আইফোন ও আইপ্যাডের জন্য আইওএস অপারেটিং সিস্টেমের নতুন সংস্করণ আইওএস ১১ উন্মুক্ত করেছে অ্যাপল। গত কয়েক বছরে বাজারে এসেছে, এমন অধিকাংশ ডিভাইসেই আইওএস ১১ ইন্সটল করা যাবে বলে জানিয়েছে অ্যাপল।
এ বছরের জুনে অ্যাপলের ওয়ার্ল্ডওয়াইড ডেভেলপার কনফারেন্স থেকে আইওএস ১১ সংস্করণের ডেভেলপার সংস্করণ উন্মুক্ত করা হয়েছিল।
নতুন এই সংস্করণে যুক্ত করা হয়েছে বেশ কিছু নতুন ফিচার। এর মধ্যে আছে অগমেন্টেড রিয়েলিটি অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা। এসকল অ্যাপে গ্রাফিক্স এবং রিয়েল ওয়ার্ল্ড ভিউ এক ধরে দেখানো হয়ে থাকে। নতুন ডিজাইনে পাওয়া যাবে অ্যাপ স্টোর। অ্যাপলের ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট সিরি আরও উন্নত ভয়েস পাচ্ছে এই সংস্করণে। এর পাশাপাশি থাকছে আরও উন্নত মাল্টিটাস্কিং সুবিধা, কাস্টমাইজেবল কন্ট্রোল সেন্টারসহ বেশ কিছু নতুন ফিচার।
তবে এই সংস্করণে আগের বেশ কিছু অ্যাপ কাজ করবে না। মূলত যেসকল অ্যাপ গত দুই বছরে কোন আপডেট সংস্করণ তৈরি করেনি, সেসব অ্যাপের ক্ষেত্রেই এই সমস্যায় পড়তে হবে। এর মধ্যে অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলো নিয়ে ডেভেলপাররা আর কোনো কাজ করবেন না। তবে এর মধ্যে অনেক অ্যাপ এখনও ব্যবহারকারীদের মাঝে সমান জনপ্রিয়।
এই সংস্করণে অ্যাপল ৩২ বিট সফটওয়্যার সাপোর্ট বন্ধ করে কেবলমাত্র ৬৪ বিট সফটওয়্যার ব্যবহারের সুযোগ দেবে ব্যবহারকারীদের। এর ফলে আগের থেকে আরও দ্রুত বিভিন্ন অ্যাপ আজ করতে সমর্থ হবে। ২০১৫ সালের জুন থেকেই অ্যাপস্টোরে নতুন করে ৩২ বিট অ্যাপ যুক্ত করার সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছিল অ্যাপল।
তবে নতুন এই সংস্করণে ৩২ বিট অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা বন্ধ করে দেওয়ায় অনেকেই অ্যাপলের সমালোচনা করেছেন। ৩২ বিট থেকে ৬৪ বিটে আপডেট করার জন্য দুই বছর সময়কেও খুব বেশি সময় মনে করছেন না প্রযুক্তিবিদরা। তাদের মতে, এই সংস্করণেও ৩২ বিট অ্যাপ সাপোর্ট রাখা প্রয়োজন ছিল।
যেসব ডিভাইসে পাওয়া যাবে আইওএস ১১:
আইফোন: আইফোন ৫এস, আইফোন এসই, আইফোন ৬ প্লাস, আইফোন ৬, আইফোন ৬এস, আইফোন ৬এস প্লাস, আইফোন ৭, আইফোন ৭ প্লাস।
আইপ্যাড: আইপ্যাড মিনি ২, আইপ্যাড মিনি ৩, আইপ্যাড মিনি ৪, আইপ্যাড এয়ার, আইপ্যাড এয়ার ২, আইপ্যাড (ফিফথ জেনারেশন), ১০.৫ ইঞ্চি আইপ্যাড প্রো, ৯.৭ ইঞ্চি আইপ্যাড প্রো, ১২.৯ ইঞ্চি আইপ্যাড প্রো (ফার্স্ট ও সেকেন্ড জেনারেশন)
আইপড টাচ: আইপড টাচ (সিক্সথ জেনারেশন)
আইওএস ১১ আপডেট করার পদ্ধতি:
সমর্থিত ডিভাইসগুলোর সেটিংস অপশন থেকে আপডেট পাওয়া যাবে। তবে আইওএস ১১ এর ডেভেলপার ভার্সন ব্যবহার করছেন, এমন ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে নতুন করে কিছু করার প্রয়োজন পড়বে না।
নতুন সংস্করণে আপডেট করার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে-
ডাটা ব্যাকআপ: নতুন সংস্করণে যাওয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন আপনার ফোনে থাকা সকল ডাটা ব্যাকআপ নেওয়া আছে কিনা। আইক্লাউডে ব্যাকআপ রাখার মাধ্যমে ফোন নাম্বার, সেটিংস এবং ফোনে থাকা মেসেজসমূহ নিরাপদ রাখা যাবে।
ফোনে চার্জ দিয়ে নেওয়া: ফোনে আপডেট প্রক্রিয়া শুরুর আগে অবশ্যই ফোন চার্জ দিয়ে নিতে ভুলবেন না।
ফোনে স্টোরেজ স্পেস খালি রাখা: নতুন সংস্করণ ডাউনলোড করার জন্য প্রায় ২ জিবি স্পেস প্রয়োজন হবে। স্টোরেজ স্পেস খালি না থাকলে অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন ফাইল মুছে ফেলুন। ফোনে থাকা ছবির স্বয়ংক্রিয় ব্যাকআপ রাখার জন্য গুগল ফটোস ব্যবহার করতে পারেন।
আপডেট: এবার আপডেট করার পালা। আপনার ডিভাইসে আপডেট সংক্রান্ত একটি নোটিফিকেশন দেখাবে। তবে না দেখালে সেটিংস থেকে General ট্যাবে ট্যাপ করে Software Update ট্যাপ করুন।
আপাতত কাজ শেষ। আপডেট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে পেয়ে যাবেন নতুন ফিচারে ভরপুর একটি ডিভাইস।