পৃথিবীর নিজ কক্ষপথে ছুটে চলার ক্ষেত্রে ছোট কিছু পরিবর্তন আসায় ২০১৮ সালে পৃথিবী বড় ধরনের ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিজ্ঞানীরা। এক বছর ধরে পৃথিবীর নিজ কক্ষপথে ধীর গতিতে পরিভ্রমণ করার ফলে দিনের দৈর্ঘ্য দিন দিন মিলিসেকেন্ড করে বাড়ছে। আর এর কারণে পৃথিবীতে বড় ধরনের ভুমিকম্পের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ের রোজার বিলহাম এবং মন্টানা বিশ্ববিদ্যালযয়ের রেবেকা বেন্ডিক বিগত একশ’ বছরেরও বেশি সময়ের ঐতিহাসিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষন করে এই মতামত দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলোজিক্যাল সোসাইটি অব আমেরিকার সভায় তাদের গবেষণাপত্রে এসব তথ্য তুলে ধরেন এই দুই বিজ্ঞানী।
গবেষণায় তারা বলেন: বড় ধরণের ভূমিকম্পের সঙ্গে পৃথিবীর নিজ কক্ষপথে ধীরগতিতে ঘুরার গতি সম্পর্কিত। এই ধীর গতির কারণে পাঁচ থেকে ছয় বছরের মাথায় এ ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা থাকে এবং প্রতি ৩২ বছরের মাথায় বড় ধরণের ভূমিকম্পের সম্ভাবনা থাকে। এই পদ্ধতিতে ২০১৮ সালে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে তা হবে ধীর গতির ফলে তৃতীয়বারের মত বড় ভূমিকম্প হওয়ার ঘটনা।
‘গত শতাব্দীতে বার্ষিক ভূমিকম্পের পরিমাণ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার বেশির ভাগ ছিলো রিকটার স্কেল ৭ এর উপরের মাত্রার। আঘাত হানা এসব ভূমিকম্পের সঙ্গে পথিবীর ধীর গতির একটা মিল রয়েছে’, দাবি করেছেন এই দুই বিজ্ঞানী।
আগামী বছর আমাদের কয়েক দফা বড় বড় ভূমিকম্প দেখতে হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন বিলহাম। পথিবীর ধীর গতির ফলে বিষুবরেখা এর ব্যাস সঙ্কুচিত করে ফেলে। বিষুবরেখা টেকটনিক প্লেটের কাছে অবস্থিত হওয়ায় এই প্লেটের ধাক্কায় বড় ধরণের ভূমিকম্প হতে পারে বলে বিবিসি রেডিও’র এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন বিলহাম।
১৯০০ সালের পর ক্যারিবিয়ান অঞ্চেলে যত বড় বড় ভূমিকম্প হয়েছে তার ৮০ ভাগ ভূমিকম্প হয়েছে পৃথিবীর ধীরগতির ফলে। ২০১০ সালে হাইতির ভূমিকম্পের কারণ হিসেবে তারা পৃথিবীর এই ধীর গতিকে তুলে ধরেছেন। বিষুব রেখা কাছাকাছি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ইস্ট ইন্ডিজ অঞ্চলের ভূমিকম্পের জন্য এই দুই বিজ্ঞানী দায়ী করেন পৃথিবীর ধীর গতিকেই।