প্রতিবছর প্রাথমিক সমাপনী থেকে শুরু করে এইচএসসিসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় ফলাফল প্রকাশের পরে উচ্ছ্বাসের খবরের সঙ্গে মনখারাপ করা খবরও প্রকাশ পায়। জিপিএ-৫ এর দৌড়ে কিছুটা পিছিয়ে পড়ে নয়তো অকৃতকার্য হয়ে কেউ কেউ আত্মহত্যা পর্যন্ত করে। কয়েক বছর ধরে বিষয়গুলো নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। সম্প্রতি চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত এক প্রতিবেদনে এই বিষয়ের কারণ ও প্রতিকার সন্ধান করা হয়েছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, মনোরোগ বিশেষজ্ঞসহ শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের মাধ্যমে উঠে এসেছে বিষয়টি। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনায় অভিভাবক ও সমাজকে দায়ী করেছেন শিক্ষকরা। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরাও অভিভাবকের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার প্রচলিত পদ্ধতি ও মূল্যায়নকে দায়ী করেছেন। আর শিক্ষামন্ত্রী খারাপ ফলাফল বা ফেল করা শিক্ষার্থীদের দিকে নজর রাখাসহ তাদের উৎসাহ দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। সবাই খুব সহজে বিষয়টি সর্ম্পকে তাদের মত প্রকাশ করে সমাধান দিলেও, বিষয়টি কি আসলেই এত সহজ? যুগ যুগ ধরে পরীক্ষায় পাশ-ফেল করার স্বাভাবিক ধারা চলে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে অবশ্যই যেকোন মূল্য ভাল ফল করতে হবে নয়তো অবশ্যই পাশ করতে হবে, এমন মানসিকতা তৈরি হয়েছে অভিভাবক সমাজে। প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি শুরুর আগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত শিশু-কিশোরদের ওপরে চলে প্রত্যাশার অস্বাভাবিক চাপ। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর এই চাপ শিক্ষাকে এক দীর্ঘমেয়াদি যন্ত্রণা মনে করতে শুরু করেছে শিক্ষার্থীরা। উন্নত বিশ্বের অনেক উদাহরণ আমরা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে টেনে আনলেও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নীতিনির্ধারকরা কেন অন্ধের মতো আচরণ করছেন, তা আমাদের বোধগম্য না। বিষয়টি আমাদের খুব করে ভাবায়। এ বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া খুবই জরুরি বলেও মনে করি। আমাদের আশাবাদ দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দ্রুত নজর ও পদক্ষেপ নেবে।