বহুল আলোচিত রুপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষিত হয়েছে। টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রুপাকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। মামলায় আরেক আসামিকে ৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। গত বছরের ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে কর্মস্থল ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপা গণধর্ষণের শিকার হন। বাসেই রুপাকে ধর্ষণের পরে হত্যা করে মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে মরদেহ ফেলে রেখে যায় ধর্ষকরা। পরে এলাকাবাসীর তথ্যে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করে। এলাকাবাসীর তোলা মোবাইল ফোনের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ও প্রকাশিত সংবাদের ছবি দেখে রুপার ভাই রুপাকে সনাক্ত করেছিলেন। তারপর পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমসহ পুরো দেশজুড়ে ক্ষোভের ঝড় বয়ে গিয়েছিল সেসময়। সুরতহাল রিপোর্ট, ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক, ৫ আসামির ১৬৪ ধারার জবানবন্দি গ্রহণকারী ৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মামলার তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রদানের পরে এই বহুল প্রত্যাশিত রায়। সেইসঙ্গে ছোঁয়া পরিবহনের যে বাসে কলেজছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রুপাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছিল, সেই বাসটি নাম পাল্টে রুপার পরিবারকে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সেই বাসটি এখন বাজেয়াপ্ত অবস্থায় পুলিশের কাছে রয়েছে। এ ধরণের নির্দেশ দেশের আদালতে ইতিহাসে নতুন। সবকিছু মিলিয়ে দ্রুততম সময়ে এই রায়ের জন্য তদন্তকারী পুলিশ, সাক্ষী ও আদালত বিশেষ ধন্যবাদ পেতেই পারে। কর্মস্থলসহ সারাদেশের নারীর চলাচল ও স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড নিরাপদ হোক, এই আমাদের প্রত্যাশা। সেইসঙ্গে চাঞ্চল্যকর এই ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ডের বিচারের পরে অতীতে দেশে ঘটে যাওয়া একইরকম অন্যান্য ঘটনাও দ্রুততম সময়ে বিচার হবে বলে আমাদের আশাবাদ।