মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা হত্যা-নির্যাতন বন্ধ এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ওই এলাকায় ‘শান্তিরক্ষা মিশন’ পাঠানোর সম্ভাব্যতা নিয়ে কাজ করছে কানাডা সরকার। চলতি সপ্তাহে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কানাডার পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব তোলার ব্যাপারে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে কানাডাভিত্তিক বাংলা নিউজ পোর্টাল নতুনদেশ.কম।
বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশ-মিয়ানমারের সীমান্ত এলাকায় রোহিঙ্গাদের জন্য ‘নিরাপদ জোন’ গঠনে কানাডা কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে সেটি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মিয়ানমারের পরিস্থিতিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে জাস্টিন ট্রুডোর নেতৃত্বাধীন কানাডার লিবারেল সরকার। লিবারেল এমপিদের অনেকেই বিভিন্ন স্থানে সমাবেশে যোগ রোহিঙ্গা ইস্যুকে কানাডীয় ইস্যু হিসেবে উল্লেখ করে বক্তৃতা করছেন।
গত শনিবার টরন্টোতে একটি সমাবেশে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ডও বলেন, ‘একটা কথা আমি আপনাদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই। রোহিঙ্গা ইস্যু এখন আর শুধু মিয়ানমারের ইস্যু নয়। এটা আমার ইস্যু, এটা প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর ইস্যু।’
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এ বিষয়ে কানাডা বা ট্রুডোর কর্মপরিকল্পনা কী হতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষ্কারভাবে কোনো ধারণা দেননি। সরকারের নীতি-নির্ধারকরাও প্রকাশ্যে এ নিয়ে কথা বলছেন না বলে নতুনদেশ.কম জানায়। তবে ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা প্রশ্নে কানাডার পদক্ষেপ এবং ভূমিকা হবে ‘চোখে পড়ার মতো’।
জাস্টিন ট্রুডো ইতোমধ্যে ফোন করে কথা বলেছেন মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন দলের নেতা অং সান সু চি’র সঙ্গে। বুধবার সু চি’কে ফোনে রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু নৃ-গোষ্ঠীর জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রিল্যান্ডও সু চি’র সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও রোহিঙ্গা বিষয়ে ফোন করে কথা বলেছেন তিনি। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে ক্রিস্টিনা ফ্রিল্যান্ড যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে শান্তিরক্ষা বাহিনীর সম্ভাবনা নিয়ে কাজ করছে কিনা জানতে চেয়ে সিবিসি টেলিভিশন কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করলে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাতাশা নিস্ট্রম সরাসরি এর কোনো উত্তর দেননি। সিবিসির প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, সরকার রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, দেশকে গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এগিয়ে নিতে অং সান সু চি এবং সামরিক বাহিনীর দায়িত্বকে কানাডা জোরালোভাবে মনে করিয়ে দিয়েছে। বর্তমান মানবিক সংকটে তাদের যৌথ দায়িত্ব পালনের কথাও তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে।