ভারতবর্ষে ১৮৫৭ সালে সিপাহী-জনতার সম্মিলিতে স্বাধীনতা সংগ্রাম নানা কারণে সফল হয়নি। শেষ দিকে এসে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা অর্জনের প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের জন্ম হলেও একে ঠিক স্বাধীনতা ‘অর্জন’ বলা যায় না। ইয়াসির আরাফাত ফিলিস্তিনের মজলুম মানুষগুলোর জীবনে শান্তি আনতে পারেননি; সাম্রাজ্যবাদী শক্তির শঠতা, কপটতার কাছে হার মেনেছেন। বিশ্বের নানা দেশে, স্থানে অনেক জাতি মুক্তির জন্য লড়াই করছে। কিন্তু সফল হতে পারছেনা। এখানেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের বিশালত্ব নিহিত।
পাকিস্তান আমলের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে সঠিক অবস্থান নিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র কায়েমের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকে সামনে রেখে চূড়ান্তভাবে জাতিকে মুক্তিযুদ্ধে শামিল করে রাষ্ট্র কায়েমে সফল হয়ে টুঙ্গিপাড়ার মুজিব হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশের বাঙালি জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, স্থানীয় দোসরদের সশস্ত্র যুদ্ধে পরাজিত করে বাঙালি জাতি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এর জন্মগল্পের প্রধান চরিত্র তাই নিঃসন্দেহে বঙ্গবন্ধু।
অবিরাম সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি পুরো জাতিকে স্বাধীনতার দিকে আহ্বান করতে পেরেছিলেন। বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশ ছাড়া সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্র হল এমন একটি দেশ যেটি সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছে।বঙ্গবন্ধুর মাপের নেতা বিশ্ব ইতিহাসে খুব বেশী আছে বলে জানা নেই। কিউবার মানবতাবাদী নেতা মরহুম ফিদেল ক্যাস্ট্রো ১৯৭৩ সালে আলজিরিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন’ এর সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎ পেয়ে, তাঁর ব্যক্তিত্ব দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেছিলেন, ‘‘আমি হিমালয় দেখিনি। তবে শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটি হিমালয়ের সমান। এভাবে আমি হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতাই লাভ করলাম।’ কত বড় নেতা আমরা পেয়েছিলাম সেটি আমরা সবাই অনুধাবন করতে পারিনা। কী পেয়ে কী হারালাম, যদি আমরা অনুধাবন করতে পারতাম আর তাঁর আদর্শ জীবনের সবক্ষেত্রে বাস্তবায়ন করতে পারতাম তাহলে আমরাই হতাম বিশ্বের অন্যতম সমৃদ্ধ জাতি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাঁর কর্মকাণ্ড, আন্দোলন, সংগ্রাম, ভাষণ-বক্তৃতার মাধ্যমে একটি অনন্য রাজনৈতিক আদর্শের জন্ম দিয়েছেন, যাকে আমরা ‘মুজিববাদ’ বলে অভিহিত করতে পারি। আমরা পুঁজিবাদ কিংবা মার্কসবাদ নিয়ে কথা বলি। বাংলাদেশের জাতি ও রাষ্ট্র গঠনের জন্য কার্যকর হবে, এমন একটি পরিষ্কার ও স্বতন্ত্র আদর্শের জনক তিনি। আজ এতগুলো বছর পরে, আমাদের ভোগবাদী মানসে অনেকের কাছেই এই আদর্শের অনন্যতা বুঝে উঠা সম্ভব হচ্ছেনা।
পাকিস্তানের কারাগার থেকে স্বদেশে ফিরে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের ঐতিহাসিক ভাষণেই তিনি স্বাধীন বাংলাদেশে জাতি ও রাষ্ট্র গঠনের রূপরেখা বাতলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিতে চাই যে, আমাদের দেশ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক দেশ’। এদেশের কৃষক-শ্রমিক, হিন্দু-মুসলমান সবাই সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে’।
সহজ তর্জমায় আমরা বলতে পারি, রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন গণতন্ত্র আর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে চেয়েছিলেন সমাজতন্ত্র কায়েম করতে। কার্ল মার্কস ধর্মকে‘আফিম’ বলে বর্ণনা করে ধর্মের কাছে আত্মসমর্পণকে নিরুৎসাহিত করলেও বঙ্গবন্ধু সে পথ অবলম্বন করেননি। বাংলাদেশের সমাজে ধর্মের গভীরতা ও অনিবার্যতা অনুধাবন করে তিনি বিশেষ অর্থে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’কে রাষ্ট্র ও জাতিগঠন কাজের চার মূলনীতির একটি হিসেবে সংবিধানে সন্নিবেশিত করেছিলেন। ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বলতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কী বুঝতেন সেটা জানা দরকার। ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল তারিখে গনপরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ‘ ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে; মুসলমান তার ধর্ম পালন করবে, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ যে যার ধর্ম পালন করবে। কেউ কারও ধর্মে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, বাংলার মানুষ ধর্মের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চায়না। রাজনৈতিক কারণে ধর্মকে ব্যবহার করা যাবেনা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ধর্মকে বাংলার বুকে ব্যবহার করতে দেওয়া যাবেনা। যদি কেউ ব্যবহার করে, তাহলে বাংলার মানুষ তাকে প্রত্যাঘাত করবে, এ আমি বিশ্বাস করি’।
গণপরিষদ অধিবেশনের এই ভাষণে সংবিধানের চার মূলনীতির অন্যতম ‘জাতীয়তাবাদ’ এর পরিষ্কার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেছিলেন, ‘আমাদের আদর্শ পরিষ্কার হয়ে রয়েছে। এই পরিষ্কার আদর্শের ভিত্তিতে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে এবং সে আদর্শের ভিত্তিতে এদেশ চলবে। জাতীয়তাবাদ- বাঙালি জাতীয়তাবাদ-এই বাঙালি জাতীয়তাবাদ চলবে বাংলাদেশে। বাংলার কৃষ্টি, বাংলার ঐতিহ্য, বাংলার আকাশ-বাতাস, বাঙালির রক্ত দিয়ে বাংলার জাতীয়তাবাদ’।
রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে ‘গণতন্ত্র’ আর অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে ‘সমাজতন্ত্র’ কীরূপ হবে , সেটাও পরিষ্কার করে বলেছিলেন জাতির জনক। তিনি বলেন, ‘ আমি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, জনসাধারণের ভোটের অধিকারকে বিশ্বাস করি। আমরা বিশ্বাস করি সমাজতন্ত্রে, যেখানে শোষণহীন সমাজ থাকবে। শোষক-শ্রেণী আর কোনোদিন দেশের মানুষকে শোষণ করতে পারবেনা। এবং সমাজতন্ত্র না হলে সাড়ে সাতকোটি মানুষ ৫৪,০০০ বর্গমাইলের মধ্যে বাঁচতে পারবেনা। সেইজন্য অর্থনীতি হবে সমাজতান্ত্রিক,’।
মানুষের উপর জাতির জনক কী পরিমাণ আস্থা-বিশ্বাস স্থাপন করেছিলেন, তার একটা পরিচয় আমরা গণপরিষদ অধিবেশনে রাখা ভাষণের একটা অংশ থেকে পেতে পারি। তিনি সেদিন বলেছিলেন, ‘ শাসনতন্ত্র দেওয়ার পরে দেশে নির্বাচন হবে, তাতে আওয়ামী লীগকে মানুষ ভোট না দেয়, না দেক, যাঁদের ভোট দিবে, তাঁরাই ক্ষমতায় আসবেন-এতে আপত্তির কিছুই থাকবেনা। তাঁদের সাদরে গ্রহণ করা হবে’।
দলের নেতা-কর্মী ও আপামর জনসাধারণকে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির উপাদান ও চরিত্র অর্থাৎ এ ব্যবস্থায় মালিকানা, পুঁজি ও শ্রমের ধরণ বোঝাতে বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর আগে আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের জনসভার ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা হবে। শোষকদের আর বাংলাদেশে থাকতে দেয়া হবেনা। কোন ভুঁড়িওয়ালা এদেশে সম্পদ লুটতে পারবেনা। গরীব হবে এই রাষ্ট্র এবং এই সম্পদের মালিক, শোষকরা হবেনা’। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির একটা বড় উপাদান হল সমবায়। জনগণকে সমবায়ে উদ্বুদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেদিন বলেছিলেন, ‘ আপনারা পারস্পরিক সহযোগিতা দিয়ে এগিয়ে আসুন। পাশের লোকেরা যদি ঘরবাড়ি না থাকে আপনারা সকলে মিলে সাহায্য করে তার ঘরবাড়ি করে দেবেন। পয়সা নেই সরকারের, আপনাদের নিজেদের করতে হবে, রক্ত দিয়ে এদেশ গড়তে হবে। মরুভূমিকে নতুন করে সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা করে গড়ে তুলতে হবে’।
১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ বেতার ও টেলিভিশনে প্রদত্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষে মানুষে ব্যক্তিতে বৈষম্য থাকবে না। সম্পদের বণ্টন ব্যবস্থায় সমতা আনতে হবে। নিম্নতম আয়ও নিম্নতম উৎপাদনের ক্ষেত্রে যে আকাশচুম্বী বৈষম্য এতদিন ধরে বিরাজ ছিল তা দূর করার ব্যবস্থাদি উদ্ভাবনের জন্য আমি একটা বিশেষ কমিটি গঠন করার কথা বিবেচনা করছি’।
একটি ‘শোষণ অবিচারমুক্ত’ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করতে বঙ্গবন্ধু সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। ব্যাংকসমূহ বিদেশি ব্যাংকের শাখাসমূহ বাদে সাধারণ ও জীবন বীমার কোম্পানিসমূহ বিদেশি বীমা কোম্পানি ও শাখাসমূহ বাদে, সকল পাটকল, সকল বস্ত্র ও সুতাকল, সকল চিনিকল, আভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় নৌযানের বৃহৎ অংশ, ১৫ লাখ টাকা মূল্যের অনূর্ধ্ব সকল পরিত্যাক্ত অনুপস্থিত মালিকানাভুক্ত সম্পত্তি বাংলাদেশ, বিমান ও বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনকে সরকারি হিসেবে স্থাপন করা হয়। সমগ্র বহির্বাণিজ্যকে রাষ্ট্রীয়করণের লক্ষ্য নিয়ে সাময়িকভাবে বহির্বাণিজ্যের বৃহৎ অংশকে তখন রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
চাষীদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর দরদ ছিল আকাশসম। তিনি বিশ্বাস করতেন, চাষী সমাজ ভালো থাকলে, বাংলাদেশ ভালো থাকবে। তাইতো সে কঠিন সময়েও সুদূরপ্রসারী কল্যাণের কথা ভেবে ২৫ বিঘার কম জমি আছে এমন চাষীদের খাজনা চিরদিনের জন্য মওকুফ করে দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এর আগেই সমস্ত বকেয়া খাজনা মাফ করে দেয়া হয়। তাকাভি ঋণ বাবদ ১০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়, ১৬ কোটি টাকার টেস্ট রিলিফ বিতরণ করা হয়, লবণের উপর থেকে কর তুলে নেয়া হয়। সারাবছর ধরে সেচের কাজ চালানো, উন্নতমানের বীজ বপন, সার কীটনাশক ওষুধ, সব চাষীকে পর্যাপ্ত ঋণদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের এপ্রিল মাসে ঠাকুরগাঁওয়ে এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ আমার বড় বড় কলকারখানা, ব্যক্তিগত সম্পত্তি যা ছিল সেগুলোকে জাতীয়করণ করে সাত কোটি লোকের সম্পত্তি করেছি। যতগুলো চটকল ছিল সব এখন বাংলার সাড়ে সাত কোটি মানুষের সম্পত্তি। আমি জাতীয়করণ করে বাংলার মানুষকে দিয়েছি। ফসল উৎপাদন করেন, চেষ্টা করেন’।
একটি স্বাবলম্বী অর্থনীতির মালিক হতে হলে যে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে সেটিও শক্তভাবে বলে গেছেন জাতির জনক। ১৯৭২ সালের ৫ এপ্রিল বাংলাদেশ বেতারে ‘দেশ আমার মাটি আমার’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন, ‘বৎসরে ত্রিশ লক্ষ লোক আমার নতুন বাড়ে। আজকে আমাদের পপুলেশন প্ল্যানিং করতে হবে। পপুলেশন কন্ট্রোল করতে হবে। না হলে বিশ বৎসর পরে ১৫ কোটি লোক হয়ে যাবে ২৫ বছর পরে। ৫৪ হাজার স্কয়ার মাইল বাঁচতে পারবেনা। যেই ক্ষমতায় থাকুক বাঁচার উপায় নেই। একটা পপুলেশন কন্ট্রোল আমাকে করতেই হবে।…প্রোডাকশন বাড়াতে হবে।, না হলে মানুষ বাঁচতে পারবেনা এবং বাঁচার জন্য তাকে শৃঙ্খলাবদ্ধ হতে হবে। বিশৃঙ্খল জাতি কোনদিন বড় হতে পারেনা’।
ঠাকুরগাঁও এর ভাষণে পরবর্তী পাঁচ বছর কীভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি সুগঠিত হবে, সে পরিকল্পনা ব্যক্ত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেছিলেন, ‘ গ্রামে গ্রামে বহুমুখী কো-অপারেটিভ করা হবে। ৫ বৎসর প্ল্যানে বাংলাদেশের ৬৫ হাজার গ্রামে একটা করে কো-অপারেটিভ হবে, প্রত্যেক গ্রামে গ্রামে। এই কো-অপারেটিভে জমির মালিকের জমি থাকবে। কিন্তু তার অংশ বেকার প্রত্যেকটা মানুষ। যে মানুষ কাজ করতে পারে, তাকে সেই কো-অপারেটিভের সদস্য হতে হবে এবং বহুমুখী কো-অপারেটিভ হবে। আলটিমেটলি ৬৫ হাজার ভিলেজে একটা করে কো-অপারেটিভ করা হবে। তা না হলে দেশকে এগুনো যাবেনা। আপনার জমির ফসল আপনি নিবেন। একটা অংশ যাবে কো-অপারেটিভে, ঐ অংশ গভর্নমেন্টের হবে। দ্বিতীয় অংশে থানায় থানায় একটি করে কাউন্সিল হবে’।
বাংলাদেশের ‘সমাজতন্ত্র’ নিয়ে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৭ জুন রেসকোর্স ময়দানে দেয়া এক ভাষণে মহাশক্তিশালী এক মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘ বাংলার বুকে বাঙালি জাতীয়তাবাদ থাকবে। এ হলো আমার এক নম্বর স্তম্ভ। দ্বিতীয় স্তম্ভ, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র। এ সমাজতন্ত্র দুনিয়া থেকে ভাড়া করে আনতে চাইনা। এ সমাজতন্ত্র হবে বাংলার সমাজতন্ত্র। এ সমাজতন্ত্র বাংলার মানুষের সমাজতন্ত্র, তার অর্থ হলো শোষণহীন সমাজ, সম্পদের সুষম বণ্টন। বাংলাদেশে ধনীদের আমি আর ধনসম্পদ বাড়াতে দেবনা। বাংলার কৃষক, মজদুর, বাংলার বুদ্ধিজীবী, শ্রমিক এদেশে সমাজতন্ত্রের সুবিধা ভোগ করবে’।
সমাজে ধনী-গরীবের বৈষম্য কমাতে জাতির জনক ১০০ বিঘার উপরে কারো জমি থাকলে, তা কেড়ে নিয়ে সমাজের গরীব মানুষের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন…(চলবে)
(এ বিভাগে প্রকাশিত মতামত লেখকের নিজস্ব। চ্যানেল আই অনলাইন এবং চ্যানেল আই-এর সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে প্রকাশিত মতামত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে)