‘সুইং ভোট’ হিসেবে পরিচিত যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অ্যানথনি কেনেডি অবসরে যাচ্ছেন। তাই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে সুযোগ এসেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করার।
ট্রাম্পের কাছে লেখা আনুষ্ঠানিক চিঠিতে অ্যানথনি কেনেডি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, আগামী ৩১ জুলাই থেকে অবসরে যেতে চান তিনি।
৮১ বছর বয়সী অ্যানথনি কেনেডি ৯ সদস্য বিশিষ্ট মার্কিন সুপ্রিম কোর্টের দ্বিতীয় প্রবীণতম বিচারপতি।
১৯৮৮ সালে নিয়োগ পাবার পর থেকে এ পর্যন্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বাকি ৮ বিচারপতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো রায় নিয়ে সমান দু’ভাগ হয়ে গেলে কেনেডির সিদ্ধান্তেই ৫-৪ সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্তে কোনো এক দিকে পাল্লা ভারী হয়েছে। এজন্য কেনেডির ভোটকে বলা হয় ‘সুইং ভোট’।
তাই সুপ্রিম কোর্টে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখাটাই ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য তুলনামূলক বেশি লাভজনক।
সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা রিপাবলিকান মিচ ম্যাককনেল বুধবার জানিয়েছেন, বিচারপতি কেনেডির স্থান নেয়ার জন্য সম্ভাব্য একজন প্রার্থী বেছে নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। ওই প্রার্থীর বিষয়ে শরৎকাল শেষ হওয়ার আগেই ভোট হবে।
আমেরিকানদের জীবনে সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। চরমভাবে বিতর্কিত আইন থেকে শুরু করে অঙ্গরাজ্য ও ফেডারেল সরকারের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এবং চূড়ান্ত আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত পর্যন্ত সব বড় বড় বিষয়ে এই আদালতের কথাই শেষ কথা। যুক্তরাষ্ট্রে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের ওপর উচ্চবাচ্য করার সাহস বা এখতিয়ার কোনোটাই কারও নেই।
রক্ষণশীল মনোভাবের বিচারপতিদের অনেকেও সম্প্রতি ৫০টি অঙ্গরাজ্যে সমকামীদের মাঝে বিয়ের বৈধতা এবং গর্ভপাতের অধিকার রক্ষার মতো বিষয়গুলোতে উদারপন্থিদের পক্ষে গিয়ে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।
তবে সাম্প্রতিক সময়গুলোতে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার অভিবাসন সংক্রান্ত নির্দেশ স্থগিত করা এবং যুক্তরাষ্ট্রে কার্বন নিঃসরণ কমানোর পরিকল্পনায় স্থগিতাদেশ দিয়ে এ সংক্রান্ত আপিল চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তও দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
আর চলতি সপ্তাহেই আরেকটি রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট, যা ট্রাম্প সরকারের পক্ষেই যায়। রায়ে ৫টি মুসলিম প্রধান দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণের ওপর ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন এই আদালত। এখানে রক্ষণশীলদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণেই ৯ বিচারপতির ৫ জনের সিদ্ধান্তে নিষেধাজ্ঞা বহাল থেকে যায়।
বিচারপতি কেনেডি বহুবার গর্ভপাতের অধিকার রক্ষার পক্ষে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। তাই তার অবসরের পর বহু অঙ্গরাজ্যেই বৈধ গর্ভপাতের সুযোগ বন্ধ করে দেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে এ অধিকারের পক্ষে কাজ করা সংস্থাগুলো।