সিলেট মহানগরের শিববাড়ী এলাকার জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চলছে। সকাল সাড়ে নয়টার একটু পর সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ নামে এই অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডোরা। আতিয়া মহল নামের ওই বাড়ি থেকে এ পর্যন্ত ৭৮ জন জিম্মিকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। কিছুক্ষণ আগে ওই ভবন থেকে থেমে থেমে গুলির আওয়াজও পাওয়া গেছে। অভিযান এখনো অব্যাহত আছে।
আতিয়া মহলে নামের ওই ভবনটি থেকে উদ্ধার করা পরিবারগুলোর ব্যাপারে তথ্য দিতে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করার কথা জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘কিছুক্ষণের মধ্যে’ এ ব্যাপারে প্রেস ব্রিফিং করা হবে।
শনিবার সকাল ৮টার দিকে সেনা কমান্ডোরা সেখানকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ‘টোয়াইলাইট’ (গোধূলি) নামের অভিযান শুরু করেন। সেনাবাহিনীর ১৭ পদাতিক ডিভিশনের লে. কর্ণেল ইমরুল কায়েসের নেতৃত্বে এ অভিযান শুরু হয়।
অভিযানের শুরুর আগে র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকসহ উৎসুক জনতাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার পাঠানপাড়া সড়কের পাশে অবস্থিত পাঁচতলা ও চারতলাবিশিষ্ট দুটি ভবনের নাম আতিয়া মহল। সিলেট নগরীর আতিয়া ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির বান্দরঘাটের (বন্দরঘাট) বাসিন্দা উস্তার মিয়া।
এই বাড়িতে জঙ্গিরা আস্তানা গেড়েছে এমন সন্দেহে বৃহস্পতিবার রাত ২ টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ। শুক্রবার দিনভর পুলিশ, সোয়াট ও সেনা সদস্যরা বাড়িটিকে ঘিরে রাখে। এসময় হ্যান্ডমাইকে করে বারবার সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পনের আহ্বান জানানো হয়। তবে এতে সাড়া মেলেনি। অবশেষে বাড়িটি ঘিরে রাখার প্রায় ত্রিশ ঘন্টা পর চুড়ান্ত অভিযানে নামে সেনা সদস্যরা।
অভিযানে অংশ নেয়া কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রথমে আতিয়া মহলের অন্য ফ্ল্যাটগুলোতে আটকে পড়াদের উদ্ধার করা হবে। পরে জঙ্গিদের ভবনের বাইরে নিয়ে আসার চেষ্টা করা হবে।
ভবন মালিক জানিয়েছেন, পাঁচ তলা ভবনটিতে ৩০ টি ফ্ল্যাটে মোট ২৮ টি পরিবার ভাড়া থাকেন।
এই ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট গত জানুয়ারি মাসে প্রাণ কোম্পানির অডিট অফিসার পরিচয়ে ভাড়া নেন কাওসার আহমদ ও মর্জিনা বেগম দম্পতি। ওই ফ্ল্যাটটিকে ঘিরেই চলছে তেত্রিশ ঘন্টা ধরে অভিযান।