যের সীমানা ছাড়িয়ে আরও অনেক দূর যেতে পারে।’