নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং গবেষক মোবাশ্বের হাসান সিজারের নিখোঁজের ৬ দিন পার হলেও তার কোন খোঁজ না পাওয়ার ঘটনায় উদ্বিগ্ন তার পরিবার, বন্ধু, সহকর্মী এবং সহপাঠীরা। পরিবারের প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায়, সিজারের ফিরে আসার অপেক্ষায় দিন কাটছে তাদের।
সিজারের নিখোঁজের পঞ্চম দিনে বিষয়টি নিয়ে তার বোন তামান্না তাসনিম ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন। যেখানে তিনি জানতে চেয়েছেন, সবাই যখন ফোন করে আপডেট জানতে চায়, তখন তিনি কোথা থেকে আপডেট দেবেন? তিনি কার কাছে আপডেট চাইবেন তাও জানেন না।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে তামান্না তাসনিম লিখেছেন, ‘‘আজকে পঞ্চম দিন। আমি ভাইয়াকে ‘ইন্টেলেকচুয়াল’ বলে ক্ষেপানোর চেষ্টা করতাম। দেখা যেত, আমার এই ইন্টেলেকচুয়াল ভাই, গোটা দুনিয়া চষে বেড়ালেও মাঝে মাঝে ছোটোখাটো বিষয়ে সমাধান খুঁজে পেতো না। আমি সেই সময়গুলাতে কাজটা করে দিলে বলতো যে ‘এত বুদ্ধি নিয়ে তুই ঘুমাস কিভাবে’! আমার মাথার সাথে মাথা লাগিয়ে রাখতো এভাবে। বলতো এভাবে নাকি আমার বুদ্ধি ওর মধ্যে ট্রান্সফার হয়ে যাবে যাবে। হায়রে! এই বোকা বুদ্ধি দিয়েও যদি তোমাকে ফিরিয়ে আনতে পারতাম!
ভাইয়ার খুব পছন্দের একজন শিক্ষক হচ্ছেন গীতিআরা নাসরিন। কোনো একটা অজ্ঞাত কারণে আমার চুল খোলা থাকলে ও বলতো যে আমাকে নাকি ম্যাডামের মতো লাগে, আমার হাসিও নাকি ম্যাডামের মতো। আজকে ভার্সিটিতে ম্যাডামের সাথে, ওর বন্ধুদের সাথে দেখা হলো। একজন ভাইয়া ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন আজকে সকালে। উনার নিজেরও নিশ্চই পরিবার আছে। কিন্তু উনি বাস থেকে নেমে সোজা ভার্সিটিতে চলে এসেছেন। চোখেমুখে তার ক্লান্তি স্পষ্ট। কিন্তু তবুও দাবি জানিয়ে যাচ্ছেন। আহারে এতো ভালোবাসা ওর জন্যে। এতো কান্না ওর জন্যে। কারও হৃদয় কি ছোয় না এতো আবেগ?
পড়াশুনা করতে দেশের বাইরে যখনই গেছে এরকম বাংলাদেশের পতাকা আর টিশার্ট সাথে নিয়ে গেছে। এগুলা ছাড়া ওর প্যাকিং কমপ্লিট হতো না কখনো। আর সেই দেশের মাটিতে আজ ৫ দিন ধরে ও নিখোঁজ! অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড থেকেও ওর বন্ধুরা অস্থির হয়ে আছে। সবাই আমার কাছে আপডেট চায়! আমি কোথা থেকে আপডেট দিবো? আমি কার কাছে আপডেট চাইব বলতে পারেন?’’