দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্ত আইন লঙ্ঘন করেই রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে বলে দাবি করে কয়েকজন রাজনীতিক এই প্রকল্প পুর্নবিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। না হলে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনেরও ডাক দিয়েছেন তারা।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশন’ আয়োজিত গোলটেবিল এক আলোচনা সভায় এমন আহ্বান জানানো হয়।
রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে জাতীয় বিপর্যয় নেমে আসবে মত দিয়ে তারা বলেন, সারা পৃথিবীতে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পদ্ধতিটি পরিত্যক্ত ও ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত। ভারত নিজেও এই প্রকল্প থেকে সরে এসেছে। বাংলাদেশের কোথাও ধ্বংসাত্মক, আত্মঘাতী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হতে পারে না।
সভায় সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারার সভাপতি ডা. একিউইউএম বদরদ্দোজা চৌধুরী বলেন, এই প্রকল্পের বিরুদ্ধ যারা কথা বলছেন তারা দেশ বিরোধী বা বিদ্যুৎ বিরোধী নয়। তারা সরকারের শত্রুও নয়।
তিনি বলেন, এই প্রকল্প সুন্দরবনকে ধ্বংস করে দিবে। দেশে বিপর্যয় নেমে আসবে জানিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে শেষ বারের মতো সঠিক তথ্য জেনে বিষয়টি পুর্নবিবেচনার আহ্বান জানান।অন্যথায় রাজনৈতিক আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই।
তিনি আরো বলেন, অতীতে যারা গণবিরোধী কাজ করেছে তারা বুঝতে পারেনি। ব্রিটিশরা, পাকিস্তানিরা বুৃঝতে পারেনি। জনগণ তাদের বুঝিয়ে দিয়েছে। এরশাদ বুঝতে পারেনি। তাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল জনগণ। সরকারকে মানুষের সমস্যা বুঝতে হবে। নয়তো জনগণ বুঝিয়ে দিবে।
এসময় তিনি সুনামগঞ্জের হাওড়ে ইউরোনিয়াম দেয়া হযেছে কিনা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা পরীক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে জনগনকে সাথে নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে আন্দোলনে নামতে সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকার বধির নয়। জেগে জেগে ঘুমাচ্ছে। তাদের জাগাতে হবে। জনগণ সরকারকে জাগাবে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলে, এতো বড় একটা ইস্য নিয়ে এত ছল ছাতুরি কেন? কোন প্রকল্প করার আগে পরীক্ষা হয় জরিপ হয়। এরপর পরিবেশ ছাড়পত্র। তারপর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। কিন্তু তা না করে নানা ছল-চাতুরি। এতো ছল-চাতুরি কেন? জনমতের তোয়াক্কা না করেই তা করা হচ্ছে।
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অবঃ) সৈয়দ মোঃ ইব্রহিম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণমোর্চার প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকী প্রমুখ।